গোল্ডম্যান স্যাকসের পূর্বাভাস

২০২৩ সালে বড় ধরনের মন্দার কবলে পড়বে যুক্তরাজ্য

বণিক বার্তা ডেস্ক

সুদের হার ও মূল্যস্ফীতি পূর্বানুমানের তুলনায় কম হলেও ২০২৩ -এ মন্দা এড়ানো কঠিন হবে যুক্তরাজ্যের ছবি: দ্য গার্ডিয়ান

আগামী বছর প্রত্যাশার তুলনায় বড় ধরনের মন্দার সম্মুখীন হতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য। এমনই পূর্বাভাস দিয়েছে ওয়াল স্ট্রিটভিত্তিক ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকস। মার্কিন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানটির সংশোধিত প্রাক্কলনে বলা হয়, সুদের হার মূল্যস্ফীতি পূর্বানুমানের তুলনায় কম হলেও মন্দা এড়াতে পারবে না দেশটি। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

নিউইয়র্কভিত্তিক ব্যাংকটি তার সর্বশেষ পূর্বাভাসে জানায়, যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি ২০২৩ সালে শূন্য দশমিক শতাংশ নয়, বরং শতাংশ সংকুচিত হতে পারে, যা আগের অনুমানের তুলনায় বেশি। এর আগে ব্যাংকটির পক্ষ থেকে শূন্য দশমিক শতাংশ সংকোচনের আভাস দেয়া হয়।

গোল্ডম্যান স্যাকসের পক্ষ থেকে বলা হয়, করপোরেট করের পরিমাণ ২৫ শতাংশ বৃদ্ধির ঘোষণাএরপর প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের তা থেকে সরে দাঁড়ানো, যা ছিল তার অন্যতম নির্বাচনী প্রচারণার প্রতিশ্রুতিসব মিলিয়ে ব্রিটেনের চলমান অস্থির রাজনৈতিক আবহ এখানে অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় ব্রিটেনের দুর্বল প্রবৃদ্ধির গতি, উল্লেখযোগ্যভাবে কঠোর আর্থিক অবস্থান এবং এপ্রিল থেকে উচ্চ করপোরেট করসব মিলিয়ে যুক্তরাজ্য ঘিরে আমরা আমাদের প্রবৃদ্ধির দৃষ্টিভঙ্গিকে কমিয়েছি এবং আগামীতে বড় ধরনের মন্দার আশঙ্কা করছি।

বিশ্লেষকরা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের করপোরেট ট্যাক্স পরিকল্পনা থেকে সরে আসা মূলত সুদের হারের কঠোর বৃদ্ধি প্রসঙ্গে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের (বিওই) ওপর চাপ কমাতে কিছুটা সাহায্য করতে পারে। গোল্ডম্যান বিশ্লেষকরা অবশ্য মনে করছেন, যুক্তরাজ্যের সুদের হার এখন বৃদ্ধি পেয়ে দশমিক ৭৫ শতাংশ হবে, যা আগের শতাংশ থেকে সামান্য কম।

অডিট প্রতিষ্ঠান ডেলয়েটের একটি পৃথক ব্যবসায়িক সমীক্ষা অনুসারে, যুক্তরাজ্যের কোম্পানিগুলো মনে করে সুদের হার বৃদ্ধি পরের বছর বিক্রি মন্দার সঙ্গে মানিয়ে নেয়াটাকে আরো কঠিন করে তুলবে।

ব্রিটেনের কয়েকটি বড় ফার্মের আর্থিক পরিচালক বলেছেন, ঋণগ্রহণ ২০১০ সালের পর যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি ব্যয়বহুল ছিল, যা ন্যায়সংগত বিনিয়োগকে কঠিন করে তোলে।

ডেলয়েটের জরিপে দেখা গেছে, বেশির ভাগ অর্থ পরিচালক পরবর্তী ১২ মাসে রাজস্ব হ্রাসের আশা করেছিলেন। ফলে খরচ কমানো নগদ বহিঃপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা এখন তাদের শীর্ষ দুটি অগ্রাধিকারে পরিণত হয়েছে।

জরিপটি পরিচালিত হয়েছিল গত শুক্রবার কোয়াসি কোয়ার্টেংকে বরখাস্ত করার আগে। প্রধানমন্ত্রীও গত মাসের মিনি বাজেটের বেশির ভাগ অংশ ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তবে পর্যায়ে কোম্পানিগুলো মন্দার প্রভাব কমাতে খরচ কমানোর দিকেই মনোনিবেশ করবে।

ডেলয়েটের প্রধান অর্থনীতিবিদ ইয়ান স্টুয়ার্ট বলেছেন, বিওইর সুদহার বৃদ্ধির পরে ঋণগ্রহণের ব্যয় বেড়ে যাওয়া মূলত সংস্থাগুলোকে তাদের বিনিয়োগের অর্থায়নের গতিপথ পরিবর্তনে বাধ্য করছে। সহজ ঋণ শর্তের ১২ বছরের মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। করপোরেটরা তাই ঋণের প্রাপ্যতা খরচ সম্পর্কিত একটি পরিবর্তনের দিকে তাকিয়ে আছে।

দায়িত্ব পেয়ে গত ৫০ বছরের মধ্যে কর কমানোর সবচেয়ে বড় প্যাকেজ উন্মোচন করেন বরখাস্ত অর্থমন্ত্রী কোয়ার্টেং। আয়কর বাড়ি কেনার ওপর স্ট্যাম্প শুল্ক কাটার পাশাপাশি ব্যবসায়িক করের পরিকল্পিত বৃদ্ধিও বাতিল করেন তিনি। করছাড়ের ঘোষণার পরেই বিশ্ববাজারে ঐতিহাসিকভাবে কমে যায় পাউন্ডের দাম।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন