পার্বত্য
জেলা খাগড়াছড়িতে শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে এক শিক্ষককে পিটিয়ে
হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শহরে
পাহাড়ি-বাঙালি শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে সংষর্ষ হয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। শহরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মঙ্গলবার বেলা ৩টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।
খাগড়াছড়ির ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে আরেক পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি শহরেও। জেলা শহরের বিজন সরনি থেকে কল্যাণপুর পর্যন্ত পাহাড়ি জনগোষ্ঠীঅধ্যুষিত এলাকায় দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছে পাহাড়িরা। শহরজুড়ে মোতায়েন রয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। টহল দিচ্ছে পুলিশ, বিজিবি ও সেনা সদস্যরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাহাড়ি শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে খাগড়াছড়ি সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানাকে গণপিটুনি দেয় পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা। আহত অবস্থায় তাকে খাগড়াছড়ি জেলা আধুনিক হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. রিপল বাপ্পি চাকমা।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি আবদুল বাতেন মৃধা জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই শিক্ষক সোহেল রানাকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিল পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা। বেশ কয়েক বছর আগে সোহেল রানার বিরুদ্ধে এক পাহাড়ি শিক্ষার্থীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা হয়েছিল। সে মামলায় ওই শিক্ষার্থী আদালতে এসে ‘একটি পাহাড়ি সংগঠনের চাপে মামলা করেছেন’ মর্মে সাক্ষ্য দিলে সোহেল রানা খালাস পান। তবে চাকরিতে যোগদানের পর থেকে পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির নানা অভিযোগ এনে তাকে প্রত্যাহার দাবি জানিয়ে আসছিল। গতকাল এক শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে ওই শিক্ষককে গণপিটুনি দেয় পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা।
এদিকে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার পর খাগড়াছড়ি শহরে পাহাড়ি-বাঙালি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিভিন্ন কক্ষ ও আসবাব ভাংচুর করা হয়। এছাড়া চেঙ্গী স্কয়ার, মহাজনপাড়ায় সংঘর্ষে ১৫-২০ শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এর আগে ১৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি শহরের পানখাইয়া পাড়ায় মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে এক বাঙালি যুবককে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে ১৯ সেপ্টেম্বর বিকালে মিছিল করে বাঙালিরা। একপর্যায়ে পাহাড়িদের সঙ্গে বাঙালিদের সংঘর্ষ বাধে। ওইদিন রাতেই খাগড়াছড়ি শহরেও সংঘর্ষ ও গুলিতে তিনজন নিহত হন।