যুক্তরাষ্ট্রে তদন্তের মুখে পড়তে পারেন ইলোন মাস্ক

বণিক বার্তা ডেস্ক

টেসলা প্রধান ইলোন মাস্ক ছবি: রয়টার্স

জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলোন মাস্কের ব্যবসায়িক উদ্যোগগুলো নিয়ে তদন্তের কথা ভাবছে বাইডেন প্রশাসন। স্পেসএক্সের স্টারলিংক স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক আলোচিত টুইটার অধিগ্রহণ চুক্তিও এর মধ্যে রয়েছে বলে ব্লুমবার্গ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন সূত্রে জানা গিয়েছে। খবর ফোর্বস।

প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, সম্প্রতি ইউক্রেনে স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করার হুমকি দিয়েছিলেন ইলোন। পাশাপাশি টুইটে রাশিয়াপন্থী বক্তব্যও দিয়েছেন। যে কারণে ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা অনেকটাই নড়েচড়ে বসেছেন। টুইটার অধিগ্রহণে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে জোট বাঁধায় চুক্তি নিয়েও শঙ্কিত দেশটির প্রশাসন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওয়াশিংটনের একটি সূত্র জানায়, মাস্ক আদৌ জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি কিনা, সে আলোচনা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। মাস্কের ব্যবসায়িক উদ্যোগগুলো নিয়ে তদন্তে নামার কোনো সুযোগ আদৌ আছে কিনা, সে বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের সরকার গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কর্মকর্তারা বিবেচনা করে দেখছেন।

সূত্রের তথ্যানুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের কমিটি অব ফরেন ইনভেস্টমেন্ট ইন দি ইউনাইটেড স্টেটসের (সিএফআইইউএস) মাধ্যমে মাস্ক তার ব্যবসায়িক উদ্যোগগুলোকে তদন্তের অধীনে আনা হতে পারে। বিদেশী কেউ যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান কেনার চেষ্টা করলে সে বিষয়ে তদন্ত চালানোর অধিকার রয়েছে সিএফআইইউএসের। সংস্থাটি তদন্তে নামলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং গোয়েন্দা কর্মকর্তারাও সম্পৃক্ত থাকবেন। এর মাধ্যমে মাস্কের ব্যবসা নিয়ে বাইডেন প্রশাসন তদন্ত চালানোর আইনি সুযোগ পাবে।

টুইটার কিনে নিতে মাস্ক বিনিয়োগকারীদের যে জোট গঠন করেছেন, তাতে সৌদি রাজপুত্র আলওয়ালিদ বিন তালাল, চীনা কোম্পানি বাইন্যান্স হোল্ডিংস লিমিটেড এবং কাতারের জাতীয় বিনিয়োগ তহবিলের উপস্থিতি সিএফআইইউএসের তদন্তের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তাদের মন্তব্য জানার চেষ্টা করেছিল তারা। কিন্তু কোনো লেনদেন নিয়ে তদন্ত চলছে নাকি চলছে না, সে বিষয়ে সিএফআইইউএস কোনো মন্তব্য করে না বলে ট্রেজারি বিভাগের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন। অক্টোবর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের চার শর্ত শান্তি পরিকল্পনা হিসেবে টুইট করে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েন টেসলা প্রধান যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ধনী ইলোন। তার টুইটে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপের সরকারি কর্মকর্তারা খেপলেও রাশিয়ার প্রতিনিধিরা প্রশংসা করেছেন। টুইট দেয়ার পর পরই প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে ইলোন মাস্কের গোপন যোগাযোগ হয়েছে বলে গুঞ্জন ওঠে। সিএনএনে প্রকাশিত অন্য এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনে স্টারলিংকের খরচ চালাতে আর রাজি নয় স্পেসএক্স। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে স্পেসএক্সের পাঠানো নথি বিশ্লেষণ করে সিএনএন জানায়, ইউক্রেনে সেবা চালু রাখার আর্থিক সক্ষমতা নেই বলে দাবি করেছে মাস্কের প্রতিষ্ঠানটি।

যুদ্ধের শুরুতেই ইউক্রেনে স্টারলিংকের ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করে প্রশংসার পাত্র হয়েছিলেন মাস্ক। কিন্তু সিএনএনের প্রতিবেদন বলছে, ইউক্রেনে ব্যবহূত প্রায় ২০ হাজার স্টারলিংক টার্মিনালের মধ্যে কেবল ১৫ শতাংশ অনুদান হিসেবে দিয়েছে স্পেসএক্স। বাকি ৮৫ শতাংশ তৃতীয় পক্ষ থেকে এসেছে। প্রসঙ্গে মাস্কের মন্তব্য জানতে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন