বগুড়ায় ভাঙছে যমুনার তীর আতঙ্কে শতাধিক পরিবার

এইচ আলিম, বগুড়া

যমুনার ভাঙনের কবলে পড়েছে সারিয়াকান্দির শিমুলতাইড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

বর্ষা শুরুর আগেই বগুড়ায় যমুনা নদীর তীরে ভাঙন শুরু হয়েছে। চলতি মাসের শুরু থেকে সারিয়াকান্দি উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। উপজেলার চালুয়াবাড়ী ইউনিয়নের শিমুলতাইড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। আতঙ্কে রয়েছে শিমুলতাইড় গ্রামের শতাধিক পরিবার। একই সঙ্গে ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে ওই গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পও।

যদিও পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে সেখানে জিও ব্যাগ দেয়া হয়েছে। তবে তা খুব বেশি কাজ আসেনি। নদী শাসনের কারণে যমুনা তার গতিপথ পরিবর্তন করেছে। এ কারণে ডান তীরে (বগুড়ার পাশে) পলি পড়ছে, আর বাম তীরে (জামালপুরে জেলার পাশে) নদী সরে যাচ্ছে বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

নদীতীরের বাসিন্দারা জানান, যমুনা সেতুর উজানে সিরাজগঞ্জ থেকে কুড়িগ্রাম পর্যন্ত প্রায় ২৩০ কিলোমিটার নদীতে ছোট-বড় চরের সংখ্যা প্রায় দুই হাজার। এসব চরে কয়েক লাখ মানুষের বাস। বর্ষায় কিছু চর পানিতে প্লাবিত হয়, আবার কিছু চরে ভাঙন দেখা দেয়। কখনো লোকালয়ের দিকে নদী বাঁক নিয়ে ভাঙতে থাকে। যমুনার উজান থেকে বয়ে আসা পলি জমে উপজেলার চালুয়াবাড়ী, হাটশেরপুর, কাজলা, কর্নিবাড়ী এবং সারিয়াকান্দি সদরে চরভূমি সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ যমুনা নদীতে জুলাই-আগস্টে পানি বাড়ে। তবে এ বছর জুনের শুরুতে পানি কয়েক দফা বেড়ে ৬০ সেন্টিমিটার হলেও বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। ৮ জুন থেকে পানি কমতে থাকায় ভাঙন দেখা দেয়। ৯ জুন সকালে সারিয়াকান্দি উপজেলার চালুয়াবাড়ী ইউনিয়নের শিমুলতাইড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে।

সারিয়াকান্দি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম কবির জানান, যমুনার ভাঙনের কবলে পড়া বিদ্যালয়টি রক্ষা করা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করে ভবনটি নিলামে বিক্রি করে দেয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে অন্য কোনো স্থানে বিদ্যালয়টি স্থানান্তর করা হবে।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির জানান, বিদ্যালয় ভবনটি ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। যেকোনো সময় সেটি নদীতে বিলীন হতে পারে। তবে ভবনটি রক্ষার চেষ্টা করা হয়েছে। কারণ বিদ্যালয়টি বিলীন হলে আরো কিছু আবাদি জমি ও লোকালয়ও ক্ষতির মুখে পড়বে। এ ব্যাপারে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত ভাঙন রোধে কাজ শুরু করা হবে।

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক জানান, উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের জন্য যমুনা নদীর পানি বেড়েছিল। তবে এখন কমতে শুরু করেছে। কামালপুর ইউনিয়নে নদী ভাঙনকবলিত এলাকায় তীর সংরক্ষণ কাজ চলমান। নতুন করে যেসব এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে, সেখানে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। নদী এলাকা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন