উজানের পাহাড়ী ঢলে তিস্তা নদীর পানি
বাড়ায় রংপুরে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপচরের মানুষ
হয়ে পড়েছেন পানিবন্দি। অনেকে গবাদি পশু নিয়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। ডুবে গেছে চরের আমন
ও শাক-সবজির খেত। এছাড়া ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যহত রয়েছে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা
যায়, উজানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে গতকাল শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সকাল থেকে
তিস্তা নদীর পানি বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করে।
আজ শনিবার সকাল ৯টায় ডালিয়া পয়েন্টে
বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ও কাউনিয়া পয়েন্টে ৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
এছাড়া উজানের ঢলে ধরলা নদী কুড়িগ্রাম পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৭ সেন্টিমিটার, তালুক শিমুলবাড়ি
পয়েন্টে ১ দশমিক ৪৮ সেন্টিমিটার, দুধকুমার নদী পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৪২ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র
নদ নুনখাওয়া পয়েন্টে ৫৪ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে ৫৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত
হয়েছে।
রংপুরে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায়
গঙ্গাচড়ার নোহালী ইউনিয়নের চর বাগডোহরা, চর নোহালী, বৈরাতি, কোলকোন্দ ইউনিয়নের চিলাখাল,
মটুকপুর, বিনবিনার চর, লহ্মীটারী ইউনিয়নের চর ইচলী, শংকরদহ, বাগেরহাট, জয়রাম ওঝা, চর
চল্লিশাসাল, গজঘণ্টা ইউনিয়নের ছালাপাক, জয়দেব, রাজবল্লভ, মর্ণেয়া ইউনিয়নের চর মর্ণেয়া,
নীলারপার, কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের ঢুষমারার চর, পাঞ্জরভাঙ্গা, চরগদাই, গোপিডাঙ্গা,
নিজপাড়া ও তালুক শাহবাজপুর, টেপামধুপুর ইউনিয়নের চরগোনাই, হরিচরণ শর্মা, বিশ্বনাথ চর,
আজমখাঁ চর, টাপুর চর, হয়বৎ খা, পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের হাগুড়িয়া হাশিম, শিবদেব
এলাকার কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এসব এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা
দিয়েছে।
গঙ্গাচড়া লহ্মীটারী ইউনিয়নের শংকরদহের
মোন্নাফ আলী বলেন, প্রায় এক মাস ধরে তিস্তায় পানি বাড়ছে। গতকাল আমাদের গ্রামে ঢুকে
পড়েছে। এখন ঘরের ভেতরে পানি।
জয়রাম ওঝার কৃষক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন,
নদীর পাড়ের মানুষের অনেক কষ্ট। সরকার নদীতে বাঁধ দেয় না। প্রতি বছর আমাদের আবাদি জমি
নষ্ট হয়, ঘরবাড়ি ভেঙে যায়। কিন্তু কেউ আমাদের কথা শোনে না।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী
প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, উত্তরাঞ্চল ও এর উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তরের
নদ-নদীর পানি বেড়েছে। তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া ও কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম
করছে। পানি বৃদ্ধির কারণে নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।