অভিমত

শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে উদাসীন হওয়া যাবে না

রুবাইয়া মোরশেদ

বিলেতে ওরা খুব চেষ্টা করে, কিন্তু তাও আমাদের মতো চা বানাতে পারে না। এক কাপ ভালো চা—চায়ের শরবত না, চা বানানো কিন্তু খুব সহজ ব্যাপার নয়। সবাই চা বানাতে পারে, কিন্তু সবাই ভালো চা বানাতে পারে না। শিক্ষার ব্যবস্থা বা পাঠ্যক্রম নকশা করা অনেকটা চা বানানোর মতোই একটা অনুশীলন। কয়েকটা উপাদান একসঙ্গে করে পাঠ্যক্রম ঠিক করে ফেলা যায়, কিন্তু ভালো একটি শিক্ষার পাঠ্যক্রম বানানোর জন্য প্রত্যেকটি উপাদান খুব চিন্তা করে ঠিক পরিমাণমতো নির্ধারণ করতে হয় যেন একটা ভারসাম্য আসে। এ ভারসাম্য আনতে পারলে শিক্ষা ব্যবস্থাও টেকে, ভালো চলে। ঠিক সুষম এক কাপ চায়ের মতো, যে চার মধ্যে দুধ, লিকার, চিনি বা মধু সবকিছু ঠিক পরিমাণে থাকে। এখন তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে: একটা শিক্ষা ব্যবস্থার বিভিন্ন উপাদান কী এবং কোন উপাদানের গুরুত্ব কতটুকু?

চায়ের প্রধান উপাদান যদি চা পাতা হয়, তাহলে শিক্ষা ব্যবস্থার প্রধান উপাদান হচ্ছে পাঠ্যক্রম বা কী পড়ানো হচ্ছে, কী শিখলে শিক্ষিত হওয়া যায়, তা। এর সঙ্গে অন্তর্নিহিতভাবে জড়িত আছে শিক্ষার উদ্দেশ্য এবং এ প্রশ্নগুলো: আমরা কেন পড়াশোনা করি? শিক্ষার লক্ষ্য কী? আমরা কেন সন্তানদের স্কুলে পাঠাই? এক সময় শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য আজকের দিনের মতো প্রাতিষ্ঠানিক বিদ্যালয়, স্কুল-কলেজ, ছিল না। এমন এক সময় আমাদের বাংলার আদি মাটিতেই ছিল যে গাছের নিচে বসে শিষ্য গুরুর কথা শোনাই ছিল শিক্ষা, যা ‘গুরুকুল’ হিসেবে পরিচিত। এরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলোয় একসময় বিদ্যালয় ব্যাপারটার উদ্ভাবন হলো যেন বাবা-মায়েরা কাজে যেতে পারেন আয়-উপার্জনের জন্য এবং সেই সময়টা যেন সন্তানদের অন্য কেউ দেখে রাখতে পারে। এর থেকেই আসলে শুরু আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার এবং এক সময় নীতিনির্ধারকরা বুঝলেন, বাহ! একসঙ্গে এক জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে জাতির ভবিষ্যৎ কাণ্ডারীদের! তো এদের নিজেদের মতো করে মানুষ করে তোলা যাক। 

তখন থেকেই বিভিন্ন উদ্দেশ্যে শিক্ষার পাঠ্যক্রমে ঢুকতে শুরু করল বিভিন্ন বিষয়। শিশুদের কর্মক্ষম করার দক্ষতার উপায়, তাদের চিন্তাশীল মানব করে তোলার বিভিন্ন বিষয়বস্তু। এজন্যই একটা শিক্ষা ব্যবস্থার পাঠ্যক্রম খুব গুরত্বপূর্ণ। যেহেতু এটি নির্ধারিত হয় শিক্ষার উদ্দেশ্যের দ্বারা, এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ যে আমরা একটা সমাজ হিসেবে একত্রে—ঠিক করি যে আমরা শিক্ষার থেকে কী আশা করি, একজন শিক্ষিত ব্যক্তির থেকে কী চাই। এমন হতেই পারে যে আমাদের উপলব্ধির সঙ্গে ক্ষমতাবান নীতিনির্ধারকদের উপলব্ধি মিলছে না। আমরা চাইতে পারি যে শিক্ষিত ব্যক্তি অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি রাখবে, কিন্তু হয়তো যাদের হাতে সব ক্ষমতা তারা তা চায় না। এখন কার উপলব্ধি অগ্রাধিকার পাবে—সমাজের নাকি ক্ষমতাবানদের? সরকার মানুষের জন্য নাকি মানুষ সরকারের জন্য?

থাক, এবার শিক্ষা ব্যবস্থার অন্যান্য উপাদানে আসা যাক। চা বানাতে পানি লাগে, পানি ছাড়া সম্ভব নয়। আবার পচা পানি দিয়েও চা হবে ঠিকই, কিন্তু ভালো পরিষ্কার পানি দিয়ে বানানো অবশ্যই শ্রেয়। শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এ ‘পানি’ হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষিকারা। খারাপ শিক্ষক দিয়েও পড়ালেখা চলে ঠিকই, কিন্তু ভালো শিক্ষক অবমূল্যায়িত হলেও অমূল্যবান এক জাতীয় সম্পদ।

এরপর চা বানাতে অবশ্যই তাপ লাগে, যেন পানি ফুটে কিন্তু চা পুড়ে না যায়। শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এ ‘তাপ’ হচ্ছে পাঠ্যপুস্তক ও পড়াশোনার চাপ। শিশুদের আমরা ব্যাগভর্তি বই নিয়ে স্কুলে পাঠাই, কোচিংয়ে পাঠাই, কিন্তু আমরা আসলে জানি না যে এত পড়ার চাপে ওদের কী লাভ হচ্ছে, ওরা কী আদৌ কিছু শিখছে, নাকি উল্টো ক্ষতিই হচ্ছে। আমরা গবেষণা করতে পারি এসব বিষয়ে, গবেষণা করতে চাইও আমরা অনেকেই। যতদিন না আমরা আমাদের নিজেদের পরিস্থিতির বিশেষ প্রসঙ্গে গবেষণালব্ধ তথ্য না পাই, ততদিন পর্যন্ত আমরা আসলে নিশ্চিতভাবে জানি না যে কোনটা ভালো, কোনটা খারাপ। যেমন ২০১৯ সালে অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ীদের একজন মাইকেল ক্রেমার তার সহকর্মীদের সঙ্গে কেনিয়ায় করা এক গবেষণার ফলাফলে অবাক হয়ে যান। তারা গবেষণায় পান যে স্কুলে শিশুদের পাঠ্যপুস্তক দেয়ার ফলে তারা যে পড়াশোনায় আরো ভালো করে তা নয়। এর থেকে গবেষকরা চিন্তা শুরু করেন যে কেন এমন হতে পারে এবং তা থেকেই শিক্ষাক্ষেত্রের অন্যান্য উপাদানের গুরুত্ব তাদের কাছে ক্রমে আরো দৃশ্যমান হওয়া শুরু হয়।

চা পাতা, পানি ও তাপ—এ উপাদানগুলো হলেই হয়ে যায় না। সুন্দরভাবে চা বানানো সম্পন্ন করতে পাত্রের চা সুন্দর করে নাড়তেও হয়। শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এ ‘নাড়ানো’ হচ্ছে কী পড়ানো হচ্ছে তা নয়, কীভাবে পড়ানো হচ্ছে তা, যাকে ‘পেডাগজি’ বলে। তারপর চুলায় চা বানানো হয়ে গেলে কাপে চা ঢালার সময় ‘ছাঁকনি’ লাগে, নয়তো একটু অস্বস্তি হতে পারে চা পানে। শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য এ ‘ছাঁকনি’ হচ্ছে ‘মূল্যায়ন’ বা আমরা যেভাবে ছাত্রছাত্রীর পরীক্ষা নিয়ে থাকি যাচাই করতে যে তারা কেমন শিখেছে। আসলে, অল্পতেই কোনো রকমে চা বানাতে চাইলে যেমন এত কিছুর প্রয়োজন হয়তোবা নেই—শিক্ষা ব্যবস্থাও খুব অল্পতেই সচল করা যায়। কিন্তু যদি শিক্ষা পদ্ধতি, মূল্যায়নের পদ্ধতি ইত্যাদি উপাদান বিবেচনায় না আনা হয়, তাহলে শিক্ষা ব্যবস্থা চলে ঠিকই, হ্যাঁ—চাকা নড়ে কিন্তু গাড়ি চলে না। আটকে থাকে, শুধু শুধু গাড়ির তেল খরচ হয়।

এতক্ষণ যা বললাম সেসব উপাদানে এক কাপ চা বানানো হয়ে যাবে, কিন্তু তা খেতে আমাদের অনেকেরই কষ্ট হবে, কারণ তা একদম শুধু চা। একে উপাদেয় হতে হলে দুধ দিয়ে দুধ চা বানাতে হবে অথবা লেবু দিয়ে রঙ চা। আমার মতে, শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এ দুধ বা লেবু হচ্ছে বই-পুস্তকের পড়াশোনার বাইরের কার্যক্রম যা এমন অনেক কিছু শেখায় যা বই থেকে শেখা যায় না। পাঠ্যক্রম-বহির্ভূত কার্যক্রম যাকে বলে, যেমন খেলাধুলা, যা থেকে দলবদ্ধভাবে লক্ষ্য সম্পাদন করতে শেখা যায়।

অধিকন্তু, আমরা অনেকে চায়ের মধ্যে যেই চিনি বা মধু দিয়ে খাই, শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে তা হচ্ছে অবকাঠামো—দালান-কোঠা, ক্লাসরুমের চেয়ার-টেবিল, ব্ল্যাকবোর্ডের মতো অবকাঠামোগত সম্পদ। রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন যে একসময় বিদ্যালয়ের শিক্ষা আদান-প্রদান ও গ্রহণের ক্ষেত্রে চেয়ার-টেবিলের দরকার ছিল না, কিন্তু তাও ভালোই চলছিল। কারণ চিনি বা মধু শুধু চাকে মিষ্টি করে, চায়ের স্বাদে এতে কিছু যায় আসে না। তেমনি শিক্ষার আসল উপাদানের মধ্যে বস্তুবাদী এসব জিনিসপত্রের স্থান বরং নিচেই, কিন্তু আমরা হয়তো অনেক সময় এগুলোকেই বেশি প্রাধান্য দিয়ে ফেলি।

সর্বশেষে, আমাদের চা বানাতে আরো যা লাগে তা হচ্ছে মসলা, একটু এলাচি, মাঝে মধ্যে একটু দারচিনি। সম্প্রতি জানতে পেরেছি যে আমরা যখন ব্রিটিশ উপনিবেশবাদীদের আধিপত্যে ছিলাম, তখন ব্রিটিশ শাসক-নিপীড়কগোষ্ঠী চায়ের মধ্যে মসলা দেয়া নিষিদ্ধ করেছিল। কারণ তাতে তাদের ভয় ছিল যে মসলা দেয়ার ফলে চা পাতা কম লাগবে এবং তাদের চা পাতা বিক্রি কম হবে, টাকা কম কামাই হবে, লাভ কমে যাবে। তখন থেকেই তাই এমন একটা ধারণার প্রচলন হয় যে চায়ে মসলা দেয়া নিপীড়কদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাওয়ার এক নীরব আন্দোলন। শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ‘মসলা’ হচ্ছে ‘জ্ঞানের পিপাসা’ কিংবা জানার আগ্রহ—খুব সূক্ষ্ম কিন্তু অমূল্য একটি উপাদান। ছাত্রছাত্রীর মধ্যে এ জানার আগ্রহ তৈরি করতে গেলে তাদের মনের ক্ষুধা মেটাতে শেখাতে হয়, শুধু পেটের ক্ষুধা নয়। আর মনের ক্ষুধা মেটানোর জন্য দরকার মাটির সঙ্গে সান্নিধ্য, নিজেদের পরিচয়, ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানা। চায়ে মসলা দিয়ে উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে যেই প্রতিবাদ আমাদের পূর্বপুরুষরা করে গেছেন, আজকে আমাদের সেটা ধরে রাখতে হবে, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে সক্রিয়ভাবে উপনিবেশবাদমূলক ব্রিটিশদের প্রভাব সরাতে হবে।

দিন শেষে এক কাপ ভালো চায়ের বৈশিষ্ট্য একেকজনের কাছে একেক রকমের হতে পারে। বিভিন্ন মানুষ যেমন বিভিন্ন রকমের চা খেতে পছন্দ করে—কেউ কড়া কেউ পাতলা লিকারের—ঠিক তেমনভাবেই যারা শিক্ষা ব্যবস্থার দায়িত্বে আছেন, তাদের সঙ্গে আমাদের—সাধারণ জনগণের—শিক্ষার লক্ষ্য কী হওয়া উচিত তা নিয়ে মতামতে পার্থক্য থাকতে পারে। পার্থক্য থাকুক বা না থাকুক, নীতিনির্ধারকদের আর জনগণের মধ্যে যত দূরত্ব, তত শিক্ষা ব্যবস্থারই ক্ষতি। এ দূরত্ব কমানোর জন্য শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা আনা দরকার—এটি সাংগঠনিকরণ অত্যাবশ্যক। নয়তো যার যখন ইচ্ছা তাই করতে পারবে এবং একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে থাকবে, যেমন হচ্ছে। সরকার বিভিন্ন নতুন উদ্যোগ নেবে শিক্ষা ক্ষেত্রে যা জনগণের মনে প্রশ্ন জাগাবে, দ্বিধা জাগবে এবং ফলস্বরূপ আন্দোলন হবে।

আমার বিশ্বাস, এসব আন্দোলনের পিছে দ্বিধাই সবচেয়ে বড় কারণ এবং স্বাভাবিকভাবেই কারণ-পরিবর্তন সম্পর্কে প্রশ্ন থেকে গেলে মনে সন্দেহ জাগারই কথা। এখানে সরকারের দিক থেকে অবশ্যই কিছু করার আছে জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য। সরকারের উচিত শিক্ষাক্ষেত্রের সিদ্ধান্ত নেয়ার ব্যাপারে আরো স্বচ্ছ হওয়ার এবং আমরা যারা শিক্ষাক্ষেত্র নিয়ে গবেষণা করি, পড়াশোনা করি এমন একাডেমিশিয়ানদের সঙ্গে মতবিনিময় করা। শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলভাবে সমষ্টিগতভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠের প্রয়োজন নিশ্চিত করা কষ্টকর এক সাধনা এবং এতে সফল হওয়ার জন্য আগে জানতে হবে জনগণ কী ভাবছে, শিক্ষাক্ষেত্রের একাডেমিশিয়ানরা কী বলছেন। সবাই দল-মত নির্বিশেষে একত্রিত হওয়ার জন্য দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ঠিক করার চেয়ে উত্তম কোনো কারণ আমি অন্তত ভাবতে পারছি না।

আর জনগণের দায়িত্ব হচ্ছে প্রশ্ন করা, প্রশ্ন করে যাওয়া। পরিবর্তন হচ্ছে বলে পরিবর্তন বাতিল করার আন্দোলন করা নিরর্থক যদি না গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলো করা যায়। আরো গভীরে গিয়ে প্রশ্ন না করলে আন্দোলনের ফসল ক্ষণস্থায়ী হবে, কারণ ভবিষ্যতে আবারো একই জিনিস হতে থাকবে। অনেক প্রশ্ন তোলার জায়গা আছে শিক্ষা ক্ষেত্রে। একদল মানুষ—তারা যতই বিজ্ঞবান হোক না কেন—যখন একসঙ্গে বসেন শিক্ষা ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে, তখন তারা কীভাবে প্রধান কিছু আলোচ্যসূচি, প্রধান কিছু লক্ষ্য স্থির করেন, সেটা একটা জানার বিষয়। এই যে প্রক্রিয়া এটি প্রাতিষ্ঠানিককরণ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষাক্ষেত্রের যেকোনো পরিবর্তনই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে থাকবে। কারণ আমরা জানি না যে কীভাবে সিদ্ধান্তগুলো নেয়া হয়, কী লক্ষ্যে পরিবর্তনগুলো পরিকল্পনা করা হয়। অনেক সময় আন্দাজ করতে পারলেও বিভিন্ন প্রশ্ন, বিভিন্ন খটকা রয়েই যায়।

প্রশ্ন তুললেই না প্রশ্নের উত্তর বের করার প্রয়োজন জোরালো হবে! অনস্বীকার্য যে গবেষণা ছাড়া নির্ভরযোগ্য ‘দুই-এ দুই-এ চার হয়’ উত্তর বের করা সম্ভব নয়। শিক্ষাক্ষেত্রের গুণগত মানের উন্নয়নের বিভিন্ন প্রচেষ্টা ও পরিবর্তন সফল হওয়ার জন্য, কষ্ট থেকে কেষ্ট মেলার জন্য, গবেষণালব্ধ তথ্যের ভিত্তিতে সাজানো উদ্যোগের কোনো বিকল্প নেই। এ গবেষণা সবাই করতে পারবেন না। বিজ্ঞান বা মেডিকেল বিষয়ে যেমন গবেষক আছেন, শিক্ষা ক্ষেত্রের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করার গবেষক আছেন। একটা বিষয়ে যাদের পাণ্ডিত্য আছে তাদেরই এ দায়িত্ব দেয়া উচিত।

উত্তর যদিও গবেষকদের বের করতে হবে, শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলার দায়িত্ব এবং অধিকার এ দেশের প্রত্যেকটি নাগরিকের। যদি একটা ব্যাপারে আপস না করা যায় তা হচ্ছে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, কারণ এর থেকে বড় মনুষ্যত্বপূর্ণ মানবজাতি গড়ার কারিগর আমাদের এখনো অজানা। শিক্ষাক্ষেত্র নিয়ে তাই আমাদের উদাসীন হওয়া যাবে না, চ্যালেঞ্জ করতে হবে, প্রশ্ন তুলতে হবে। নির্বাচনে দাঁড়ানো রাজনীতিবিদদেরও জিজ্ঞাসা করতে হবে যে আপনারা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে কী ভাবছেন? মানসম্পন্ন উত্তর দাবি করতে হবে। সরকারকে প্রশ্ন করতে হবে, প্রশ্ন করার জায়গা চাইতে হবে—শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আপনাদের পরিকল্পনা কী? প্রশ্ন অন্তত তুলে গেলাম, তুলে যাব, কোনো না কোনো একদিন উত্তর পাব—সেই অপেক্ষায়।

রুবাইয়া মোরশেদ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক; বর্তমানে যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষক

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন