বাজার অর্থনীতি ও পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির নেপথ্য কারণ

ড. মোহাম্মদ হেলাল

বাজার অর্থনীতির নিয়মে চাহিদা সরবরাহের প্রেক্ষাপটে দাম নির্ধারিত হয়। গতকাল যে চাহিদা সরবরাহ ছিল, সে তুলনায় আজ যদি চাহিদা একই থাকে কিন্তু সরবরাহ কমে যায়, তাহলে আগের ভারসাম্য দাম বলবৎ থাকবে না। তখন চাহিদা কমে সরবরাহের পর্যায়ে নেমে আসে। চাহিদা কমে আসে পণ্যের দাম বাড়ার কারণে। আর মূল্যবৃদ্ধি হয় ঘাটতির কারণে। অর্থাৎ যাদের হাতে পণ্য থাকে, তারা ঘাটতির সুযোগ নিয়ে দাম বাড়িয়ে দেন। মোটাদাগে পেঁয়াজের ক্ষেত্রে যা ঘটল, চাহিদাটা একই থাকা অবস্থায় সরবরাহ কমল এবং সরবরাহের পর্যায়ে চাহিদাকে নামিয়ে নিয়ে আসার জন্য দাম বাড়ানো হলো।

এবার প্রশ্ন হলো, দাম বাড়ার কারণে বাজারে কী পরিবর্তন হওয়ার কথা? যাদের হাতে সরবরাহ ছিল, তাদের হয়তো খরচ একই আছে কিন্তু দাম বাড়ার ফলে তারা বেশি লাভ করবেন। এটাই হলো বাজারের নিয়ম। সেক্ষেত্রে পেঁয়াজের সরবরাহ যাদের হাতে ছিল, তারা সুযোগটা গ্রহণ করছেন। পর্যায়ে আমরা যদি মনে করি, কেউ ৩০ টাকায় পেঁয়াজ কিনে ৪৫ টাকায় বিক্রি করবেন, এটা তো মানা যায় না। তা কিন্তু ভুল। কেননা এতে আমরা ব্যবসায়ীদের বাজারের মৌলিক সূত্রের বাইরে গিয়ে ব্যবসা করতে বলছি। আমরা তাদের বলছি, সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে ঘাটতি তৈরি হয়েছে, অবস্থার পরেও আগে যে দামে কিনেছ, তার থেকে একটু বেশি দাম রাখতে পারো কিন্তু অনেক বেশি দাম নিতে পারবে না। যদি বেশি দাম রাখো, তাহলে তোমাকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। 

ভারত বাংলাদেশে রফতানি বন্ধ করে দেয়ায় বর্তমানে পেঁয়াজের ঘাটতি হয়েছে। কিন্তু সরকার বলছে, ঘাটতি থাকলেও কাউকে দাম বেশি দিতে দেবে না। এভাবে সরকার রফতানিকারকদের বাজারের মৌলিক নিয়মের বাইরে কাজ পরিচালনার কথা বলছে। ঘাটতির কারণে ব্যবসায়ীরা বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। এক্ষেত্রে অনেক লাভ হওয়ার কারণে তারা অনেক বেশি সরবরাহ নিয়ে আসতে চাইবেন ঘাটতির সুবিধা নিতে। ব্যবসায়ীরা একটা প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে যদি সরবরাহ নিয়ে আসেন, তাহলে তারা কিন্তু সুবিধা বেশি দিন নিতে পারবেন না। সরবরাহ বেড়ে দামটা আবার আগের জায়গায় চলে আসবে। আবার সরবরাহ বেশি হলে, যেমনটা চালের ক্ষেত্রে হয়েছিল, চালের দাম বেশি ছিল বলে সরবরাহকারীরা বিভিন্ন দেশ থেকে চাল আমদানি করেন কিন্তু বেশি আমদানির ফলে চালের দাম এত কমে গেল যে আমদানিকারকদের পাশাপাশি কৃষকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। 

পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম বাড়ার সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যবসায়ীরা যদি বেশি পেঁয়াজ নিয়ে আসেন, তাহলে পরবর্তী সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সমন্ব্বয়হীন অতিরিক্ত আমদানির ঝুঁকির পাশাপাশি রয়েছে নতুন দেশী পেঁয়াজের কাছাকাছি সময়ে বাজারে আসা। বেশি দামে অন্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির পর ভারতীয় পেঁয়াজ রফতানি আবার শুরু হলে তাও ক্ষতির কারণ হতে পারে।  তার পরেও ঝুঁকি নিয়ে কেউ কেউ আমদানি করতেন, বাজার মনিটরিংয়ের নামে ব্যবসায়ীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা না হলে। চাপের ফলে আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন, ভয় পাচ্ছেন। এভাবে বিপরীত পরিস্থিতি

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন