বরিশালে সাগর-নদীতে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ

ভারতে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয়ে ব্যবসায়ীরা

এম মিরাজ হোসাইন, বরিশাল

ছবি : বণিক বার্তা ( ফাইল ছবি)

ভারতে ইলিশ রফতানি শুরু হয়েছে ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে। প্রতিদিন গড়ে ১৪ টন রফতানির কথা থাকলেও পাঁচদিনে মাত্র ১১ টন ইলিশ গেছে ভারতে। নদী সাগরে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা না পড়ায় গত তিন বছরে বরিশাল থেকে ভারতে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। এবারো সংশয়ে রয়েছেন রফতানিকারকরা।

মৌসুমের সময়ে যে পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ার কথা, সে পরিমাণ মিলছে না। তবে মৎস্য অধিদপ্তরের হিসাব বলছে, গত বছর বরিশাল থেকে ৪০ হাজার টন ইলিশ আহরণ হয়েছে। এবার তার চেয়ে ১০ হাজার টন বেশি আহরণ করা সম্ভব হবে।

দুর্গা পূজা উপলক্ষে ভারতে ইলিশ রফতানির অনুমতি পেয়েছে বরিশালের পাঁচটি প্রতিষ্ঠান। ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ দিনে ২৫০ টন মাছ রফতানির কথা রয়েছে। তবে নদী সাগরে ইলিশ সংকটের কারণে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রফতানি শেষ করা নিয়ে শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা। এরই মধ্যে বরিশাল নগরীর পোর্টরোড, বেলতলা চন্দ্রমোহন মোকামে সরবরাহ কমের অজুহাতে বেড়েছে ইলিশের দাম।

বরিশালের পোর্ট রোডের আড়তদার ইয়ার আলী সিকদার বলেন, ‘সরকারের বেঁধে দেয়া দাম আর স্থানীয় বাজারে দামের মধ্যে অনেক পার্থক্য। এতে রফতানিকারকরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন। পাশাপাশি বাজারে মাছও কম।

মেহেন্দীগঞ্জের মেঘনা নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন শুক্কুর আলী। তিনি বলেন, ‘মৌসুমের সময়ে নদীতে যে পরিমাণ মাছ পাওয়ার কথা, তা পাচ্ছি না। দিনভর নদীতে থেকে যে মাছ শিকার করছি, তা খুবই সামান্য। মোকামে নিয়ে মহাজনদের সঙ্গে মনোমালিন্য হচ্ছে। তারা যে পরিমাণ মাছ প্রত্যাশা করছে, সে পরিমাণ মাছ জালে ধরা পরছে না।

রফতানিকারকরা বলছেন, স্থানীয় বাজারের চেয়ে কম দামে ইলিশ রফতানি হচ্ছে ভারতে। প্রতি কেজি ১০ ডলার বা প্রায় হাজার ২০০ টাকা দামে ভারতে ইলিশ রফতানি হলেও আকারভেদে ৫০০-৭০০ টাকা বেশি দামে স্থানীয় বাজারে বিক্রি হচ্ছে। বাধ্য হয়ে লাইসেন্স টিকিয়ে রাখতে রফতানি করতে হচ্ছে।

রফতানিকারক মো. মারুফ হোসেন বলেন, ‘সাগর নদীতে মাছ ধরা পড়ছে খুবই কম। মাছ পেলে আমরা দিতে পারব। তবে এখন যে অবস্থা, তাতে মনে হচ্ছে না লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে।

আরেক রফতানিকারক মো. আশিকুর রহমান বলেন, ‘মাছের দাম বেশি হলেও লাইসেন্স টিকিয়ে রাখতে রফতানি করতে হচ্ছে। বেশি দাম, কম দাম মিলিয়ে একটি গড় দামের কারণে টিকে রয়েছি।

মৎস্য বিভাগ বলছে, ইলিশ সংকটের কারণে গত তিন বছর বরিশাল থেকে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। এবারো সংশয় রয়েছে।

বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) . বিমল চন্দ্র দাস বণিক বার্তাকে বলেন, ‘গত তিন বছর থেকে সময়টায় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ইলিশ রফতানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে না। বছরও বরিশালে ইলিশ আহরণের যে চিত্র দেখা যাচ্ছে, তাতে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নাও হতে পারে। গত বছর বরিশাল থেকে ৪০ হাজার টন ইলিশ আহরণ হয়েছে। এবার তার চেয়ে ১০ হাজার টন বেশি আহরণ হওয়ার প্রত্যাশা করছি আমরা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন