পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এজন্য তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে গতকাল এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন। দুদক সচিব জানান, দুর্নীতি দমন কমিশনের ১৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সভায় অনুসন্ধানের অনুমোদন দেয়া হয়। এজন্য গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন দুদকের উপপরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজী ও মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে খোরশেদা ইয়াসমীন বলেন, ‘গত ৩১ মার্চ সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের একটি প্রতিবেদন একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ১ এপ্রিল ও ২ এপ্রিল আরো কিছু ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় একই ধরনের অভিযোগ প্রকাশিত হয়। অভিযোগগুলোর বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা, ২০০৭-এর ৩ নম্বর বিধির আওতায় কার্যক্রম শুরু করা হয়। অভিযোগটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর দুজন কমিশনার দেশের বাইরে ছিলেন। আবার ঈদুল ফিতরের ছুটিও ছিল। ঈদের পর ১৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় দুদক আইন, ২০০৪-এর ১৫ নম্বর ধারার বিধান অনুযায়ী অভিযোগটি অনুসন্ধানের জন্য অনুমোদিত হয়। সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি মোতাবেক নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে অনুসন্ধান সমাপ্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এদিকে বেনজীর আহমেদের সম্পদ নিয়ে একটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে অনুসন্ধানের বিষয়ে দুদকের জন্য নির্দেশনা চেয়ে গতকালই হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন করা হয়েছে। এটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. সালাহ উদ্দিন রিগ্যান।
রিটকারী আইনজীবী মো. সালাহ উদ্দিন রিগ্যান এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রকাশিত ওই সংবাদের বিষয়ে অনুসন্ধান চেয়ে ৪ এপ্রিল দুদকের কাছে আবেদন করা হয়। এতে ফল না পেয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ১৮ এপ্রিল দুদক বরাবর আইনি নোটিস পাঠানো হয়। এর কোনো জবাব না পেয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বলছি না বেনজীর আহমেদ অবৈধভাবে বা দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ অর্জন করেছেন বা করেননি। তবে প্রতিবেদনের সত্যতা যাচাইয়ে অনুসন্ধান হওয়া উচিত। কারণ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী জনগণ মনে করে, পুলিশের সাবেক আইজিপি অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করেছেন। দুদক অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দিলে এ বিষয়ে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটিত হবে।’ চলতি সপ্তাহে হাইকোর্টে এ বিষয়ে শুনানি হতে পারে বলে জানান অ্যাডভোকেট মো. সালাহ উদ্দিন রিগ্যান।