সাতক্ষীরায় রেমালের ব্যাপক তাণ্ডব: ঢাল হয়ে রক্ষা করেছে সুন্দরবন

বাসস

ছবি: বাসস

জেলার উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। এদিকে এবারো ঢাল হয়ে খুলনা অঞ্চলকে আরো ভয়ানক ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করেছে সুন্দরবন। বাতাসের গতিবেগ অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে এ বন।

রোববার (২৭ মে) রাতে সাতক্ষীরা উপকূলের বুড়িগোয়ালীনি এলাকায় থেকে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমাল জেলাজুড়ে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে। অনেক গাছপালা উপড়ে গেছে। জোয়ারে মাছের ঘের ভেসে গেছে। তবে সুন্দরবন এবারো রক্ষা করেছে। বাতাসের গতিবেগ অনেক কমিয়ে দিয়েছে।

আশাশুনির প্রতাপনগর এলাকার সাইদুল ইসলাম জানান, বর্তমানে প্রতাপনগর অঞ্চলে ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ কমেছে। ঘূর্ণিঝড় রেমাল দুর্বল হয়েছে কিছুটা।

সাতক্ষীরার স্থানীয় মুনজিতপুর এলাকার আমিনুর রহমান আলম বলেন, রেমালের কবল থেকে সাতক্ষীরার উপকূল এখন প্রায় বিপদমুক্ত বলা যায়। শুধু বেড়িবাঁধের দিকে খেয়াল রাখতে হবে যেন নদীর পানি ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে।

তিনি আরো জানান, সাতক্ষীরা শহর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় ঝোড়ো বাতাসের গতিবেগ মাঝে মাঝে এত বেশি যে, অফিস থেকে বাইক চালিয়ে বাসা পর্যন্ত আসা খুবই কষ্টকর ছিল। মাঝে মাঝে মনে হয়েছে, এ বুঝি বাইকসহ উল্টে গেলাম। যদিও বাইক ১০ কিলোমিটারের নিচে ছিল। বাসায় আসার পথে দেখলাম, অধিকাংশ দোকানের সাইনবোর্ড ছিঁড়ে পড়ে গেছে। কোনোটা ঝুলে আছে।

কালিগঞ্জের ওলিউর রহমান বলেন, আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে আবারো সুন্দরবন বুক দিয়ে রক্ষা করল আমাদের সাতক্ষীরা উপকূলকে ।

সাতক্ষীরা সদরের মমিনুর রহমান সবুজ বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বাণিজ্যিক এলাকা সাতক্ষীরা সদরের ঝাউডাঙ্গা বাজারের কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্ষয়ক্ষতির চিত্র ।

শ্যামনগরের সুলতান শাহজাহান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল সাতক্ষীরা উপকূলে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে। অনেক গাছগাছালি উপড়ে চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এখনো গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির পাশাপাশি ঝোড়ো হাওয়া বয়ে চলছে। নদ-নদীগুলো এখনো উত্তাল। জোয়ারের পানি এখনো কমেনি।

তিনি বলেন, বৃষ্টিতে বাঁধের মাটি নরম হয়ে গেছে। ভাটিতে পানি কমার কথা থাকলেও কমছে না। এতে অনেক এলাকায় বাঁধে ফাটল দেখা দিতে পারে। ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেটা জানা যায়নি।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি সাতক্ষীরা অতিক্রম করেছে। রাত ১টায় এখানে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ৭২ কিলোমিটার। সন্ধ্যা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত এ জেলায় ৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মতিউর রহমান সিদ্দিকী জানান, গভীর রাতে সুন্দরবন সংলগ্ন মুন্সিগঞ্জ-শ্যামনগর সড়কের ওপর ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে অনেক গাছ-গাছালি ভেঙে পড়ে। ফলে কিছু সময়ের জন্য যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে ওই সময়ই শ্যামনগর থানার ওসির নেতৃত্বে পুলিশ দা-কুড়াল ও করাত দিয়ে গাছ কেটে রাস্তা যানবাহন চলাচলের উপযুক্ত করে তোলে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন