এমপক্স

কতটা ঝুঁকিতে বাংলাদেশ?

ফারিন জাহান সিগমা

ছবি: শাটার স্টক

ভাইরাসজনিত রোগ এমপক্স। জলবসন্ত, গুটিবসন্তের মতো এমপক্সও আলাদা ধরনের একটি পক্স ভাইরাস। এমপক্সের প্রধান দুটি ধরন আছে ক্লেড ক্লেড ২। দুটি ধরনের মধ্যে সাব ডিভিশন , বি রয়েছে।

কঙ্গোয় দীর্ঘদিন এমপক্সের প্রাদুর্ভাব ছিল। কঙ্গোর মানুষ এমপক্সে আক্রান্ত হওয়ার মূল কারণ ছিল ক্লেড ভাইরাস। অন্যদিকে ইউরোপে ছড়িয়েছে ক্লেড ভাইরাস। তবে ক্লেড -এর তুলনায় ক্লেড ভাইরাসে মৃত্যুহার কম। কিন্তু আফ্রিকায় যেটা ছড়িয়েছিল ক্লেড ১। ক্লেড ধরনটি গুরুতর। আক্রান্তদের ১০০ জনের মধ্যে চারজন রোগে মারা যায়।

মাঝখানে এর প্রকোপ আবার কমতে শুরু করলেও সম্প্রতি তা আবার বাড়তে শুরু করেছে।

আফ্রিকার কঙ্গোয়ই আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। আশপাশের দেশে ছড়িয়েছে এবং ইউরোপ এশিয়ার বিভিন্ন দেশেও ছড়াচ্ছে। সংক্রমণ মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ২০২২ সালের পর মাঙ্কিপক্স বা এমপক্স নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

বিশ্বের প্রায় ২০টি দেশে ২০০ জনের বেশি মাঙ্কিপক্স রোগী শনাক্ত হয়েছে। এশিয়ার মধ্যে ইসরায়েল সংযুক্ত আরব আমিরাতে ছড়িয়েছে রোগ। এছাড়া থাইল্যান্ডেও একজন এমপক্স আক্রান্ত ব্যক্তি পাওয়া গেছে।

যদি আশপাশের অঞ্চলে এমপক্স ছড়াতে থাকে তাহলে তা দেশের জন্য অবশ্যই উদ্বেগের কারণ। বর্তমানে প্রাথমিক ঝুঁকি অবস্থায় সবাইকে সচেতন হতে হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বিমানবন্দর, নৌ স্থল বন্দরে স্ক্রিনিং চালু করতে হবে। এমপক্সের লক্ষণ আছে এমন ব্যক্তিদের পরীক্ষা করতে হবে। এমপক্স আক্রান্ত দেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের বিষয়ে আলাদা নজর দিতে হবে এবং তারা আক্রান্ত কিনা সেটি মনিটরিং করা লাগবে। আক্রান্ত হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হটলাইনে ফোন দিয়ে রোগীকে সে বিষয়ে জানাতে হবে। সারা দেশেই নজরদারি বাড়াতে হবে, হাসপাতালগুলোয় প্রস্তুতি রাখতে হবে যাতে রোগী পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া যায়।

এরই মধ্যে এমপক্স একাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। সুতরাং তা মোকাবেলায় কোনো একটি দেশের একক প্রচেষ্টা যথেষ্ট নয়। বর্তমানে ভাইরাসটি শারীরিক স্পর্শের মাধ্যমে ছড়াচ্ছে। তবে তা হাঁচি-কাশির মাধ্যমেও ছড়াতে পারে।

বিশ্বব্যাপী যত বেশি রোগী কমিয়ে বা আইসোলেট করে রাখা যাবে, ভাইরাসের মিউটেশন ক্ষমতা তত কমবে। ভাইরাস শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ পাবে না। ভাইরাস যত বেশি ছড়ায় ঠিক তত বেশি মিউটেশনের সুযোগ পায় এবং প্রাণঘাতী হয়। সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায়ই কেবল উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মোকাবেলা করা সম্ভব।

এরই মধ্যে মাঙ্কিপক্স মোকাবেলায় দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর স্থলবন্দরগুলোয় আক্রান্ত দেশ থেকে আসা যাত্রীদের ওপর সজাগ দৃষ্টি রাখা এবং স্ক্রিনিং জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন