ইউএনআরডব্লিউএর কমিশনার-জেনারেল ফিলিপ লাজারিনি। ছবি- এপি গতকাল সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) লেবাননে নিহত শীর্ষস্থানীয় হামাস কমান্ডার ফাতাহ শরীফ ছিলেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউ) একজন কর্মী। জাতিসংঘের সংস্থাটি বলেছে এ কথা জানিয়েছে। তবে গত মার্চ মাসে সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে তার সম্পর্কের অভিযোগ ওঠার পর থেকে ফাতাহ শরীফকে বরখাস্ত করা হয়। খবর এপি।
হামাস জানিয়েছে, শরীফ তার স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ের সঙ্গে দক্ষিণ বন্দরের শহর টাইরে আল-বুস শরণার্থী শিবিরে এক বিমান হামলায় নিহত হন। ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য ১২টি শিবিরের মধ্যে একটি হচ্ছে আল-বুস। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী নিশ্চিত করেছে যে, তারা ফাতাহ শরীফকেই লক্ষ্যবস্তু করেছিল।
হামাসের সঙ্গে শরীফের সম্পর্ক থাকার বিষয়টি ইউএনআরডব্লিউয়ের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সংস্থাটি এরই মধ্যে চলতি বছর ৮০ মিলিয়ন তহবিল ঘাটতির সম্মুখীন। সমালোচকরা বারবার সংস্থাটির সমালোচনা করে বলছে যে, ইউএনআরডব্লিউ তাদের কর্মী বাহিনী থেকে হামাস সদস্যদের দূর করতে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
শরীফ তার হামাস সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারটি প্রকাশ্যে আনেননি।
ইউএনআরডব্লিউয়ে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে বলে আগেই অভিযোগ করেছিল ইসরায়েল।
জেনেভায় ইসরায়েলের কূটনৈতিক মিশন এক্সে দেয়া এক পোস্টে বলেছে, ফাতাহ শরীফের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে হামাস। শরীফের দ্বিতীয় চাকরি কী ছিল? তিনি লেবাননে ইউএন আরডব্লিউএর শিক্ষক সমিতির প্রধান ছিলেন।
মিশন আরো বলেছে, এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, যাদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে তাদের সম্পর্কে যথাযথভাবে যাচাই করার ক্ষেত্রে ইউএনআরডব্লিউএতে গভীর সমস্যা রয়ে গেছে।
ইউএনআরডব্লিউএর কমিশনার-জেনারেল ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, মার্চ মাসে তিনি জানতে পেরেছিলেন যে, ফাতাহ শরীফ হামাসের রাজনৈতিক দলের সদস্য ছিলেন। এ কথা জানার প্রথম দিনেই তাকে বরখাস্ত করা হয় এবং তদন্ত শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।
ইসরায়েল গত জানুয়ারিতে সংস্থাটির বিরুদ্ধে অভিযোগ করার পর থেকে জাতিসংঘের অভ্যন্তরীণ পর্যবেক্ষক ইউএনআরডব্লিউএর বিরুদ্ধে তদন্ত করে জানতে পেরেছে যে, তাদের ১২ জন কর্মী গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলায় জড়িত ছিলেন।
এই অভিযোগের ফলে এক ডজনেরও বেশি দাতা দেশ ইউএনআরডব্লিউএতে তাদের তহবিল স্থগিত করে। এর ফলে প্রায় ৪৫০ মিলিয়ন ডলারের প্রাথমিক নগদ সংকট দেখা দেয়। তারপর থেকে, যুক্তরাষ্ট্র বাদে সব দাতা দেশ সংস্থাটিকে পুনরায় অর্থায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
