বিক্রি বৃদ্ধির প্রত্যাশা

নতুন আইফোনের জন্য চিপ ক্রয়াদেশ বাড়িয়েছে অ্যাপল

বণিক বার্তা ডেস্ক

আইফোন সিক্সটিনের বিক্রি বাড়ার ক্ষেত্রে মূল চালিকাশক্তি হবে অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স ছবি: গিজমোচায়না

বাজারজাতের অপেক্ষায় থাকা আইফোন সিক্সটিন সিরিজের জন্য তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি (টিএসএমসি) থেকে চিপ ক্রয়াদেশ বাড়িয়েছে অ্যাপল। তাইওয়ানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিটিইই এ তথ্য জানিয়েছে। খবর গিজমোচায়না। 

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, বিক্রি বৃদ্ধির প্রত্যাশায় নতুন সিরিজের জন্য ৯ থেকে ১০ কোটি এ এইটিন চিপের ক্রয়াদেশ দিয়েছে টেক জায়ান্টটি। যেখানে গত বছরে আইফোন ফিফটিনের জন্য ছিল ৮ থেকে ৯ কোটি চিপের ক্রয়াদেশ দেয়া হয়েছিল। 

অন্যদিকে চলতি বছরে চিপ ক্রয়াদেশ বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে প্রযুক্তিবিদরা জানান, এ থেকে বোঝা যাচ্ছে অ্যাপল ২০২৪ সালে আইফোন সিক্সটিনের বিক্রি বাড়ার বিষয়ে আশাবাদী। তাদের মতে, আইফোন সিক্সটিনের বিক্রি বাড়ার ক্ষেত্রে মূল চালিকাশক্তি হবে প্রতিষ্ঠানটির তৈরি নিজস্ব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)নির্ভর অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স, যা আইওএস এইটিনের মাধ্যমে অ্যাপল ডিভাইসে আসছে। তবে অ্যাপল ইন্টেলিজেন্সের ফিচারগুলো ব্যবহার করতে অন্তত আইফোন ফিফটিন প্রো বা আইফোন সিক্সটিন সিরিজের যেকোনো মডেলের প্রয়োজন হবে বলে জানা গেছে। এর ফলে নতুন ডিভাইস কেনার ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীদের আগ্রহ বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, আইফোন সিক্সটিন সিরিজের সব মডেলেই এ এইটিন চিপ ব্যবহার করা হবে, যা তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির থ্রি ন্যানোমিটার প্রযুক্তিতে তৈরি হবে। তবে স্ট্যান্ডার্ড আইফোন সিক্সটিন ও প্লাস মডেলে এ সেভেনটিন প্রোর অনুরূপ ডিজাইন ব্যবহার হতে পারে বলে ধারণা করছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা। 

নতুন চিপে আপগ্রেড করা ছাড়াও আইফোন সিক্সটিন সিরিজের সব মডেলেই ৮ গিগাবাইট করে র‍্যাম আপগ্রেড করা হবে বলেও ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা। র‍্যাম বাড়ানোর ফলে সহজেই অন ডিভাইসে লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলগুলো চালানো সহজ হবে। 

আগামী সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি অ্যাপল আইফোন সিক্সটিন সিরিজের উন্মোচন করতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে। তবে বাজার বিশ্লেষকদের অভিমত, উন্নত এআই ফিচার, র‍্যাম বৃদ্ধি ও উন্নত প্রসেসরের সমন্বয় স্মার্টফোন শিল্পে একটি নতুন মানদণ্ড তৈরি করতে পারে। এছাড়া অ্যাপলের  উৎপাদন কৌশল ও এআই সক্ষমতার দিকে মনোনিবেশ স্মার্টফোন উদ্ভাবনে নিজেদের শীর্ষ অবস্থান দৃঢ় করার জন্য একটি শক্তিশালী পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তাদের মতে, এ অগ্রগতির সঙ্গে আইফোন সিক্সটিন সিরিজ বাজারে বিক্রি বাড়াতে যথেষ্ট প্রভাব রাখবে। আগামী সেপ্টেম্বরে আইফোন সিক্সটিন উন্মোচনের পর অ্যাপল বিক্রির প্রত্যাশা পূরণ হয় কিনা সেটা দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন প্রযুক্তিবিদরা। 

অ্যাপলের নতুন এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট বিশ্বে নতুন করে আলোচনার বিষয় হলেও ইউরোপে এ ফিচার উন্মোচনের সময় পিছিয়েছে কুপারটিনোর প্রযুক্তি জায়ান্টটি। এর কারণ হিসেবে ইউরোপীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ডিজিটাল মার্কেটস অ্যাক্টের কথা জানিয়েছে অ্যাপল। 

নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন ও ইতালিসহ ইইউর ২৭টি দেশ এআইনির্ভর অ্যাপলের ফিচারগুলো আপাতত ব্যবহারের সুযোগ পাবে না।

চলতি মাসে ডেভেলপার কনফারেন্সে অ্যাপল নিজেদের এআই সিস্টেম আনার ঘোষণা দেয়। অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স নামের এআই মডেলটি ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতায় পরিবর্তন আনবে বলে আশা প্রকাশ করেন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী টিম কুক। 

অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স টেক্সট সামারাইজেশন, ইমেজ জেনারেশন ও স্মার্ট ডাটা সার্চ করতে পারে। এরই সঙ্গে একটি উন্নত ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট সিরি যুক্ত করেছে অ্যাপল। অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স উন্মোচনের পরই এর শেয়ারের দর ৯ শতাংশ বেড়ে যায়। ফলে কোম্পানিটির বাজারমূল্য ৩ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল।

যেসব ফিচার নিয়ে ইউরোপীয় নিয়ন্ত্রণ সংস্থা উদ্বেগ জানিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স, আইফোন মিররিং ও শেয়ারপ্লে স্ক্রিন শেয়ারিং। এ ফিচারগুলো চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলেও চালু হবে। প্রাথমিকভাবে ফিচারগুলো শুধু যুক্তরাষ্ট্রের আইফোন, আইপ্যাড ও ম্যাক ডিভাইসের জন্য চালু হয়েছে।

অ্যাপল জানিয়েছে, ইইউর ডিজিটাল মার্কেটস অ্যাক্টকে (ডিএমএ) এআই ফিচারগুলো ইউরোপে চালু করার ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হিসেবে দেখা হচ্ছে। মূলত ইউরোপে ডিজিটাল অর্থনীতিতে আরো স্বচ্ছতা আনতে এ আইন চালু করা হয়েছে। এ আইনে বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের পণ্যগুলো যেন প্রতিদ্বন্দ্বীদের পণ্যগুলোর সঙ্গে সহজেই কাজ করতে পারে এমন করে তৈরির নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন