ছবি— সংগৃহীত। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের
(বিএফআইইউ) সাবেক প্রধান মাসুদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অর্থপাচারসহ দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগের
অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ
বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় দুদক।
সংস্থাটি জানায়, মাসুদ বিশ্বাসের অনিয়ম
ও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ গোয়েন্দা অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে
সঠিক পরিলক্ষিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্য অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে, মাসুদ বিশ্বাস
দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের
মালিক হয়েছেন। স্কাই ক্যাপিটাল এয়ারলাইনসের বিমান কেনায় সন্দেহজনক অনিয়মের অভিযোগটি
ঘুসের বিনিময়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে না পাঠিয়ে সেটির সমাপ্ত করেছেন। এনআরবি
কমার্সিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান তমাল পারভেজের ব্যাংক থেকে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা
লুটসহ আর্থিক অনিয়মের রিপোর্টকে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা-২০১৯ এর আওতায় গোয়েন্দা
প্রতিবেদন হিসেবে না পাঠিয়ে সাধারণ পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন হিসেবে পাঠানোর অনুমতি দিয়েছেন
তিনি।
স্কাই ক্যাপিটাল এয়ারলাইনসের বিরুদ্ধে থাকা
অন্য একটি অভিযোগের অনুসন্ধান পরিচালনা করছেন উপপরিচালক ইয়াসির আরাফাত।
অভিযোগে বলা হয়েছে, অনিয়ম ও অস্বাভাবিক
মূল্য বৃদ্ধির কারণে শেয়ারবাজারের তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিমাদ্রী লিমিটেডের ব্যাংক
হিসাবের লেনদেন স্থগিত করা হয়েছিল, যা আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে প্রত্যাহার করার নির্দেশ
দিয়েছিলেন বিএফআইইউর এই সাবেক প্রধান।
অভিযোগ রয়েছে, তানাকা গ্রুপ, এসএ গ্রুপ ও
আনোয়ার গ্রুপের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং, অর্থপাচার-সংক্রান্ত সুনিশ্চিত তথ্য থাকা সত্ত্বেও
ওই অভিযোগগুলো আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে না পাঠিয়ে ব্যক্তিগত সুবিধা নেয়ার মাধ্যমে
তিনি নথিভুক্ত করেছেন।
অর্থপাচারেরও বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে বিএফআইইউর
এই সাবেক প্রধানের বিরুদ্ধ।
এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের
সঙ্গে পারস্পরিক যোগসাজশে ইসলামী ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিদেশে
পাচার, আবদুল কাদির মোল্লার থার্মেক্স গ্রুপ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে বিদেশে অর্থপাচারসহ
ঘুসের বিনিময়ে জিনাত এন্টারপ্রাইজের বিদেশে অর্থপাচারের মামলা ধামাচাপা দিয়ে বিপুল
পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন মাসুদ বিশ্বাস।
তার অবৈধভাবে অর্জিত জ্ঞাত আয়বর্হিভূত সম্পদ
রয়েছে বলে গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে গোপনে সোর্স ইনফরমেশনের বরাতে প্রাথমিকভাবে সঠিক
পরিলক্ষিত হওয়ায় প্রকাশ্য অনুসন্ধানের জন্য কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে অবহিত করেছে
দুদক।
বিএফআইইউ হলো আর্থিক খাতের স্বচ্ছতার জন্য
নিবেদিত গোয়েন্দা ইউনিট, যা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি-অনিয়ম রোধে কাজ
করে থাকে।
