২৮ বছর পর ফের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র

বণিক বার্তা ডেস্ক

দীর্ঘ ২৮ বছর বিরতির পর পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষার সম্ভাব্যতা যাচাই করছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের নিয়ে চলতি মাসে একটি বৈঠকও হয়েছে। মূলত রাশিয়া ও চীনকে চাপে রাখতেই এ পরীক্ষা চালানোর বিষয়ে আলোচনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কংগ্রেস প্রতিনিধিরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

রাশিয়া ও চীনকে একটি ত্রিপক্ষীয় অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তিতে আসতে বাধ্য করার কৌশলে যেতে চাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে দেশ দুটিকে চাপে ফেলতেই ১৯৯২ সালের পর আবার পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর কথা চিন্তা করছে ওয়াশিংটন। 

বিষয়টিতে ওয়াকিবহাল সূত্রগুলো জানিয়েছে, জাতীয় প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে গত ১৫ মে হোয়াইট হাউজে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে এ বৈঠকে পারমাণবিক পরীক্ষা চালানো নিয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই আলোচনা মূলতবি হয়।

কংগ্রেসের একজন প্রতিনিধি বলেছেন, বৈঠকে কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন, যারা মনে করেন, রাশিয়া ও চীনকে চাপে রাখতে পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর চিন্তাটি খুবই ভয়ঙ্কর।

এ বিষয়ে প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় ওয়াশিংটন পোস্টে। গত শুক্রবার (২২ মে) প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনেও বলা হয়, বিষয়টি এখনও আলোচনার পর্যায়েই রয়েছে।

এমন এক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর কথা চিন্তা করছে, যখন একের পর এক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি বাতিল হওয়ার পথে রয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন এরই মধ্যে তিনটি চুক্তি থেকে সরে এসেছেন, যার সর্বশেষ ঘোষণা এসেছে গত সপ্তাহে। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, ২০০২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া ‘ট্রিটি অব ওপেন স্কাইজ’ চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেবে তারা।

বর্তমানে বড় ধরনের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তিগুলোর মধ্যে টিকে রয়েছে কেবল ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ান ফেডারেশনের মধ্যে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক অস্ত্র সীমিতকরণ চুক্তি ‘নিউ স্টার্ট’। এ চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার উভয়েরই কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে রাশ টানা হয়েছে। চুক্তিটির কার্যকারিতা আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে শেষ হবে। 

ট্রাম্প প্রশাসন এরই মধ্যে আভাস দিয়ে রেখেছে যে, চীন তাদের সঙ্গে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তিতে শামিল না হলে তারা চুক্তিটির মেয়াদ আর বাড়াবে না। কিন্তু বেইজিং এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। শি জিনপিং প্রশাসনের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার ভাণ্ডারে যে পরিমাণ অস্ত্র রয়েছে, তার তুলনায় চীনের মজুদ খুবই কম।

এ অবস্থায় নিজেদের মধ্যে অস্ত্র সীমিতকরণ চুক্তিতে চীনকে টানতেই নতুন পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন