ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইরানের

বণিক বার্তা ডেস্ক

জেরুজালেমের আকাশে ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যভ্রষ্ট করে ইসরায়েল ছবি: এপি

ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। তেহরান জানিয়েছে, হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নসরাল্লাহকে হত্যার প্রতিক্রিয়া হিসেবে তারা এ হামলা চালিয়েছে। সঙ্গে বলেছে, ‘এটা হামলার প্রথম ঢেউ, ইসরায়েল আর কোনো ভুল করলে আরো ধ্বংসাত্মক হামলা চালানো হবে।’ এদিকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইসরায়েলকে সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত রয়েছে। খবর বিবিসি ও রয়টার্স।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইরান প্রায় ১৮০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বার্তায় দেশের নাগরিকদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে স্থানীয় সেনা কমান্ডের নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলেছে। ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত ফুটেজে দেখা যায়, তেল আবিবের ওপর দিয়ে বেশকিছু ক্ষেপণাস্ত্র উড়ে যাচ্ছে। স্থানীয় সময় অনুযায়ী তখন রাত পৌনে ৮টা বাজে।

আইডিএফ জানিয়েছে, ইরানের ছোড়া প্রায় সব ক্ষেপণাস্ত্র তারা লক্ষ্যভ্রষ্ট করেছে। এছাড়া তাৎক্ষণিক হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। রয়টার্সের সাংবাদিকরা জানান, তারা ইরান ও ইসরায়েলের প্রতিবেশী দেশ জর্ডানের আকাশসীমায় ক্ষেপণাস্ত্রকে লক্ষ্যভ্রষ্ট করতে দেখেছেন। 

এর আগে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, ইরান থেকে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হতে পারে। হামলার সময় নাগরিকদের নিরাপদ কক্ষে অবস্থান করতে বলা হয়।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা বলেছেন, হামলা আপাতত শেষ হয়েছে বলে তাদের কাছে মনে হচ্ছে। নতুন করে কোনো হুমকির খবরও তাদের কাছে নেই। আর হামলায় জানমালের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব এখনো নিরূপণ হয়নি।  

লেবাননে ইসরায়েলের বোমা হামলায় ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নসরাল্লাহ নিহত হওয়ার পর প্রতিশোধ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল তেহরান। ইসরায়েলি বাহিনী গতকাল লেবাননে সীমিত পরিসরে স্থল অভিযান শুরু করার পর তেল আবিব লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান। এটা ছিল চলতি বছরের দ্বিতীয় হামলা। এর আগে গত এপ্রিলে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে কয়েকশ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল তারা।  

এবারের হামলার পর ইরানের বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর (আইআরজিসি) বরাত দিয়ে দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যম ফারস জানিয়েছে, নসরাল্লাহর পাশাপাশি হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়ে ও আইআরজিসির কমান্ডার আব্বাসকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। 

ইরানের পার্লামেন্টের ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড ফরেন পলিসি কমিটির প্রধান ইব্রাহিম আজিজি বলেছেন, ‘এটা হামলার প্রথম ঢেউ, ইসরায়েল আর কোনো ভুল করলে আরো ধ্বংসাত্মক হামলা চালানো হবে।’

ইরানের হামলার প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে ইসরায়েলকে সুরক্ষিত রাখতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত। পাশাপাশি এ অঞ্চলে অবস্থানরত মার্কিন সেনাদেরও সুরক্ষা দেয়া হবে।

প্রায় এক বছর আগে ফিলিস্তিনের গাজায় হামলা চালায় ইসরায়েল। তাদের নির্বিচার বোমা হামলায় গাজায় ৪০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। ওই যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গতকাল লেবাননে ইসরায়েলের স্থল অভিযান শুরুর মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত নতুন মাত্রা পায়। এর মধ্যে ইরানের হামলার কারণে সংঘাতের পরিধি আরো বেড় গেল।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন