টাঙ্গাইলে চারজনসহ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৯

বণিক বার্তা ডেস্ক

টাঙ্গাইলে বাসের সঙ্গে সংঘর্ষে দুমড়ে-মুচড়ে যায় ট্রাকের সামনের অংশ ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

টাঙ্গাইলে বাসের সঙ্গে ট্রাকের সংঘর্ষে চারজনের প্রাণহানি হয়েছে। জামালপুরে ট্রাকের ধাক্কায় ইজিবাইকের চালকসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় নীলফামারীতে আরো দুজন প্রাণ হারিয়েছেন। গতকাল ও আগের দিন রাতে এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২১ জন। বিস্তারিত প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে—

টাঙ্গাইল: বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ যাচ্ছিল যাত্রীবাহী একটি বাস। রাত ১টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু সড়কের ময়মনসিংহ লিংক রোডে কালিহাতী থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই চারজন মারা যান। আহত হয়েছেন অন্তত আটজন। এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ নান্নু খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহতদের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার ঘাগড়া গ্রামের বাহার উদ্দিনের ছেলে মিজানুর রহমান (৩৩) ও জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার মহিষবায়ান গ্রামের মৃত আব্দুল ওয়াজেদের ছেলে জিয়াউল (৩৫)। আহতদের উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছে পুলিশ।

এদিকে দুর্ঘটনার পর থেকেই ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ২৫ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল ভোর থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব মহাসড়কে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। 

জামালপুর: শহরতলির টিউবওয়েলপাড় এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় ইজিবাইক চালকসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো একজন। গতকাল সকাল সাড়ে ৬টার দিকে জামালপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন মেলান্দহ উপজেলার কাপাসিয়া গ্রামের মৃত জয়দর হোসেনের ছেলে ও ইজিবাইক চালক রোকন, শেখ সাদী গ্রামের মৃত আব্দুস সোবহানের ছেলে আব্দুল মালেক ও জামালপুর শহরের নয়াপাড়ার বাসিন্দা মাদ্রাসা শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান।

পুলিশ জানায়, টিউবওয়েলপাড় এলাকায় একটি ইজিবাইককে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় ট্রাক। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান ইজিবাইক চালক। গুরুতর আহতাবস্থায় তিনজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। আহত ব্যক্তি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

জামালপুর সদর থানার ওসি ফয়সল মো. আতিক জানান, তিনজন নিহতের খবর তারা পেয়েছেন। একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি দুজন হাসপাতালে মারা গেছেন। ট্রাকটি আটক করা যায়নি। তবে ইজিবাইকটি থানায় আনা হয়েছে।

নীলফামারী: জেলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে কিশোরগঞ্জ উপজেলা ভূমি রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সামনে ও রাত ২টার দিকে সৈয়দপুর-নীলফামারী মহাসড়কের শিমুলতলী নামক স্থানে এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার আলমবিদিতর গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে কামরুজ্জামান (৪০) ও ডোমার পৌরসভার পশ্চিম চিকনমাটি ঘুণ্টিপাড়ার মৃত আনন্দ বর্মণের ছেলে সুমন রায় (৩২)। কামরুজ্জামান ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস) নামে একটি এনজিওর ফিল্ড সুপারভাইজার ও সুমন রায় ডোমার থানায় কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

কিশোরগঞ্জ থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম জানান, কামরুজ্জামান মোটরসাইকেলে কর্মস্থল ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ থেকে গ্রামের বাড়ি ফিরছিলেন। উপজেলা ভূমি রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সামনে পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে ট্রাকচালক পালিয়ে গেছেন।

নীলফামারী সদর থানার ওসি এমআর সাঈদ জানান, রাত ২টার দিকে সুমন রায় নামে এক যুবক মোটরসাইকেলে সৈয়দপুর থেকে ডোমারে যাচ্ছিলেন। সৈয়দপুর-নীলফামারী মহাসড়কের শিমুলতলী পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে একটি ট্রাকের সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগে। সেখানে তাকে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা ইপিজেড ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে সৈয়দপুর ১০০ শয্যার হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

বরিশাল: ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গৌরনদীতে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১২ জন আহত হয়েছেন। গতকাল দুপুরে মহাসড়কের বার্থীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গৌরনদী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. বিপুল হোসেন জানান, বলাকা ও ইউনিক পরিবহনের দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১২ যাত্রী আহত হন। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।

গৌরনদী হাইওয়ে থানার এসআই কামরুজ্জামান জানান, দুর্ঘটনাকবলিত বাস দুটি আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন