বাসা বদলে বাড়তি খরচ এড়াতে

ফিচার ডেস্ক

বক্স করার সময় সেগুলোকে মার্কার দিয়ে চিহ্নিত করতে ভুলবেন না। কোন বক্সে কি ধরনের জিনিস আছে, সেটা চিহ্নিত করে রাখলে পরিবহনের সময় সাবধানতা অবলম্বন করা যায়। তুলনামূলক ভঙ্গুর জিনিসপত্র একসঙ্গে প্যাকিং করলে এবং চিহ্নিত করা থাকলে সেসব ভাঙা বা নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা করা যায়

জীবিকা, সন্তানদের স্কুল বা নানা প্রয়োজনে বাসা পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়। ভাড়া বাসায় থাকা মানুষদের এটা নিয়মিত বা সাধারণ একটি কাজে পরিণত হয়েছে। আর বাসা পরিবর্তন করা অসম্ভব বিরক্তিকর কষ্টসাধ্যও বটে। পুরনো বাসার জিনিসপত্র গুছিয়ে প্যাকেট করা থেকে শুরু করে নতুন বাসায় আবার সাজানো পর্যন্ত এটি কয়েক সপ্তাহের বিশাল এক কর্মযজ্ঞ। পুরনো বাসা ছেড়ে নতুন বাসায় ওঠা উত্তেজনাপূর্ণ মনে হলেও এটা ভীষণ রকমের স্নায়ুচাপ তৈরি করতে পারে।

যদিও বর্তমানে বাসা পরিবর্তনের জন্য বিভিন্ন সংস্থা পাওয়া যায়, যারা পুরো কাজের দায়িত্ব নিয়ে থাকে। তবু নিজেদের ঝক্কি-ঝামেলার কমতি থাকে না। সব মিলিয়ে বাসা পরিবর্তন অনেক ব্যয়বহুলও হয়ে থাকে। তবে কিছু কৌশল অবলম্বন করে আপনি এক্ষেত্রে বাড়তি খরচ এড়াতে পারেন।


বাসা পরিবর্তনের কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হয়। প্রস্তুতির মধ্যে সব থেকে বড় কাজ হলো জিনিসপত্র প্যাক করা। এর জন্য দরকার হয় মোটা কাগজের বড় বড় বক্সের। তবে সহজ উপায়ে বক্স সংগ্রহের জন্য কেবল দোকানে চলে যাবেন না। বাসা পরিবর্তনে খরচ বাঁচানোর সহজ উপায় হলো বিনা মূল্যে বক্সগুলো সংগ্রহ করা। বন্ধু আশপাশে থাকা প্রতিবেশীদের কাছে অতিরিক্ত বক্সের সন্ধান করতে পারেন। তাদের অতিরিক্ত বক্স ফেলে দেয়ার আগে আপনাকে সরবরাহ করতে বা তাদের দরকারি বক্স ধার দিতে পারে কিনা জিজ্ঞাসা করুন। এছাড়া আপনার কর্মক্ষেত্রে যদি কেনাকাটার বিভাগ থাকে, তবে তাদের কাছেও আপনি বক্সের সন্ধান করতে পারেন। আর যেহেতু এগুলো অনেকবার ব্যবহার করা যায়, তাই ধার নিয়ে কাজ শেষে বক্সগুলো আবার ফেরত দিতে পারেন।

শেষমেশ যদি আপনি বক্স সংগ্রহে ব্যর্থ হন, তাহলে স্থানীয় কোনো দোকান থেকে এগুলো সংগ্রহের চেষ্টা করুন। দোকানদারদের কাছে এমন অনেক পুরনো বক্স থাকে, যেগুলো তারা কম টাকাতেই বিক্রি করে দেন। এমন দোকান থেকে আপনি কম খরচে বক্স প্যাকিং টেপ কিনতে পারেন।


আর বাসাবাড়িতে এমন অনেক বাড়তি ঝামেলাপূর্ণ জিনিসপত্র থাকে, যেগুলো আপনার খুব বেশি কাজে আসে না। অথচ জিনিসপত্রগুলো নতুন বাসায় নেয়া অনেক ঝামেলাপূর্ণ হয়ে থাকে। যেমন চেয়ার, টেবিল, গ্যারেজের জিনিসপত্র ইত্যাদি। এমন জিনিসপত্র বিক্রি করে দিন, তাহলে দেখবেন আপনার বাসা পরিবর্তনের খরচ নাটকীয়ভাবে কমে গেছে। বাড়িঘরের জিনিসপত্র বিক্রির জন্য এখন অনেক সংস্থা রয়েছে। খুব সহজেই আপনি বাড়ির আশপাশে লিফলেটের মাধ্যমে বা অনলাইনে এমন সংস্থাগুলোর খোঁজ পেয়ে যাবেন।

এছাড়া বাসা পরিবর্তনে সহায়তার জন্য এখন অনেক সংস্থা পাওয়া যায়। ইন্টারনেট বা ফেসবুকেই আপনি এগুলো পাবেন। তারাই আপনার বাড়ি পরিবর্তনের পুরো কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করে দেবে। কিন্তু তাদের ভাড়া করা অনেক ব্যয়বহুল। এমন সংস্থা ছাড়াই আপনি বাসা পরিবর্তন করতে পারবেন এবং সেক্ষেত্রে আপনার খরচও অনেক কমে যাবে। আপনার কাছের কোনো বন্ধু বা আত্মীয়ের সহায়তা চান। তাদের সহায়তা নিয়ে নিজেরাই বাসা পরিবর্তন করতে পারবেন। কেবল জিনিসপত্র পরিবহনের জন্য আপনাকে একটি ট্রাক ভাড়া করতে হবে। এমনটা করতে পারলে বড় অংকের খরচ থেকে আপনি রেহাই পেয়ে যাবেন।

তবে বাসা পরিবর্তনে প্রতিবারই যে বন্ধু বা আত্মীয়স্বজনের সহায়তা পাওয়া যাবে, এমন না- হতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনার বাসা পরিবর্তনে কোনো সংস্থাকে দায়িত্ব দিতে হতে পারে। ধরনের সংস্থা ঠিক করতে একজনের সঙ্গে দরদাম ঠিক করা বোকামি। আপনি এমন কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে কথা বলে খরচের তুলনা করতে পারেন। দরদামের সঙ্গে তারা কী কী জিনিসপত্র নতুন বাসায় সরিয়ে দেবে এটাও বিস্তারিত আলাপ করে নিন। পরে সেই সংস্থা নির্দিষ্ট কিছু জিনিসপত্র সরিয়ে দিতে অস্বীকার করতে পারে।

স্যুটকেস বা বক্স প্যাক করার সময় সৃজনশীলতার পরিচয় দিয়ে আপনি অনেক খরচ কমিয়ে ফেলতে পারেন। আপনি হয়তো ভঙ্গুর বা দামি জিনিসপত্রের জন্য ব্যয়বহুল প্যাকিং পণ্যগুলো কিনবেন। এর পরিবর্তে আপনি ভঙ্গুর টুকরোগুলো পোশাক বা তোয়ালে মুড়ে নিয়ে বাড়তি প্যাকিং কেনার খরচ কমাতে পারবেন। আবার ভারী জিনিসপত্রগুলো নিচে, পাতলাগুলো উপরে এবং বক্সের কোণগুলো ভালোভাবে প্যাকিং করতে পারলে অনেক জিনিসপত্র ঢোকানো যায়। এতে আপনার বক্সও কমে যাবে এবং বাড়তি খরচ হ্রাস পাবে।

বক্স করার সময় সেগুলোকে মার্কার দিয়ে চিহ্নিত করতে ভুলবেন না। কোন বক্সে কি ধরনের জিনিস আছে, সেটা চিহ্নিত করে রাখলে পরিবহনের সময় সাবধানতা অবলম্বন করা যায়। এছাড়া তুলনামূলক ভঙ্গুর জিনিসপত্র একসঙ্গে প্যাকিং করলে এবং সেটা চিহ্নিত করা থাকলে সেসব ভাঙা বা নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচানো যায়। মার্কার দিয়ে বড় হরফে বক্সের চারপাশে চিহ্নিত করুন, যাতে এটা যেভাবেই পরিবহন করা হোক না কেন, ভেতরে কী আছে তা যেকোনো দিক দেখেই যেন জানা যায়।

 

সূত্র: বব ভিলা

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন