আপেল, গ্রিন টি, কমলা, ব্রোকলির মতো ফ্লাভোনয়েড-সমৃদ্ধ খাবার ক্যান্সার ও হূদরোগ প্রতিরোধ করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আপেল ও গ্রিন টির মতো ফ্লাভোনয়েড-সমৃদ্ধ খাবারগুলোয় প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা ক্যান্সার ও হূদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে। দিনে একটি আপেল ক্যান্সার ও হূদরোগকে দূরে রাখতে সহায়তা করে। ফ্লাভোনয়েড-সমৃদ্ধ খাবারগুলো প্রদাহ হ্রাস ও শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করতে পরিচিত। নেচার কমিউনিকেশনস ট্রাস্টেড সোর্স জার্নালে প্রকাশিত নতুন একটি গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যারা ফ্লাভোনয়েড-সমৃদ্ধ খাবার কম খায়, তাদের তুলনায় বেশি ফ্লাভোনয়েড-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া মানুষের ক্যান্সার ও হূদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম।
অস্ট্রেলিয়ার এডিথ কোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের নেতৃত্বে করা ওই গবেষণায় দেখা গেছে, ফ্লাভোনয়েডের প্রতিরক্ষামূলক প্রভাবগুলো তাদের ক্ষেত্রে বেশি শক্তিশালী, বিশেষ করে যারা অ্যালকোহল বা ধূমপান করে। ২৩ বছর ধরে ৫৩ হাজার ডেনিশদের ডায়েট বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
এডিথ কোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্টডক্টোরাল রিসার্চ ফেলো ও এ গবেষণার শীর্ষস্থানীয় গবেষক নিকোলা বোনডনো বলছেন, এ গবেষণার ফল মানুষকে আরো ফল ও শাকসবজি খাওয়ার প্রতি উৎসাহিত করছে, বিশেষ করে যাদের ক্যান্সার ও হূদরোগের ঝুঁকি বেশি রয়েছে। এর আগের একটি গবেষণায় অনুমান করা হয়েছিল, বিশ্বব্যাপী ৮০ লাখ মানুষ কম ফল ও শাকসবজি গ্রহণের কারণে অকালে প্রাণ হারাচ্ছেন। এখানে প্রতিদিন ফল ও শাকসবজি মিলিয়ে ৮০০ গ্রামের কম খাওয়াকে বোঝানো হয়েছে।
নিকোলা বোনডনো বলেন, আপনার স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে ভালো কাজ হলো- ধূমপান ও অ্যালকোহল গ্রহণ বন্ধ করা। তবে এটা যদি আপনি না পারেন, তাহলে বর্ধিত ঝুঁকি নিরসনে এক অভিনব উপায় হতে পারে ফ্লাভোনয়েড গ্রহণ। যদিও এর সঙ্গে সঙ্গে আপনাকে ধূমপান ত্যাগ ও অ্যালকোহল গ্রহণ কমিয়ে আনতে হবে।
গবেষণায় পাওয়া গেছে, ক্যান্সার ও হূদরোগ প্রতিরোধে প্রতিদিন একজন মানুষের প্রায় ৫০০ মিলিগ্রাম ফ্লাভোনয়েড গ্রহণ সবচেয়ে বেশি কার্যকর। তবে উচ্চ মাত্রায় ফ্লাভোনয়েড গ্রহণে অধূমপায়ী ও অ্যালকোহল পানকারীদের ক্ষেত্রে ক্যান্সার বা হূদরোগ প্রতিরোধে কোনো কার্যকারিতা পাওয়া যায়নি।