আইবিএ

ষাটের দশকে গড়ে ওঠা পশ্চিমা ধাঁচের এক অগ্রগামী প্রতিষ্ঠান

সাইফুল ইসলাম বাপ্পী

ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

দেশে আনুষ্ঠানিক একাডেমিক কার্যক্রম হিসেবে ব্যবসা প্রশাসন অধ্যয়নের সূচনা প্রায় ছয় দশক আগে। ১৯৬৬ সালে মার্কিন প্রতিষ্ঠান ফোর্ড ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় এবং ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি ব্লুমিংটনের সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়ে তোলা হয় ব্যবসা প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ)। 

মার্কিন সহযোগিতা ও অংশীদারত্বে গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠানটি শুরু থেকেই পাঠ্যসূচি ও শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে আসছে উত্তর আমেরিকান বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আদলে। বর্তমানে দেশের অর্থনীতির বড় একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করছেন আইবিএর প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। বিশেষজ্ঞদের অনেকেই আইবিএকে দেখছেন বাংলাদেশে পশ্চিমা ধাঁচে গড়ে তোলা এক শক্তিশালী ও অগ্রগামী প্রতিষ্ঠান হিসেবে। ব্যবসা পরিচালনা নিয়ে পাশ্চাত্যের একাডেমিক জগতের নিত্যনতুন পরিবর্তনগুলো খুব দ্রুতই আত্তীকরণ হচ্ছে আইবিএর শিক্ষাক্রমে। কঠোর নিয়মানুবর্তিতার মধ্য দিয়ে পাশ্চাত্যের আদলে প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসা পরিচালনা শিখছেন এখানকার শিক্ষার্থীরা। ছড়িয়ে পড়ছেন সরকারি-বেসরকারি ও বহুজাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে।

বেসরকারি ও বহুজাতিক করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের বড় একটি অংশ আইবিএর প্রাক্তন শিক্ষার্থী। স্বনামধন্য উদ্যোক্তাদের মধ্যেও অনেকেই পড়াশোনা করেছেন এখানে। এমনকি সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যেও কেউ কেউ আছেন আইবিএর প্রাক্তন শিক্ষার্থী। শীর্ষ পর্যায়ের কূটনীতিক থেকে শুরু করে আর্থিক খাতের নীতিনির্ধারকদের অনেকেই এখানকার শিক্ষার্থী ছিলেন। 

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম আইবিএর প্রাক্তন শিক্ষার্থী। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার পড়াশোনা করেছেন আইবিএ থেকে। দেশের জ্বালানি খাতের জায়ান্ট ও অন্যতম শীর্ষ কনগ্লোমারেট সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খানও এখানকার শিক্ষার্থী ছিলেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চেয়ারম্যান এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সিইও নাজমুল হক পাপন এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন আইবিএ থেকে। 

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বাংলাদেশের বর্তমান সিইও নাসের এজাজ বিজয় পড়াশোনা করেছেন আইবিএ থেকে। তার পূর্বসূরি আবরার এ আনোয়ার এখন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক মালয়েশিয়ার শীর্ষ নির্বাহীর পদে নিয়োজিত রয়েছেন। তিনিও আইবিএর প্রাক্তন শিক্ষার্থী।

সরকারের রাজস্ব আহরণের সবচেয়ে বড় প্রাতিষ্ঠানিক উৎস ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি (বিএটিবিসি)। কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেহজাদ মুনিম পড়াশোনা করেছেন আইবিএ থেকে। আইবিএর শিক্ষার্থীদের পেশাগত সাফল্যের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘একজন এন্ট্রি লেভেলের কর্মীকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে গড়ে তোলার কৃতিত্ব নিঃসন্দেহে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির। কিন্তু একটি স্বনামধন্য কোম্পানিতে ওই এন্ট্রি লেভেলে চাকরির নিশ্চয়তা দিচ্ছে আইবিএ। প্রতিষ্ঠানটি এখনো ভিত্তি স্তরের শিক্ষা প্রদান করছে। তবে মূল পার্থক্য হলো চার বছরের কঠোর জীবনে তৈরি হওয়া শিক্ষার্থীর আত্মবিশ্বাস, যা তাদেরকে ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্তুত করে। সামগ্রিক প্রেক্ষাপট অন্যদের তুলনায় আইবিএ শিক্ষার্থীদের বাস্তবতার সঙ্গে ভালোভাবে মানিয়ে নিতে সাহায্য করে।’ 

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ এবং ব্যাংক এশিয়ার সাবেক এমডি ও সিইও আরফান আলি ছিলেন আইবিএর শিক্ষার্থী। ব্যাংক খাতের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান এবং মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমানও এখানেই পড়াশোনা করেছেন। 

ষাটের দশক পর্যন্ত আইবিএ প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত দেশের ব্যবসা খাতের পেশাজীবী হিসেবে বাণিজ্য বিভাগের অধীনে ব্যবস্থাপনা, হিসাববিজ্ঞান ইত্যাদি বিভাগ থেকে আসা শিক্ষার্থীদেরই বোঝাত। এমন অবস্থায় দেশে ব্যবসার পরিচালনা এবং প্রশাসনিক ও নির্বাহী দায়িত্ব নির্বাহের জন্য বিশেষায়িত সমন্বিত কার্যক্রম চালুর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের তৎকালীন প্রধান অধ্যাপক এম সাইফুল্লাহ। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মসূচির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছিলেন তিনি। সেখানেই ঢাবিতে এমবিএ কার্যক্রম চালু করার বিষয়ে উৎসাহ পান তিনি। ওই সময় উপমহাদেশে ব্যবসা প্রশাসন পড়ানো হতো কেবল দুই জায়গায়। তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান ও ভারতে। বাংলাদেশ তথা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ব্যবসা প্রশাসন পড়ানোর কোনো সুযোগই ছিল না। ১৯৬৪ সালের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য ড. এম ওসমান গনির কাছে এক প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি। প্রস্তাবে সম্মত হয়ে উপাচার্য এম শফিউল্লাহর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে দেন। 

ব্যবসায় প্রশাসন শিক্ষার উৎপত্তিস্থল যুক্তরাষ্ট্র। অধ্যাপক এম সাইফুল্লাহ অনুধাবন করতে পেরেছিলেন, মার্কিন আদলে প্রতিষ্ঠান চালাতে হলে এর শিক্ষকদেরও যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রশিক্ষণ দিয়ে আনতে হবে। এছাড়া এ প্রক্রিয়ায় অর্থায়নের জন্য মার্কিন কোনো দাতা সংস্থারও সহযোগিতা প্রয়োজন। এছাড়া বিশেষায়িত এ শিক্ষাক্রমকে কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে হলে এর জন্য নতুন কোনো বিভাগ নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি ইনস্টিটিউট খুলতে হবে। এ প্রয়াসে অর্থায়নের জন্য ফোর্ড ফাউন্ডেশনকে রাজি করাতেও সক্ষম হন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৬৬ সালের সেপ্টেম্বরে যাত্রা করে দেশের (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের) প্রথম ব্যবসা প্রশাসন ইনস্টিটিউট। 

আইবিএ ১৯৭০ সালে চালু করে মাস্টার অব ফিলোসফি (এমফিল) ও ডক্টর অব ফিলোসফি (পিএইচডি)। মুক্তিযুদ্ধের পর প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম আবার চালু হয় ১৯৭৩ সালে। ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (বিবিএ) প্রোগ্রাম শুরু হয় ১৯৯৩ সালে। ২০০৭ সালে চালু হয় এক্সিকিউটিভ এমবিএ। আর ২০১৩ সালে চালু হয় ডিবিএ বা ডক্টর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন।

এসব কার্যক্রমের অধীনে শিক্ষা গ্রহণ শেষে আইবিএর শিক্ষার্থীরা ছড়িয়ে পড়েন দেশের সরকারি-বেসরকারি ও বহুজাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। তাদের বড় একটি অংশ ক্যারিয়ারে সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে আসীন হন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে। ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং এবিবির বর্তমান চেয়ারম্যান সেলিম আরএফ হুসেইন, আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠান শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ভাইস চেয়ারম্যান আরিফ খান, আল-আরাফাহ্‌ ইসলামী ব্যাংকের এমডি ও সিইও ফরমান আর চৌধুরী তাদের মধ্যে অন্যতম। 

আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠান আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের এমডি ও সিইও মোমিনুল ইসলামও আইবিএর একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী। কঠোর নিয়মানুবর্তিতাকেই আইবিএ শিক্ষার্থীদের সাফল্যের চাবিকাঠি হিসেবে দেখছেন তিনি। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘আইবিএর সঙ্গে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনা করলে সর্বপ্রথম যে বিষয়টি আসে তা হলো এখানে শৃঙ্খলা মানা হয় সবচেয়ে বেশি। আমরা যখন আইবিএর ছাত্র ছিলাম সে সময় রাজনৈতিক সংঘাতসহ নানা ধরনের বিশৃঙ্খলা ঘটেছে। তখন অন্যরা ক্লাস না করলেও আমরা ক্লাস করেছি। এমনকি ছুটির দিনেও পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। আমরা ছিলাম বিবিএর তৃতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী, যারা চার বছরের কোর্স তিন বছর নয় মাসের মধ্যে শেষ করে বের হয়েছে। যে কঠোর শৃঙ্খলার মানসিকতা আইবিএ তৈরি করেছে, সেটি বাংলাদেশের অন্যান্য জায়গা থেকে অনেক আলাদা। এটি আমাদের সবার ক্ষেত্রেই সত্যি। আরেকটি বিষয় হলো যখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছিল না, তখন সবচেয়ে মেধাবীরা ব্যবসায় শিক্ষা পড়ার জন্য আইবিএকে বেছে নিত। আমরা আমাদের নিজেরা নিজেদের কাছ থেকেও শিখেছি। আর একটা বিষয় হলো আইবিএ শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি করার চেয়ে মান বাড়ানোয় গুরুত্ব দিয়েছে। মানের পরিবর্তে সংখ্যা বাড়ানোয় কখনো গুরুত্ব দেয়নি। শিক্ষকরাও খুবই সচেতন। সব শিক্ষকের প্রায়োগিক জ্ঞানটা ছিল এবং ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে খুব ভালো যোগাযোগ ছিল। সেজন্য আমাদের প্রায়োগিক জ্ঞানের দিক থেকেও ভালো প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।’

কয়েক বছর আগে দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বিভিন্ন খাতের ১৩২টি কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহীদের ঘোষিত শিক্ষাগত যোগ্যতার তথ্য বিশ্লেষণ করে বণিক বার্তা। সে সময় পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পড়াশোনা সম্পন্ন করেছেন ৮৮ জন। এর মধ্যে ৫৭ জনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন, যাদের ১৫ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর প্রাক্তন শিক্ষার্থী। বর্তমানেও বিভিন্ন খাতে আইবিএর প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের এ অবস্থান আরো জোরালো হয়েছে বলে বিভিন্ন খাতের সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত করেছেন।

আইবিএর প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাই প্রতিষ্ঠানটিকে সবচেয়ে ভালো মূল্যায়ন করতে পারবেন বলে মনে করছেন প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান পরিচালক মোহাম্মদ এ মোমেন। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘আইবিএ আজকের পর্যায়ে আসতে অনেক বছর সময় লেগেছে। এখানকার সিস্টেম, নিয়োগ, পড়ালেখার পদ্ধতি, সিলেকশন সবকিছুর মধ্যে একটা রেভল্যুশনারি থিম রয়েছে। যার জন্য এটি ‘ব্যবসা প্রশাসন শিক্ষার একটি অগ্রগামী প্রতিষ্ঠান’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। আমার অনেক শিক্ষার্থী এসে বলে, স্যার, আমরা কোনো টাকাই দিইনি কিন্তু বিশ্বমানের শিক্ষা এখান থেকে পেয়েছি। আইবিএ কেমন তা জানতে হলে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানতে হবে।’

দেশের শীর্ষ উদ্যোক্তা, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক ব্যাংক বা দাতা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা হিসেবেও সুনাম অর্জন করেছেন আইবিএর প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। বার্জারের এমডি ও সিইও রূপালী চৌধুরী, বিশ্বব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট জাহিদ হোসেন, বাংলাদেশে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের কান্ট্রি ম্যানেজার মো. কামরুজ্জামান প্রমুখ আইবিএর প্রাক্তন শিক্ষার্থী। 

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অবদান রয়েছে আইবিএর শিক্ষার্থীদের। মুক্তিযুদ্ধের সময় আইবিএতে এমবিএর শিক্ষার্থী ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ খাজা নিজামুদ্দিন ভুঁইয়া বীর উত্তম। রণাঙ্গনের চৌকস নেতৃত্বের জন্য বেসামরিক নাগরিক হলেও সহযোদ্ধাদের অনেকে তাকে শুরুতে ভুল করে সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা মনে করতেন। পরে তিনি সাব-সেক্টর কমান্ডার হিসেবেও দায়িত্ব পেয়েছিলেন। সিলেটের কানাইঘাটে আটগ্রাম সড়কের কাছে এক সম্মুখ সমরে শহীদ হন তিনি। 

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রতিষ্ঠান থাকরাল ইনফরমেশন সিস্টেমসের সাবেক সিইও প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজামান মজুমদার বীর প্রতীক ও ক্র্যাক প্লাটুনের গেরিলা বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম আকবর বীর প্রতীকও ছিলেন আইবিএর প্রাক্তন শিক্ষার্থী। 

আইবিএর সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এখানকার নিয়মটা এমনভাবে সাজানো যাতে প্রত্যেককেই শিখতে হয়। এর বাইরে কোনো উপায় নেই। এখানে শিক্ষার্থীদের শেখানো নিয়মকে শ্রদ্ধা করতে ও নিয়ম মেনে এগিয়ে যেতে শেখানো হয়। তাদের মধ্যে এমন একটা বিশ্বাস গড়ে তোলা হয়, যাতে ছাত্ররা মনে করে পৃথিবীতে এমন কিছু নেই যেটা অসম্ভব। নিজেকে ওপরের জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য ক্রমাগত শেখাটাই একমাত্র উপায়। লিখিত নিয়ম তো সব জায়গায়ই থাকে। কিন্তু এর প্রতি আমার শ্রদ্ধা না থাকলে ব্যবস্থাটারই তো কোনো মূল্য থাকল না। নিয়মকে পালন নিয়ে আমাদের কোনো শিথিলতা নেই। আমরা কোনো কোটা রাখিনি, শিক্ষকদের সন্তানদের জন্যও কোনো কোটা নেই। কোর্সের শুরুতেই শিক্ষকদের একটা কোর্স আউটলাইন দিতে হয়। শিক্ষকদের এটা নিয়মিত আপগ্রেড করতে হয়। আপগ্রেড না করলে শিক্ষকেরই বদনাম হবে। শিক্ষার্থীরা পেছনে পড়ে যাবে। বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কারিকুলাম পরিবর্তন না করলে লোকজন শিক্ষককেই দোষারোপ করবে। এখানে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের মূল্যায়ন করে। যাত্রা শুরুর পর থেকেই পাবলিক ইউনিভার্সিটির মতো জায়গায় ছাত্রদের দ্বারা শিক্ষকদের মূল্যায়নের বিষয়টি আমরা সম্ভব করেছি। অতিথি শিক্ষক যখন আসেন, তখন তারাও আমাদের নিয়মে পড়ান। এখানে কাগজে নিয়ম যা থাকে তাকে আমরা শ্রদ্ধা করি, পরিপালন করি।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন