পর্যালোচনা

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যকার উদীয়মান নেতিবাচক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মাত্রা

মোহাম্মদ জমির

চীনা প্রেসিডেন্টের সাম্প্রতিক রাশিয়া সফর এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে আলোচনা বেইজিংকে পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার বিষয়কে তুলে ধরেছে, যার প্রভাব এখন এশিয়ার বাইরেও বিস্তৃত হয়েছে। বিশ্লেষক স্টিফেন কলিন্সন পর্যবেক্ষণ করেছেন, পুরো সফরটি শুধু যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি উভয় দেশের পারস্পরিক বৈরিতার দৃষ্টিকোণের প্রতিফলন ঘটছে বলে মনে হয় না, বরং ওয়াশিংটন মনোযোগ সহকারে পাশে থেকে দেখছে এবং ইউক্রেনের শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী রূপে চীনকে এক ধরনের অবজ্ঞা করেছে।

তবে এটি স্পষ্ট যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন একটি গুরুতর বৈদেশিক নীতিগত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে বলে মনে হচ্ছে, যেখানে কৌশলগত বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার পুনর্গঠনের মাধ্যমে বিদ্যমান বিশ্ব ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলার প্রচেষ্টা চলছে। কলিন্সনের মতে, উদীয়মানদের পরিকল্পনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নেতিবাচক উপাদানগুলোর আগাম পূর্বাভাস বুঝতে পেরেই, হোয়াইট হাউজ প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠকের সময় জনসংযোগের পাল্টা আক্রমণ চালিয়েছে। মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ও আধুনিক ট্যাংকবহর প্রত্যাশিত সময়ের আগেই মোতায়েন ও প্রেরণের ঘোষণা দেয়ার মাধ্যমে জেলেনস্কির সরকারের জন্য মার্কিনদের কয়েক বিলিয়ন ডলারের সমর্থনকে আরো জোরদার করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কৌশলগত যোগাযোগবিষয়ক সমন্বয়ক জন কিরবি সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে কৌশলগত বিষয়গুলো আরো সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি পর্যবেক্ষণ করে বলেন যে এ সুবিধার মেলবন্ধনটি, কোনো ধরনের পারস্পরিক প্রীতি থেকে নয়, বরং তাদের মধ্যে যেখানে পরস্পরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করছে, তা কেবলই যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বব্যাপী মার্কিন প্রভাবের বিরুদ্ধে পিছু হটানোর উদ্দেশ্যে করেছে। 

বেইজিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত গ্যারি লক বলেছেন, ‘‌পশ্চিমা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে চীন নিজেদের এক ধরনের নতুন শক্তি হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছে। চীন মনে করে, এ ক্লাবের তথাকথিত উপ-আইনে তাদের বক্তব্যও থাকা উচিত। বিশ্বের অধিকাংশ বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর আধিপত্যের ব্যতিক্রম অবস্থান তারা পোষণ করে। এটা মনে রাখা দরকার যে রাশিয়া-চীনের মধ্যকার কৌশলগত জোটের ধারণাটি মার্কিন নীতিনির্ধারকদের দীর্ঘদিন ধরে চিন্তামগ্ন রেখেছে। সত্তরের দশকে বেইজিংয়ে নিক্সন প্রশাসনের আংশিকভাবে উদ্বোধনকৃত কার্যক্রম মূলত চীন ও সোভিয়েত ইউনিয়নকে বিভক্তির লক্ষ্যে করা হয়েছিল। যদিও মার্কিন উদ্যোগের আগে থেকেই দুই কমিউনিস্ট মহারথীর মধ্যে আঞ্চলিক ও ঐতিহাসিকভাবে বিরোধ বিদ্যমান ছিল। স্নায়ুযুদ্ধের পর দুই দশক ধরে ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে পুতিনের কঠোর পদক্ষেপের আগ পর্যন্ত রাশিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অনেক কম হুমকিস্বরূপ দেখা হতো।

এ প্রেক্ষাপটে বর্তমানে প্রয়াত জর্জ কেনান মার্কিন স্নায়ুযুদ্ধের নীতি বিশেষজ্ঞের দেয়া মতামতটি স্মরণ করা প্রাসঙ্গিক হবে। তিনি উল্লেখ করেছিলেন, পূর্ব ইউরোপের ওয়ারশ প্যাক্ট পূর্ববর্তী দেশগুলোয় ন্যাটো সম্প্রসারণ হলে রাশিয়াকে বেইজিংয়ের হাতে ঠেলে দেয়ার মতো হতে পারে। 

সব বিতর্কিত অনুমান থাকা সত্ত্বেও চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেছেন, চীন ইউক্রেন সমস্যার রাজনৈতিক নিষ্পত্তির জন্য একটি গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে থাকবে যা মূলত যুদ্ধবিরতি এবং ঐক্যের আহ্বান জানায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য এ পরিকল্পনার বিষয়ে সন্দেহের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এ প্রস্তাবগুলো মস্কোকে তার অঞ্চলভিত্তিক অর্জন শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে। তবুও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি চীনের প্রস্তাবের প্রতি ইতিবাচকভাবে উন্মুক্ত রয়েছেন, তবে যেকোনো চুক্তি দখলকৃত ইউক্রেনীয় অঞ্চল থেকে রুশ বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের ওপর নির্ভর করবে।

এদিকে এএফপির খবরে বলা হয়েছে, চীন রাশিয়াকে ‘‌প্রাণঘাতী সহায়তা’ দিয়েছে কিনা সে বিষয়ক সিনেট কমিটিতে এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, ‘‌আমরা তাদের সেই সীমা অতিক্রম করতে দেখিনি।’

তবুও চীন, রাশিয়া ও ইউক্রেন সম্পর্কের উদীয়মান বিভ্রান্তি মার্কিন ফার্ম এবং মার্কিন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোয় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে।

বিশ্লেষক জোনাথন জোসেফ বলেছেন, চীনে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট খুব উদ্বিগ্ন, কারণ বিশ্বের দুটি বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যকার উত্তেজনা বাড়তে থাকায়, এ প্রতিদ্বন্দ্বিতা ব্যবসাকে খুব চ্যালেঞ্জিং করে তুলছে। এটিও ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সরকারগুলো ইউক্রেন থেকে শুরু করে নভেল করোনাভাইরাস ও তাইওয়ান, টিকটক এবং সেমিকন্ডাক্টর পর্যন্ত ক্রমবর্ধমান ইস্যুতে স্পষ্টতই দ্বিমত পোষণ করছে।

যার ফলে অ্যামচ্যাম চীনের ৯০০ জনেরও বেশি সদস্যের মধ্যে পরিচালিত সর্বশেষ বার্ষিক জরিপে দেখা গেছে যে প্রথমবারের মতো ‘‌সংখ্যাগরিষ্ঠ ৫৫ শতাংশ চীনকে আর শীর্ষ তিন বিনিয়োগ অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করে না অর্থাৎ এমন একটি জায়গা মনে করে না যেখানে তাদের ব্যবসা বাড়ানোর জন্য অর্থ ব্যয় করা উচিত’। জোসেফ আরো বলেছেন, চীনে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অনিশ্চয়তাকে তাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন এমন লোকের সংখ্যা গত বছরে ১০ শতাংশ বেড়ে ৬৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। একই সময় যারা মনে করেন যে চীন বিদেশী কোম্পানিকে কম স্বাগত জানিয়েছে তাদের সংখ্যা ৪৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। যদিও এটি একটি বিতর্কিত অনুমান বলে মনে হচ্ছে। 

এটা বোঝা দরকার যে বাণিজ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মূল কেন্দ্রবিন্দু। অ্যামচ্যাম চায়নার সদস্যদের মধ্যে রয়েছে নাইকি, ইন্টেল, ফাইজার ও কোকা-কোলার মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে সফল কোম্পানিগুলো। ১৯৭৮ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট দেং জিয়াওপিং দেশটিতে বিদেশী কোম্পানির জন্য উন্মুক্ত করার পর কোকা-কোলা প্রথম মার্কিন ভোক্তা ব্যবসা ছিল যা কমিউনিস্ট চীনে তার পণ্য বিক্রি শুরু করে। ১৯৭৯ সালের জানুয়ারিতে হংকং থেকে চীনের মূল ভূখণ্ডে কোমল পানীয়ের প্রথম চালান আসার পর থেকে কোকা-কোলা চীনে মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য অগ্রদূত হিসেবে কাজ করেছে। 

এছাড়া অ্যামচ্যাম চায়না কর্তৃপক্ষ পর্যবেক্ষণ করেছে যে মার্কিন কোম্পানিগুলো কভিডের তিন বছর পর ক্লান্ত হয়ে পড়েছে, ভ্রমণ আরো কঠিন হয়ে উঠছে, ক্রমবর্ধমান শ্রম ব্যয়, নির্বাহীদের চীনে দায়িত্বে অনিচ্ছা, রাজনৈতিক চাপ এবং ব্যবসা করার জন্য চীন কম অনুমানযোগ্য এক জায়গা হয়ে উঠছে। তবুও মনে রাখা উচিত যে এসব অসুবিধা থাকা সত্ত্বেও পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে যে দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য গত বছর ৬৯০ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করেছে। এটাও প্রতিফলিত করে যে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক প্যারাডাইম এ দুই দেশের অর্থনৈতিক মাত্রা দিয়ে কতটা প্রভাবিত।

কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশ্বিক বাণিজ্যনীতির অধ্যাপক ঈশ্বর প্রসাদ যিনি কিনা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের চীন বিভাগের সাবেক প্রধান ছিলেন তিনিও এ দিকটি বিশেষভাবে তুলে ধরেছেন। তার আরো পর্যবেক্ষণ হচ্ছে যে সত্যিকার অর্থে চীনের প্রচুর পণ্য প্রয়োজন নেই, বিশেষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রযুক্তিপণ্যেরও দরকার নেই, কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রচুর কোম্পানি রয়েছে যারা চীনের মাধ্যমে তাদের সরবরাহ চেইন পরিচালনা করে আসছে। এ দুই দেশ কেবল সরবরাহ চেইনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, এরা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বৈশ্বিক বাণিজ্যের ভিত্তি এ দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের ওপর নির্ভর করে। এ প্রেক্ষাপটে মনে রাখতে হবে যে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) বৈশ্বিক বাণিজ্য বিধি সমুন্নত রেখে চুক্তির সঠিক মেয়াদের মধ্যে এ ভাবটি বজায় রাখার কথা। 

তবে এ দৃশ্যটি অবশ্য কাঙ্ক্ষিত নির্দেশ অনুযায়ী অনুসরণ করা হয়নি। গত ডিসেম্বরে মার্কিন প্রশাসন বাণিজ্যযুদ্ধের মধ্যে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত শুল্কের বিষয়ে চীনের পক্ষে যাওয়া দুটি সিদ্ধান্ত জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করেছিল। যুক্তরাষ্ট্র ডব্লিউটিওর সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করার সময় ইঙ্গিত দিয়েছিল যে জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যুতে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যার ওপর ডব্লিউটিওর কিছু করার কোনো অধিকার নেই।

এ সন্ধিক্ষণে পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিকসের একটি পর্যবেক্ষণের কথা উল্লেখ করা উপযুক্ত হবে। তারা উল্লেখ করেছে যে সামগ্রিকভাবে, চীন থেকে মার্কিন আমদানির ৬৬ দশমিক ৪ শতাংশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৫৮ দশমিক ৩ শতাংশ চীনা আমদানি শুল্কের অধীন রয়েছে, উভয় পক্ষই এটি হ্রাস করবে এমন কোনো লক্ষণ নেই। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক প্রসাদ সতর্ক করে বলেছেন, বৈশ্বিক বাণিজ্যে চীনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়মভিত্তিক বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থার অবনতি ঘটাতে পারে।

কৌশলগত বিশ্লেষকরা আরো দেখছেন যে মার্কিন-চীন সম্পর্কের অবনতির ফলে মার্কিন কোম্পানিগুলো চীনের বাইরে তাদের সরবরাহ চেইনকে সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করতে পারে। চীনে বিপুলসংখ্যক আইফোন তৈরি করা বিশ্বের অন্যতম লাভজনক কোম্পানি অ্যাপল এখন ভারতসহ অন্যান্য দেশে তাদের পণ্য বেশি করে উৎপাদনের কথা ভাবতে শুরু করছে বলে গণমাধ্যমে এসেছে।

হ্যাং সেং ব্যাংক চায়নার সাংহাইভিত্তিক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড্যান ওয়াংয়ের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী পশ্চিমা কোম্পানিগুলো চীন থেকে সরবরাহ চেইন সরিয়ে নিলেও তারা চীনের ওপর পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল থাকবে। অন্যান্য দেশ এখনো বিভিন্ন উপাদানের জন্য চীনের ওপর নির্ভর করবে, বিশেষত সবুজ এনার্জি, চিকিৎসা প্রযুক্তি এবং ইলেকট্রনিকসের মতো শিল্পগুলো। ওয়াং আরো বলেন, বেইজিং এখনো চায় মার্কিন কোম্পানিগুলো চীনে বিনিয়োগ করুক এবং আমি বিশ্বাস করি না যে এ মনোভাব শিগগিরই পরিবর্তন হবে। অ্যামচ্যাম চায়নার কর্মকর্তারা আরো ইঙ্গিত দিয়েছেন যে দৈত্যাকার চীনা ভোক্তা বাজারের নিজস্ব এক মাত্রা রয়েছে এবং এ কারণেই ম্যাকডোনাল্ডস, স্টারবাকস এবং রাল্ফ লরেনের মতো কিছু মার্কিন কোম্পানি পাইপলাইনে তাদের নিজস্ব বড় চীনা সম্প্রসারণ পরিকল্পনা নিয়ে থাকবে। 

যা-ই হোক, এ বিবর্তিত পরিস্থিতি প্রযুক্তিকেন্দ্রিক দুই দেশের মধ্যে জাতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগ দিয়েও প্রভাবিত হচ্ছে। সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনসহ মার্কিন প্রযুক্তিতে চীনের প্রবেশাধিকার ঠেকাতে বাইডেন প্রশাসন নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এটি বেইজিংয়ের পক্ষে খুব ভালো হয়নি, যারা এ ধরনের পদক্ষেপগুলোকে তাদের দেশের উন্নয়নের জন্য চ্যালেঞ্জ বিবেচনা করছে। মার্কিন চাপের কারণে চীনা টেলিকম বৃহৎ কোম্পানি হুয়াওয়েকে অনেক দেশে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে বলে চীন বেশ অসন্তুষ্ট, এসবের মধ্যে জার্মানির সর্বশেষ পদক্ষেপ বিবেচনায় নিচ্ছে। এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রতিষ্ঠান টিকটককেও যুক্তরাষ্ট্রে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার হুমকি দেয়া হয়েছে, পাশাপাশি যুক্তরাজ্যেও নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হচ্ছে। তবুও আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে ক্রমবর্ধমান শত্রুতা কেবল অনিশ্চয়তা তৈরি করতে পারে—এরই মধ্যে ভঙ্গুর বিশ্ব অর্থনীতির এটা প্রয়োজন নয়।

মোহাম্মদ জমির: সাবেক রাষ্ট্রদূত; পররাষ্ট্র, তথ্য অধিকার ও সুশাসনসংক্রান্ত বিষয়াদির বিশ্লেষক

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন