এখনই ট্রেন চালু হচ্ছে না

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

দেশে চলমান পরিস্থিতির মধ্যে নিরাপত্তাজনিত শঙ্কায় স্বল্প পরিসরে ট্রেন চালুর ঘোষণা দিয়ে পরে সে সিদ্ধান্ত থেকেও সরে এসেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। সংস্থাটির কর্মকর্তারা বলছেন, এখন ট্রেন চালানো হলে নাশকতা হতে পারে। তাই জানমালের ক্ষতি এড়াতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। এর মধ্যে বুধবার সীমিত পরিসরে পণ্যবাহী ট্রেন চলেছিল। গতকাল এসব ট্রেনও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শুধু বিজিবি পাহারায় কয়েকটি জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন চলাচল করছে।

এর আগে বুধবার দুপুরের দিকে এক ‘‌অভ্যন্তরীণ আদেশে’ পরদিন বৃহস্পতিবার থেকে স্বল্প পরিসরে কমিউটার ট্রেন চালুর নির্দেশ দেয় রেলওয়ে হেডকোয়ার্টার। এ নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকা থেকে নরসিংদী, টাঙ্গাইল, জয়দেবপুর, নারায়ণগঞ্জের মধ্যে; রাজশাহী থেকে বিভিন্ন স্বল্প দূরত্বের গন্তব্যে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে কমিউটার ট্রেনগুলো সীমিত পরিসরে চালুর প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন রেলওয়ের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা। তবে রাতে রেলওয়ে হেডকোয়ার্টার থেকে আরেকটি ‘অভ্যন্তরীণ আদেশ’ জারি করা হয়, যাতে আগের ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্তটি স্থগিত করা হয়।

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ট্রেন পরিচালনার বিষয়ে গতকাল রেলপথমন্ত্রী জিল্লুল হাকিমের সভাপতিত্বে রেল ভবনে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে, জানতে চেয়ে যোগাযোগ করলে রেলমন্ত্রী বণিক বার্তাকে বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে।’

কবে নাগাদ ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে, এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘‌এটা এ মুহূর্তে বলা সম্ভব হচ্ছে না। এখন ট্রেন চালালে যদি কোনো নাশকতা হয়, তার দায়ভার কে নেবে? পরিস্থিতি যত তাড়াড়াড়ি স্বাভাবিক হবে, তত তাড়াতাড়ি আমরা ট্রেন চালু করব।’

কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রভাবে ১৮ জুলাই বন্ধ হয়ে যায় যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল। এর মধ্যে বুধবার সীমিত পরিসরে কয়েকটি পণ্যবাহী ট্রেন পরিচালনা করে রেলওয়ে। গতকাল থেকে সে ট্রেন চলাচলও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে বিজিবি পাহারায় ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, সিলেটসহ কয়েকটি গন্তব্যে কেবল জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন চলাচল করছে।

রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকলেও কারফিউ শিথিলকালে অনেকটাই স্বাভাবিক রয়েছে সড়কপথ। রাজধানী ঢাকা থেকে গতকাল সকালে দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যেতে শুরু করে বলে জানিয়েছে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। সংগঠনের মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার কারফিউ শিথিল হওয়ার আগেই ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানের উদ্দেশে কয়েকটি বাস ছেড়ে যায়। তবে বেশির ভাগ বাস ছেড়েছে কারফিউ শিথিল হওয়ার পর। স্বল্প রুটের বাসগুলো কারফিউর সময়সীমার মধ্যেই গন্তব্যে গিয়ে ফিরে আসার চেষ্টা করছে। তবে দূরপাল্লার বাসগুলো কেবল একটি ট্রিপই দিতে পারছে। অনেক সময় এক ট্রিপেই কারফিউর সময়সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।’

নৌ-চলাচলও কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। রাজধানীর সদরঘাট থেকে গতকাল সকালে স্বল্প দূরত্বের রুটগুলোয় লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। সদরঘাট থেকে চাঁদপুর, নড়িয়া ও ইলিশা রুট, চাঁদপুর ও বরিশাল থেকে ঢাকার সদরঘাট রুটে গতকাল বেশকিছু যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করেছে। তবে যাত্রী ছিল খুবই কম। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন