ফিরেই বাংলাদেশকে জেতালেন মুস্তাফিজ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

মিরপুরে গতকাল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চতুর্থ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৩৭ বলে ৫২ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন বাংলাদেশের ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

পেস তারকা মুস্তাফিজুর রহমান ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) খেলছিলেন চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও জিম্বাবুয়ের সঙ্গে হোম সিরিজ সামনে রেখে ১ মে চেন্নাইয়ের হয়ে ম্যাচ খেলে দেশে ফিরে আসেন তিনি। দেশে ফিরলেও সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচে বামহাতি পেসার ছিলেন বিশ্রামে। ফিরলেন গতকাল চতুর্থ ম্যাচ দিয়ে। ফিরেই দলকে জেতালেন। অবশ্য জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫ রানের এ জয়ের কৃতিত্ব মুস্তাফিজের একারই নয়। তার সঙ্গে সিরিজে ফেরা সাকিব আল হাসান ৪ উইকেট নিয়ে ও ব্যাটার তানজিদ হাসান তামিম দারুণ এক ফিফটি করে দলের জয়ে অবদান রাখেন।

টানা তিন হারে আগেই সিরিজের ট্রফি খোয়ানো জিম্বাবুয়ের জন্য শেষ দুটি ম্যাচ পরিণত হয় কেবল আনুষ্ঠানিকতায়। তবু গৌরবের জন্য জিততে মরিয়া ছিল দুই দল। এ লড়াইয়েও জিতল বাংলাদেশ। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে অবশ্য সহজে হারাতে পারেনি স্বাগতিকরা। জমজমাট লড়াইয়ের ম্যাচে শেষ ওভারে হার মানে সিকান্দার রাজার দল। 

অতিথিদের হতাশ করে ওপেনিং জুটিতে তানজিদ ও সৌম্য সরকার ১০ ওভারে তুলে নেন ৯০ রান। দুজন ১০১ রান তুলে বিচ্ছিন্ন হন। এর পরও বাংলাদেশ ১৪৩ রানে অলআউট হয়েছে! ইনিংসের ১২তম ওভারে বাংলাদেশের দুই ওপেনারকেই ফেরান লুক জঙ্গুই। ৩৭ বলে ৫২ রানের দুর্দান্ত এক ফিফটি করে এক্সট্রা কভারে জোনাথন ক্যাম্পবেলকে ক্যাচ দেন তানজিদ। একই ওভারে সৌম্য সরকারকেও লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে সাজঘরের পথ দেখান জঙ্গুই। সৌম্য ৩৪ বলে ৪১ রান করেন। 

জঙ্গুইর (৩/২০) সঙ্গে রিচার্ড এনগারাভা (২/২৭) ও ব্রায়ান বেনেট (২/২০) উইকেট শিকারের উৎসবে যোগ দেন। সিকান্দার রাজা ও ব্লেসিং মুজারাবানি নেন একটি করে উইকেট। ১২তম ওভারে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাতে থাকে স্বাগতিকরা। নাজমুল হোসেন শান্ত (২), সাকিব আল হাসান (১), জাকের আলী (৬) ও রিশাদ হোসেনরা (২) দলকে হতাশ করতে থাকেন। 

রান তাড়া করতে নেমে জোনাথন ক্যাম্পবেল (৩১), রায়ান বার্ল (১৯) ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজার (১৯*) ব্যাটে ভর করে শেষ ওভার পর্যন্ত ম্যাচে ছিল জিম্বাবুয়ে। যদিও বাংলাদেশের বোলারদের অভিজ্ঞতার সঙ্গে পেরে ওঠেনি অতিথি দলের ব্যাটাররা। ৪ উইকেটে ৯২ রান নিয়ে জিম্বাবুয়ে যখন জয়ের সম্ভাবনা জাগায় তখন জোড়া আঘাতে রায়ান বার্ল ও লুক জঙ্গুইকে সাজঘরে ফেরান মুস্তাফিজ। ম্যাচটা সেখানেই হেলে পড়ে বাংলাদেশের দিকে। ১৯ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন তিনি। 

এছাড়া সাকিব ৩৫ রানে নেন চারটি উইকেট। সাকিব ও মুস্তাফিজ প্রথমবার মাঠে নেমেই সম্মিলিতভাবে ৭ উইকেট শিকার করে দলের জয়ে বড় অবদান রাখেন। লিটন দাসের জায়গা নেয়া সৌম্য সরকার ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৪১ রান করে আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন দারুণভাবে।

ম্যাচসেরার পুরস্কার নিয়ে মুস্তাফিজ বলেন, ‘আমি সব সময়ই দেশের হয়ে ভালো করতে চাই, তা যেখানেই হোক না কেন। জাতীয় দল আমার কাছে সবার আগে। আজকের পিচটা খানিকটা স্লো ছিল, ফলে আমার পরিকল্পনা ভালোভাবে কাজে লাগাতে পেরেছি।’

রোববার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সিরিজের পঞ্চম ও শেষ ম্যাচ। 

চট্টগ্রামে প্রথম দুই ম্যাচে বড় ব্যবধানে হারের পর তৃতীয় ম্যাচে লড়াই করে ৯ রানে হেরেছে জিম্বাবুয়ে। কাল তারা হারল ৫ রানে। হারের ব্যবধান ক্রমে কমায় খুশি অতিথিরা। পরাজয় শেষে জিম্বাবুয়ের দলনায়ক সিকান্দার রাজা বলেন, ‘আবারো কাছে গিয়ে হার। তবে তরুণরা যেভাবে লড়ছে ও সাহসিকতা দেখাচ্ছে তাতে আমি গর্বিত। আমাদের অনেক ভুল যেমন ছিল, তেমনি অনেক পজিটিভও আছে।’ 

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ: ১৯.৫ ওভারে ১৪৩ (তানজিদ ৫২, সৌম্য ৪১, তাওহিদ ১২; জঙ্গুই ৩/২০)। জিম্বাবুয়ে: ১৯.৪ ওভারে ১৩৮ (ক্যাম্পবেল ৩১, বার্ল ১৯, মাসাকাদজা ১৯*; সাকিব ৪/৩৫, মুস্তাফিজ ৩/১৯)। ফল: বাংলাদেশ ৫ রানে জয়ী। প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: মুস্তাফিজুর রহমান (বাংলাদেশ)। সিরিজ: বাংলাদেশ ৪-০-তে এগিয়ে।  

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন