ট্রান্সফার প্রাইসিং সেল জুলাইয়ে শুরু

মূল্য লুকোচুরি করে অর্থ পাচার ঠেকাবে এনবিআর

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা

আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে পণ্যের মূল্য কম-বেশি দেখিয়ে অর্থ পাচার করা হয়। এ মূল্য লুকোচুরি ঠেকাতে উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর। আগামী জুলাই থেকে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর আন্তর্জাতিক লেনদেনের ওপর অডিট শুরু করবে এনবিআরের ট্রান্সফার প্রাইসিং সেল (টিপিসি)। হাইলি টেকনিক্যাল এ কাজের প্রস্তুতি এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এনবিআরের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এনবিআর জানায়, বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর আন্তর্জাতিক লেনদেন থাকে। তারা রিলেটেড পার্টি ট্রানজেকশন করে অনেক সময়। নিজেদেরই সিস্টার কনসার্ন থেকে কাঁচামাল নিয়ে আসে বাংলাদেশে। সেক্ষেত্রে স্ট্যান্ডার্ড দরে কিনছে কিনা। কম দামে কিনে বেশি দাম দেখাচ্ছে কিনা। অনেক সময় লাভ স্থানান্তরের জন্য বেশি দাম বা কম দাম দেখায় তারা। এটাকে ‘আর্মস লেন্থ প্রাইস’ বলে। এটা দেখার জন্যই ট্রান্সফার প্রাইসিং আইন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এটার প্রয়োগ হচ্ছে।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, কোনো বহুজাতিক কোম্পানি ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন করলে এর যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণ করার নিয়ম আছে। কোম্পানিটি প্রকৃত দাম দিয়ে পণ্য আমদানি করেছে কিনা তা বছর শেষে যাচাই করবে এনবিআর। পণ্য রফতানির নামে বিদেশে টাকা পাচার হলে ট্রান্সফার প্রাইসিং সেল তা ধরতে কাজ করবে।

বহুজাতিক কোম্পানির শাখাগুলো মূল কোম্পানির কাছ থেকে কোনো পণ্য নিলে তার দাম অনেক বেশি দেখিয়ে ওই অর্থ বিদেশে পাঠিয়ে দেয়। আবার আমদানির সময় দাম বেশি দেখিয়ে লাভ কম দেখানো হয়। যাতে কর কম দিতে হয়।

২০১২-১৩ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার সময় মূল্য লুকোচুরি করে অর্থ পাচার ঠেকানোর কৌশল নির্ধারণে সেল গঠন করতে আয়কর অধ্যাদেশে বেশ কয়েকটি ধারা সংযোজন করা হয়। ২০১৮ সালে সেলটি গঠন করা হয়। এনবিআরের আন্তর্জাতিক কর ইউনিটের অধীনে এ সেল কাজ করছে।

এনবিআরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক কিছু ডাটাবেজ দরকার ছিল। সেটা আমরা পেয়েও গেছি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সেটার ব্যবস্থা করেছে। আগামী জুলাই থেকে আমরা অডিট শুরু করব। সেলে এখন যারা দায়িত্ব পালন করছেন, এটা তাদের অতিরিক্ত দায়িত্ব। পাশাপাশি অন্য দপ্তরের কাজও করছেন তারা। ভবিষ্যতে সেলের কর্মকর্তারা শুধু ট্রান্সফার প্রাইসিংয়ের কাজই করবেন। নিজস্ব জনবল নিয়ে একেবারে আলাদা ইউনিট হবে।’

তিনি জানান, সেলে এখন নয়জন কাজ করছেন। প্রধান হিসেবে রয়েছেন একজন কমিশনার। ইউরোপীয় ইউনিয়ন শুধু ডাটাবেজের অর্থ সরবরাহ করেছে। তারা টুল কিটের ট্রায়াল ভার্সন দিয়েছে। তাদের সহায়তায় প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে সেলের কর্মকর্তাদের। এটা খুব হাইলি টেকনিক্যাল। ডাটাবেজ যাচাই-বাছাই করার মাধ্যমে এই অডিট করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন