২০০৫ সাল থেকে অ্যাডজাস্টেড গ্রস রেভিনিউয়ের (এজিআর) সংজ্ঞা নিয়ে ভারতের ব্যক্তি খাতের টেলিকম কোম্পানি ও দেশটির টেলিকম বিভাগের (ডিওটি) মধ্যে আইনি লড়াই চলে আসছে। তবে এজিআর নিয়ে ভারতী এয়ারটেল, রিলায়েন্স কমিউনিকেশন ও ভোডাফোন আইডিয়ার মতো টেলিকম সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর আবেদন খারিজ করে দিয়ে ডিওটির সংজ্ঞাকে বৈধতা দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। এছাড়া বকেয়া পরিশোধে অপারেটরগুলোকে ছয় মাসের সময় বেঁধে দিয়েছেন। এ রায় দেশটির সেলফোন অপারেটরগুলোর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। খবর বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ রায়ের ফলে কেন্দ্রীয় সরকারকে ভারতী এয়ারটেল, রিলায়েন্স কমিউনিকেশনস ও ভোডাফোন-আইডিয়ার মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুদ ও জরিমানাসহ মোট ৯২ হাজার ৬৪১ কোটি রুপির বকেয়া দেনা পরিশোধ করতে হবে। এর মধ্যে লাইসেন্স ফি ও স্পেকট্রাম ইউসেজ চার্জ বাবদ মোট ২৩ হাজার ১৮৯ কোটি রুপি, সুদ ৪১ হাজার ৬৫০ কোটি রুপি, জরিমানা ১০ হাজার ৯২৩ কোটি রুপি এবং জরিমানার ওপর সুদ ১৬ হাজার ৮৭৮ কোটি রুপি পরিশোধ করতে হবে।
সেলুলার অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া (সিওএআই) ১৪ বছর আগে ডিওটি নির্ধারিত এজিআরের সংজ্ঞাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে প্রথম মামলা দায়ের করেছিল। ওই মামলায় দাবি করা হয়, কেন্দ্রীয় সরকার এজিআরে যে উপাদানগুলো অন্তর্ভুক্ত করেছে, সেগুলো টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়ার (টিআএআই) সুপারিশে প্রণয়নকৃত টেলিগ্রাফ অ্যাক্টের পরিপন্থী।
সিওআইয়ের দাবি, ডিওটি নির্ধারিত বিভিন্ন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সেলফোন অপারেটরগুলো এরই মধ্যে ৮৫ শতাংশ বর্ধিত ফি পরিশোধ করেছে। বাকি ১৫ শতাংশ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আইনি লড়াই চলছে।
গত বৃহস্পতিবার আদালত বলেছেন, অ্যাডজাস্টেড গ্রস রেভিনিউর মধ্যে লাইসেন্স ফি ছাড়াও অন্যান্য বিষয় যুক্ত হবে। তবে এক্ষেত্রে মূল সম্পদ বিক্রি ও ইন্স্যুরেন্স দাবির বিষয়টি পড়বে না। এ রায় ভারতের টেলিকম বিভাগের জন্য স্বস্তিকর হলেও সেলফোন অপারেটরগুলোর জন্য বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে। এমনিতে ভারতের টেলিযোগাযোগ খাতে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা বিরাজ করছে। এর মধ্যে বড় অংকের বকেয়া পরিশোধের রায় বাড়তি জটিলতা সৃষ্টি করবে।
বিবৃতিতে ভারতী এয়ারটেল জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আমরা হতাশ। এজিআরের সংজ্ঞা নিয়ে ডিওটি ও টেলিকম অপারেটররা দীর্ঘদিন ধরে আইনি লড়াই চালিয়ে আসছে। টেলিকম খাতের উন্নয়নে এবং গ্রাহককে উন্নত সেবা দিতে কোটি কোটি রুপি অর্থ বিনিয়োগ করেছে। আর্থিক দিক বিবেচনায় টেলিযোগাযোগ খাত যখন সংকটপূর্ণ সময় পার করছে