কাল রাতে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় রেমাল

সমুদ্রবন্দরে ১ নম্বর সতর্কসংকেত

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে সেটি ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে’ পরিণত হতে পারে বলে ধারণা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ গতকাল রাতে বণিক বার্তাকে এ কথা জানান। আগামীকাল (রোববার) রাতে এ ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। আর এ সময় উপকূলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টি হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে গতকাল সকালেই নিম্নচাপ সৃষ্টির কথা জানানো হয়েছে। এজন্য দেশের চার সমুদ্রবন্দরে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। মাছ ধরার ট্রলারগুলোকে গভীর সমুদ্রে না যেতে বলা হয়েছে। এ নিম্নচাপ যদি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়, তবে এর নাম হবে ‘রেমাল’। নামটি ওমানের দেয়া। এর অর্থ ‘বালি’।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ বলেন, ‘রেমাল প্রবল ঘূর্ণিঝড় হতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি। খুলনা থেকে পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার মাঝামাঝি স্থানে এটি আঘাত হানতে পারে। অপেক্ষাকৃত বেশি এলাকা ধরে ঘূর্ণিঝড়টির বিস্তৃতি থাকতে পারে। সমুদ্র উপকূল এবং সুন্দরবনে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।’

ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সৃষ্ট বাতাসের গতিবেগ যদি ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার হয়, তখন তাকে ‘ঘূর্ণিঝড়’ বা ট্রপিক্যাল সাইক্লোন বলা হয়। গতিবেগ যদি ৮৯ থেকে ১১৭ কিলোমিটার হয়, তখন তাকে ‘‌প্রবল ঘূর্ণিঝড়’ বলা হয়। আর বাতাসের গতিবেগ যদি ঘণ্টায় ১১৮ থেকে ২১৯ কিলোমিটার হয়, তখন সেটিকে ‘অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়’ বলা হয়। গতিবেগ ২২০ কিলোমিটার বা তার বেশি হলে তা হয় ‘সুপারসাইক্লোন’।

ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রভাগের বা সামনের অংশের প্রভাব রোববার সকাল থেকেই বোঝা যাবে বলে জানান আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘‌শনিবার রাত থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে। রোববার থেকে বৃষ্টি আরো বাড়বে। ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টি হতে পারে উপকূলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।’

শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিম্নচাপটি উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১৬ দশমিক ১ ৃ অক্ষাংশ এবং ৮৯ দশমিক শূন্য ডিগ্রি দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। এটি সন্ধ্যা ৬টায়  চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭১০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরো উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।

নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার। এটি দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর মাঝারি ধরনের উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন