রফতানিকে উৎসাহিত করার জন্য সরকার ৪৩ খাতে নগদ প্রণোদনা দিয়ে আসছে। ২০০৯-১০ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর—এ ১৪ বছরে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে মোট ৬২ হাজার ৫৫১ কোটি টাকা। এর মধ্যে শীর্ষ ১০ খাতই পেয়েছে প্রায় ৯৭ শতাংশ। আর একক হিসেবে নগদ প্রণোদনার সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী বস্ত্র খাত। যদিও তৈরি পোশাক ছাড়া নগদ প্রণোদনার সুফল নেই বাকি খাতগুলোর রফতানিতে। এদিকে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) শর্ত ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সুপারিশের কারণে নগদ প্রণোদনা প্রত্যাহারের পথে হাঁটছে সরকার। এতে সুবিধা হারানোর শঙ্কায় উদ্বেগে রয়েছেন রফতানিকারকরা।
স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের (এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন) কথা রয়েছে ২০২৬ সালের নভেম্বরে। ডব্লিউটিওর বিধান অনুসারে তখন আর কোনো ধরনের রফতানি প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা দেয়ার সুযোগ থাকবে না। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে এরই মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত নগদ প্রণোদনার পরিমাণ কমানো হয়েছে। প্রতি ছয় মাস পরপর তৈরি পোশাক খাতের রফতানিতে প্রণোদনার হার শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ কমানোর পরিকল্পনা সরকারের। সে হিসাবে এলডিসিতে উত্তরণের কয়েক মাস আগেই অর্থাৎ ২০২৬ সালের জুলাইয়ে রফতানিতে দেয়া নগদ প্রণোদনার পুরোটা প্রত্যাহার করে নেবে সরকার।
গত বছরের জানুয়ারিতে আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ নেয়ার চুক্তি করে বাংলাদেশ। এ ঋণ কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন ধরনের শর্ত ও সংস্কার বাস্তবায়ন করছে সরকার। সংস্থাটির পক্ষ থেকে ভর্তুকি ও প্রণোদনা কমিয়ে আনার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সদ্যসমাপ্ত আইএমএফ রিভিউ মিশন এর পাশাপাশি কর অবকাশ সুবিধাও বাতিলের কথা বলেছে। এ বিষয়ে সংস্থাটির যুক্তি হচ্ছে, ভর্তুকি ও প্রণোদনার অর্থ কমিয়ে সেটি সামাজিক সুরক্ষায় ব্যয় করা যাবে।
একদিকে কাঙ্ক্ষিত হারে রাজস্ব আয় আসছে না, অন্যদিকে এ রাজস্ব আয় থেকে ভর্তুকি ও প্রণোদনা দিতে গিয়ে সরকারের বাজেট ঘাটতি বেড়ে যাচ্ছে। আবার সামষ্টিক অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকারকে বিভিন্ন ধরনের কঠোর কর্মসূচি নেয়ার কথাও বলেছে আইএমএফ। এতে করে সাধারণ মানুষের ওপর এর প্রভাব পড়ছে, যা মোকাবেলায় সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে ব্যয় বাড়ানোর কথা বলছে সংস্থাটি।
সম্প্রতি জাতীয় সংসদে নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ২০০৯-১০ থেকে ১৪ অর্থবছরে খাতওয়ারি নগদ প্রণোদনার তালিকা দিয়েছেন। পাশাপাশি চলতি অর্থবছরে এ খাতে এখন পর্যন্ত কত টাকা দেয়া হয়েছে সে তথ্যও দিয়েছেন তিনি। এতে দেখা যায়, গত ১৪ বছরে নগদ প্রণোদনা বাবদ সরকার ৬২ হাজার ৫৫১ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। আর চলতি অর্থবছরে এ পর্যন্ত প্রণোদনা দেয়া হয়েছে ৫ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ১৪ অর্থবছরে রফতানিতে তৈরি পোশাক তথা বস্ত্র খাতের অবদান ক্রমেই বেড়েছে। এর বিপরীতে দুর্বল হয়েছে বাকি খাতগুলোর অবদান। যদিও এ সময়ে সরকারের দেয়া ভর্তুকির ৫৬ শতাংশই পেয়েছেন এসব খাতের উদ্যোক্তারা। ২০০৯-১০ অর্থবছরে রফতানিতে বস্ত্র খাতের অবদান ছিল ৭৭ দশমিক ১২ শতাংশ আর বস্ত্র-বহির্ভূত খাতের অবদান ছিল ২২ দশমিক ৮৮ শতাংশ। সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে রফতানিতে বস্ত্র খাতের অবদান দাঁড়িয়েছে ৮৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং বস্ত্র-বহির্ভূত খাতের অবদান ছিল ১৫ দশমিক ৪২ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, টাকার অবমূল্যায়নের কারণে বস্ত্র খাতের রফতানিকারকরা এরই মধ্যে নগদ প্রণোদনার চেয়েও বেশি প্রণোদনা পেয়েছেন। তবে অন্য খাতগুলো প্রণোদনা পেলেও সেভাবে রফতানি বাড়াতে পারেনি। ফলে নগদ প্রণোদনা কতটা কাজে এসেছে সে প্রশ্ন থেকেই যায়।
এ বিষয়ে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) চেয়ারম্যান ড. জায়েদি সাত্তার বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এরই মধ্যে ডলারের বিপরীতে টাকার প্রায় ৩০ শতাংশ অবমূল্যায়ন হয়েছে। সম্প্রতি আরো ৬ শতাংশ অবমূল্যায়ন হয়েছে, যাকে একপ্রকার প্রণোদনাই বলা যায়। ফলে বস্ত্র খাত সরকারের কাছ থেকে যে পরিমাণ নগদ প্রণোদনা পাচ্ছে তার চেয়ে বেশি পেয়েছে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে। তাদের এখন আর নগদ প্রণোদনার প্রয়োজনীয়তা নেই। অন্যদিকে সরকার তৈরি পোশাক-বহির্ভূত খাতের রফতানি বাড়ানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু এসব খাতের রফতানি সেভাবে বাড়ছে না। বরং তৈরি পোশাক খাতের অংশ আরো বেড়েছে। তৈরি পোশাক খাত-বহির্ভূত ৯০০টি পণ্যে রফতানির জন্য গড়ে ১১ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। যদিও এসব পণ্যের ক্ষেত্রে স্থানীয় বাজারে ট্যারিফ সুরক্ষা দেয়া হচ্ছে গড়ে ৩০ শতাংশ। এতে স্থানীয় ভোক্তাদের বেশি দাম দিতে হচ্ছে।’
তৈরি পোশাক-বহির্ভূত খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দেয়া হলেও এটি বাস্তবে কতটুকু কাজে আসছে সে প্রশ্ন রেখে এ অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘২০২৬ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ যখন এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাবে তখন কিন্তু আর রফতানিতে নগদ প্রণোদনা দেয়া যাবে না। যদিও ডব্লিউটিওর পক্ষ থেকে যারা সদ্য এলডিসি থেকে উন্নীত হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে কিছুটা সহানুভূতির দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ করা হয়েছে। তবে অন্যান্য দেশ এ অনুরোধ না রাখলে কিছু করার নেই। তাই সামনের দিনগুলোয় তৈরি পোশাক-বহির্ভূত খাতের রফতানি বাড়াতে হলে আমাদেরকে ট্যারিফ কমাতে হবে। তা না হলে রফতানি বৈচিত্র্যকরণের লক্ষ্য অর্জিত হবে না। আমরা আশা করছি আগামী অর্থবছরের বাজেটে সরকার ট্যারিফ যৌক্তিকীকরণের উদ্যোগ নেবে।’
বস্ত্র খাত গত ১৪ অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি ৩৫ হাজার ২১৭ কোটি টাকার নগদ প্রণোদনা পেয়েছে। আর চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত খাতটিতে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে প্রায় ৪ হাজার ৯৬ কোটি টাকার।
বিজিএমইএ সভাপতি এসএম মান্নান কচি বণিক বার্তাকে বলেন, ‘পোশাক রফতানির শুরু থেকেই সরকার এ শিল্পের পাশে ছিল। সরকারের নীতি সুবিধা কাজে লাগিয়ে উদ্যোক্তার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল হিসেবে এখন বিশ্ববাজারে ৪৭ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রফতানি করে বাংলাদেশ। এ খাতের বাজার সম্প্রসারণে বড় ভূমিকা রেখেছে সরকারের নগদ প্রণোদনা। পোশাক পণ্য ও বাজার বহুমুখীকরণে সরকারের নগদ সুবিধা এখনো বড় ভূমিকা রাখতে পারে। কারণ এখনো পোশাক খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা টিকিয়ে রাখার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হলো সরকারের নগদ প্রণোদনা। যদিও বলা হচ্ছে ২০২৬ সালের পর এ সুবিধা প্রাপ্তির সুযোগ হারাতে হবে। কিন্তু এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন-পরবর্তী বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কমপ্লায়েন্ট পদ্ধতিতে বিকল্প প্রণোদনা প্রবর্তনের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। অনেক মধ্যম আয়ের দেশ তাদের শিল্পের জন্য সরাসরি প্রণোদনা না দিয়ে বিকল্প প্রণোদনা দিয়ে আসছে।’
পাট ও পাটজাত দ্রব্যের রফতানিতে গত ১৪ অর্থবছরে ৭ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকার নগদ প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। আর চলতি অর্থবছরে দেয়া হয়েছে ৫০০ কোটি টাকার প্রণোদনা। বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএসএ) ভাইস চেয়ারম্যান তাপস প্রামাণিক বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এসব শিল্প খাতগুলো এমন কিছু প্রতিযোগিতার মধ্যদিয়ে কাজ করে যে প্রণোদনা বা নীতি সহায়তা ছাড়া আমাদের পক্ষে টিকে থাকা কঠিন। বিষয়টা সরকারও জানে।’
চামড়াজাত দ্রব্যাদি বাবদ ২০০৯-১০ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত ৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকার প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। তাছাড়া ক্রাস্ট লেদার বাবদ এ সময়ে দেয়া হয়েছে আরো ৩৬২ কোটি টাকা। আর চলতি অর্থবছরে চামড়াজাত পণ্যের ক্ষেত্রে দেয়া হয়েছে ৩০৬ কোটি টাকার প্রণোদনা। লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাজমুল হাসান বলেন, ‘আমাদের খাতের রফতানি হ্রাস পেয়েছে ১৮ শতাংশ, আর ভারতের রফতানি বেড়েছে ৩৮ শতাংশ। এটা দেখলেই পরিস্থিতি বোঝা যায়। এটা উত্তরণের জন্য সরকারের পলিসি সাপোর্ট প্রয়োজন। রফতানিকারদের জন্য সরকারকে ইনভেস্ট করতে হবে। তাহলেই বেনিফিট রাষ্ট্র পাবে, সরকার পাবে, জনগণ পাবে।’
প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রফতানিতে গত ১৪ বছরে সরকার ৪ হাজার ৭৬৭ কোটি টাকার প্রণোদনা দিয়েছে। বাংলাদেশ এগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক ও আহমেদ অ্যান্ড কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মো. ইকতাদুল হক বণিক বার্তাকে বলেন, ‘রফতানি প্রণোদনা কমানোর কারণে এরই মধ্যে এগ্রো প্রসেসিং খাতে প্রভাব পড়েছে। এখন বিকল্প চিন্তা না করলে ভবিষ্যতে ধকল আসতে পারে। আমরা বিভিন্ন রকম সুযোগ-সুবিধা যেমন পাই, তেমনি নানা রকম অসুবিধার মধ্যেও থাকি। বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে হুথিদের কারণে সুয়েজ খালের পথটা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। কনটেইনার জাহাজগুলো এখন আফ্রিকার বিভিন্ন বন্দর ঘুরে ইউরোপ বা আমেরিকায় যাচ্ছে। তাতে করে স্বাভাবিক ভাড়াটাও বাড়ছে, একই সঙ্গে সময়ও বাড়ছে। এ ধরনের প্রতিবন্ধকতা এখন মোকাবেলা করতে হচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের রফতানি পণ্যের বেশির ভাগই তৈরি হয় দেশীয় পণ্যের মাধ্যমে। যখন আমরা সক্ষমতাটা ধরে রাখতে পারব না তখন ধাক্কাটা লাগবে দেশের কৃষকের ওপর। এগুলো সরকার অবগত, আমাদের নিজেদের প্রস্তাবনাও সরকারকে দিচ্ছি কীভাবে এটা থেকে উত্তরণ ঘটানো যায়।’
হিমায়িত চিংড়ি ও অন্যান্য খাতে সরকার গত ১৪ বছরে ৪ হাজার ৮১ কোটি টাকার নগদ প্রণোদনা দিয়েছে। আর চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত ১০০ কোটি টাকার প্রণোদনা পেয়েছেন খাতটির উদ্যোক্তারা। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (বিএফএফইএ) ও মাসুদ ফিশ প্রসেসিং অ্যান্ড আইস কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফ হোসেন মাসুদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘সরকারের প্রণোদনার কারণে আমাদের পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকে। আন্তর্জাতিক বাজারে ভারত, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ডের মতো দেশের সঙ্গে তীব্র প্রতিযোগিতা হচ্ছে। তাই সরকার যদি কোনো ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আমাদের এ খাতটি আরো বিপদে পড়ে যাবে।’
কৃষিপণ্য (শাক-সবজি, ফল-মূল) রফতানিতে গত ১৪ অর্থবছরে ১ হাজার ৭২১ কোটি টাকা নগদ সহায়তা দিয়েছে সরকার। এ সময়ে হোগলা, খড়, আখের ছোবড়া ইত্যাদি দিয়ে তৈরি পণ্যে ৪৮৩ কোটি টাকা; তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) ৩৫২ কোটি টাকা এবং আলু রফতানিতে ৩৩৫ কোটি টাকার নগদ প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য ৩১টি খাতে এ সময়ে সরকারের দেয়া নগদ সহায়তার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৯৬৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।
ইপিবির তথ্য বলছে, ২০০৯-১০ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত দেশ থেকে মোট ৪৭ হাজার ৮২৪ কোটি (৪৭৮ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিশ্বের ২১২টি দেশে ৫ হাজার ৫৫৬ কোটি (৫৫ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে। খাতভিত্তিক রফতানি পর্যালোচনায় দেখা যায় আলোচ্য অর্থবছরে ৪৫ দশমিক ৭০ শতাংশ নিটওয়্যার, ৩৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ ওভেন গার্মেন্টস, ১ দশমিক ৮৫ শতাংশ চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ হোম টেক্সটাইল এবং ১ দশমিক ২২ শতাংশ কৃষিপণ্য রফতানি হয়েছে। এর বাইরে অন্য খাতগুলোর অবদান ছিল ১ শতাংশেরও কম।
বাণিজ্য মন্ত্রণালিয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এসব নিয়ে বিভিন্ন চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে, আলোচনা হচ্ছে। সরাসরি যে টাকাটা দেয়া হয় সেভাবে না দিয়ে অন্যভাবে হয়তো আমাদের কিছু পলিসি সাপোর্ট দিতে হবে। সেগুলো নিয়ে কাজ হচ্ছে। এ প্রণোদনাটি আমরা এখনো কয়েক বছর দিতে পারব। ডেভেলপিং কান্ট্রিগুলো বিভিন্নভাবে সুবিধা দেয়। তারা রফতানির ওপরে দেয় না, তারা প্রডাকশন প্রসেসের ওপর সুবিধা দিয়ে থাকে। হয়তো আমাদেরও কিছু সুবিধা দিতে হবে, সেটা মার্কেটিংয়ে হতে পারে, প্রডাকশনে হতে পারে। সামগ্রিকভাবে আমাদের প্রতিযোগিতা বাড়াতে হব, দক্ষতা বাড়াতে হবে। বেসরকারি খাত বা যেসব প্রতিষ্ঠান আমদানি-রফতানির সঙ্গে যুক্ত তাদের কাজের দক্ষতা বাড়াতে হবে। পোর্ট-কাস্টমসে ক্লিয়ারেন্স দ্রুত করতে হবে, তাহলে ব্যবসায়ীরা এর প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারবেন।’