নয়াপল্টনের সমাবেশে মির্জা ফখরুল

এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর নয়াপল্টনে গতকাল ঢাকা বিভাগের সমাবেশে বিএনপির নেতাকর্মীরা ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

বিএনপি সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বলে সাফ জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অনির্বাচিত সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না উল্লেখ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন তিনি। দাবি আদায়ে ১১ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে গণপদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেন মির্জা ফখরুল।

গতকাল রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা বিভাগের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে সারা দেশে ১০টি সাংগঠনিক বিভাগীয় সদরে পঞ্চম ধাপের কর্মসূচি পালন করল বিএনপি সমমনা দল এবং জোটগুলো।

মির্জা ফখরুল বলেন, এটা আমাদের অস্তিত্ব সার্বভৌমত্ব রক্ষার আন্দোলন। সে লক্ষ্যেই আমরা ১০ দফা ২৭ দফা প্রণয়ন করেছি। এর মধ্য দিয়েই দেশের মানুষ প্রমাণ করেছে যে তারা একটি দাবিতে আন্দোলন করছে। সেটা হলো অবৈধ ভোটারবিহীন সরকারের পদত্যাগ। আমরা বলে আসছি, অনির্বাচিত সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না। আমরা সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাব না। আওয়ামী লীগ সরকার হিরো আলমের কাছেও অসহায়। রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে হিরো আলমকে পরাজিত করা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন ব্যক্তিকে জেতাতে নিজেদের প্রার্থীকে গুম করা হয়েছে।

সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তারা গ্যাস বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। একদিকে ঋণ করছে, অন্যদিকে জনগণের পকেট কাটছে। দেশ এখন লুটেরাদের কবলে পড়েছে, যার নেতৃত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। তারা যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই গণতন্ত্র হত্যা করেছে। দেশকে পেছনের দিকে ঠেলে দিয়েছে। আজও আমাদের নেতাকর্মীদের নামে মামলা দিয়ে জেলে নিচ্ছে। কিন্তু আমাদের দমাতে পারবে না। খালেদা জিয়াসহ সব নেতাকর্মীর মুক্তির দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।

জীবনের বিনিময়ে আন্দোলন সফল করার ঘোষণা দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন খেলা হবে? কিন্তু এখানে রেফারি কে? যারা আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে তারা রেফারি হতে পারে না। তাই বলছি, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। না হলে দেশের মানুষ আপনাদের ছাড়বে না।

সমাবেশে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, যাকে আমরা ছুড়ে ফেলে দিয়েছি আপনারা সেটা সোনার প্লেটে তুলে নিয়েছেন। এটার প্রমাণ ব্রাহ্মণবাড়িয়া। মার্চের মধ্যে আরেকটি যুদ্ধ হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবার মার্চে গণতন্ত্র উদ্ধারে আরেকটা লড়াই হবে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ।

গণমিছিল, গণ-অবস্থান বিক্ষোভ সমাবেশের পর যুগপৎ আন্দোলনের পঞ্চম কর্মসূচি এটি। সমাবেশে অংশ নিতে এদিন সকালেই বিএনপি নেতাকর্মী সমর্থকরা নয়াপল্টনে জড়ো হতে শুরু করেন। বেলা ২টায় পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সমাবেশ শুরু হয়। ক্ষমতাসীন দলের উসকানিমূলক পাল্টা কর্মসূচির প্রতিবাদ, বিদ্যুৎ-গ্যাসসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানো, সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে সমাবেশ করছে বিএনপি এবং তাদের সমমনা দল জোট।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন