বাংলাদেশের অর্থনীতি ও মানুষের জীবিকা নির্বাহের অন্যতম চালিকাশক্তি হচ্ছে কৃষি। এটি খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান, শিল্পের কাঁচামাল জোগান ও রফতানি আয় বৃদ্ধিতে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিগত ২০২২-২৩ সালে চালের উৎপাদন ছিল ৪ কোটি ১৫ লাখ ৬১ হাজার টন, যা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে।| ২০০৮-০৯ সালে মোট খাদ্যশস্য (চাল, গম, ভুট্টা) উৎপাদন ছিল ৩ কোটি ২৮ লাখ ৯৬ হাজার টন, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা বেড়ে ৪ কোটি ৬৬ লাখ ৮৮ হাজার টন হয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বে ধান উৎপাদনে তৃতীয়, সবজি ও পেঁয়াজ উৎপাদনে তৃতীয়, পাট উৎপাদনে দ্বিতীয়, চা উৎপাদনে চতুর্থ এবং আলু ও আম উৎপাদনে সপ্তম স্থানে রয়েছে। দেশী-বিদেশী ফল চাষেও অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে। কফি, কাজুবাদাম, গোলমরিচ, মাল্টা, ড্রাগন ফলসহ অপ্রচলিত ফসলের চাষাবাদে কৃষকরা উৎসাহিত হচ্ছেন।
সার, বীজ, কীটনাশক ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ বিতরণের পাশাপাশি কৃষি উপকরণের দাম কমানো ও তা কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে ২০০৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত সার, বিদ্যুৎ ইত্যাদি খাতে মোট ১ লাখ ২৯ হাজার কোটি টাকার বেশি ভর্তুকি দিয়েছে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে কৃষিকে আধুনিকায়ন করার কাজ চলছে। কৃষিযন্ত্রের ক্রয়মূল্যের ওপর ৫০-৭০ শতাংশ ভর্তুকি দেয়ার পাশাপাশি কম্বাইন হারভেস্টার, রিপার, সিডার, পাওয়ার টিলারসহ কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে। ৩ হাজার কোটি টাকার কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের বাস্তবায়ন চলমান আছে।
ড. ফা হ আনসারী দায়িত্ব পালন করছেন এসিআই এগ্রি বিজনেসস্ ডিভিশনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে। এছাড়াও তিনি এসিআই এগ্রোলিংক লিমিটেড, এসিআই মোটরস লিমিটেড ও প্রিমিয়াফ্লেক্স প্লাস্টিকস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) দায়িত্বে রয়েছেন। কৃষিসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। দেশের কৃষি খাতের বিভিন্ন দিক ও আসন্ন বাজেট নিয়ে সম্প্রতি তিনি বণিক বার্তার সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ইয়াহইয়া নকিব
আগামী
বাজেটে কৃষি খাত উন্নয়নে কী পদক্ষেপের
প্রত্যাশা করছেন?
আমাদের
দেশে কৃষিতে যেসব বাজেট হয়
সেগুলো খুবি ট্র্যাডিশনাল। সারে ভতুর্কি, ইলেকট্রিসিটি থেকে সাশ্রয় এবং আমরা দেখতে পাই এগুলো কৃষি যন্ত্রপাতি থেকেইআসে।
এছাড়া ২০ কোটি টাকার একটি প্রজেক্ট আছে সেটির কন্ট্রিবিউশন।
যদিও এর বাইরে খুব বেশি কিছু আমরা দেখি না। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সারে ভর্তুকি
দেয়ার মানে হলো আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। উৎপাদন বাড়ালে যে
সুবিধা হবে তাহলো আমাদের এক্সট্রা অ্যাডিশনাল
চাহিদা তা উৎপাদন থেকে পাওয়া যাবে। মূলত ধানকেন্দ্রিকই আমাদের এসব আলোচনা। আমি মনেকরি আমাদের এ বিষয়গুলো থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অনেক দিন
ধরেই বলছি। কিছু ক্ষেত্রে লাভ হয়েছে, উৎপাদন বেড়েছে। কিন্তু অন্যক্ষেত্রে আমাদের
খেয়াল করতে হবে। মূলত আমাদের দেখতে হবে পোস্ট-হারভেস্টে যে
লস হচ্ছে এবং দাম স্থিতিশীল না থাকা, অনেক ক্ষেত্রেই কখনো ভোক্তা বেশি দামে কিনছে,
কখনো কম। এ বিষয়গুলোকে আমাদের সার্ভে করতে হবে। কারণঅর্থনৈতিকভাবে আমরা অনেক
এগিয়েছি,আমাদের প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এদেশের মানুষ এখন খেয়েপরে
বাঁচতে পারছে। ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। এ অবস্থান থেকে বাজার বাড়াতে হলে আমাদের পুরোপুরিভাবে এগ্রিকালচার ভ্যালু পরিবর্তন করতে হবে। একদম
ব্রিডিং থেকে শুরু করে ইনোভেশন, প্র্যাকটিসেসের মধ্যে আবার,
ইনপুট, কমিউনিকেশন এবং মেকানাইজেশন আছে এ কাজগুলো আমাদের
করতে হবে। হারভেস্ট হলে এটিকে সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা করতে
হবে। সংরক্ষণের সুবিধা হলো যখন ভালো দাম পাওয়া যাবে তখন
বিক্রি করতে পারবে এবং পচনশীল নয় বলে ফেলে দিতে হবে না। এভাবে সাশ্রয় করার সুবিধা
রয়েছে। এভাবে আমাদের যে ১৫-২০ শতাংশফসল নষ্ট হয়ে যায় সেটি
আমরা রাখতে পারব। এরপর প্রসেস করার জন্য আমাদের প্রধানমন্ত্রী একটি ইনভেস্ট করেছেন
এবং এটি এগিয়েছে। পাশাপাশি অনেক বিদেশী কোম্পানিকে আমাদের আনতে হবে এবং
কো-ব্র্যান্ডিং করে দেশের বাইরে এক্সপোর্ট করতে হবে। ফরোয়ার্ড
লিংকে গিয়ে আমরা দেখতে পাচ্ছি আমাদের দেশে কিন্তু ফরমাল রিটেইলেশন কিন্তু মোটামুটি শুরু হয়েছে। এখন মোট যে কয়টি
রিটেইল মার্কেট মাত্র ২ শতাংশ আছে এটিকে অন্তত ১০ শতাংশে
নিতে হবে। শহরে যেসব জায়গায় খুব দ্রুত
ক্রয়-বিক্রয় হয়, আমাদের তৈরি পণ্য নির্দিষ্ট বাজারে থাকবে এবং
আমাদের খামারিদের বিক্রির সুযোগ থাকবে। তারাও ভালো দাম পাবে আর ক্রেতাও কিনে খেতে
পারবে। এক্ষেত্রে বাজেটকে ডাইভার্ট করতে হবে। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আমাদের
আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে জলবায়ুর পরিবর্তন। এ বছরই আমরা লক্ষ করেছি মাছ
পানিতে ভেসে উঠছে। ওয়েদার গরম হয়ে আছে। এত বছর আমরা বলেছি অতি গভীর পুকুর করলে
সূর্যের আলো গভীরে যেতে পারে না। মাছ বাঁচতে পারে না। এখন দেখছি পুকুর কম গভীর
করার ফলে পানি উত্তপ্ত হয়ে মাছ মরে যাচ্ছে।এ জায়গাগুলোয় আমাদের কাজ করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের
সঙ্গে আমাদের সবকিছুর পরিবর্তন আনতে হবে। বিভিন্ন জাতের মাছ
লাগবে, কম খায় কিন্তু ওজন বেশি। এরকম অনেক জাতের প্রয়োজন আমাদের মাছে, মুরগিতে,
গরুতে সর্বক্ষেত্রে। এজন্য প্রাইভেট সেক্টরে সক্ষমতা বাড়াতে হবে। সরকারিভাবেও
হচ্ছেই। ট্র্যাডিশনালভাবে সরকার যা রিসার্চ আসছে তাই করছে।
কিন্তু মার্কেটে যদি আমরা দেখি যেসব পণ্য বিক্রি হয় তার সবই এসেছে প্রাইভেট সেক্টর থেকে। তাহলে এ প্রাইভেট
সেক্টরগুলো পাচ্ছে কোথায়? বেশির ভাগই আমদানীকৃত। এ আমদানীকৃত পণ্যগুলো গ্লোবাল মার্কেটকে কেন্দ্র করেই করা
হয়। সাধারণতবাংলাদেশের মার্কেটকে ঘিরে হয় না, যার কারণে আমাদের অনেক সময় চলে যায়। অনেকগুলো জাত নিয়ে এলাম, যেটি ভালো করছে তার উৎপাদন করছি। এক্ষেত্রে আমি মনে করি প্রাইভেট
সেক্টরের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য স্থানীয়ভাবে সমর্থন দিতে হবে। যেন একটি
প্রাইভেট কোম্পানি রিসার্চ শুরু করতে পারে। রিসার্চের ফলে যখন ধারণক্ষমতা বাড়বে তখন আমাদের ক্ষতি ছিল তা পুষিয়ে নিতে
আমরা স্থানীয়ভাবে প্রস্তুত থাকব।
কৃষি
যন্ত্রপাতি ব্যবহারে স্থানীয় কাঁচামাল কেনার
ক্ষেত্রে টিডিএস ১শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব, এটির কারণ কী?
আমাদের
দেশে কৃষি যন্ত্রপাতিগুলো কেবল কৃষিকাজেই ব্যবহার হয়। এগুলো খামারে ব্যবহার হয় না।
তবে আমি মনে করি কৃষি যন্ত্রপাতিতেকোনো ধরনের ট্যাক্স থাকা উচিত নয়, যতদিন
দেশ স্বনির্ভর হতে না পারছে।
কৃষক,
ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামারিদের কাছ থেকে কাঁচামাল কেনার ক্ষেত্রে টিডিএস আদায়ের বিধানটি রোহিতকরণের প্রস্তাব দিয়েছেন,
এটি প্রান্তিক কৃষকদের কীভাবে উপককৃত করবে?
এটি
একেবারেযৌক্তিক। কৃষিতে অনেকেই লাভ করতে পারে আবার অনেকেই পারে না। আমরা কৃষিকাজ
করি অনেক কারণেই। প্রথমত, নিজেদের
কর্মসংস্থানের জন্য, দ্বিতীয়ত, পরিবারের খাবার। সেই সঙ্গে যদি ভালো কিছু করা যায়
তাহলে অন্যান্য খরচ পোষানো যায়। এ রকম একটি ট্র্যাডিশনাল
কাজের যন্ত্রে আমি মনে করি না কোনো ধরনের ভ্যাট-ট্যাক্স
যুক্ত করার প্রয়োজন আছে। তাই এ প্রস্তাবকে আমি মনে করি সময় উপযোগী।
কৃষিতে
এআইটি (এডভান্স ইনকাম ট্যাক্স) প্রত্যাহারের দাবি করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে কীভাবে লাভবান
হওয়া যাবে?
আমি
যে বিষয়টি বারবার বলার চেষ্টা করেছি কৃষি খুব বেশি এগিয়ে যেতে পারেনি। আমরা স্থানীয়ভাবে
যা উৎপাদন করি তা থাকবে। এসব জায়গায় আমাদের যেসব ইনপুট লাগে, যন্ত্রপাতি আমদানির ক্ষেত্রে যদি ট্যাক্স দেয়া হয়, এটি খরচ বাড়াবে। এটি কোনোভাবেই পরিবর্তন করা ঠিক হবে না।
কৃষিজাত
পণ্য প্রক্রিয়াজাত ও রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্জিত আয়ের ওপর ১২ শতাংশের
পরিবর্তে ৫০ শতাংশ কর অব্যাহতি দেয়ার বিষয়ে আপনার মতামত কী?
এটিও
খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা গার্মেন্টসে খুব ভালো করছি। এর কারণ হলো বিভিন্ন সময়ে
গার্মেন্টসকে অনেক ছাড় দেয়া হয়েছে। এখনো ছাড় দেয়া হচ্ছে। গার্মেন্টসের পরে স্থানীয়
পন্য দিয়ে আমাদের ভালো কিছু করার যেটা আছে সেটি
হলো কৃষিপণ্য। আমরা যা উৎপাদন করি এটি
যদি আমরা প্রসেস করে রফতানি করতে পারি তাহলে আমাদের বৈদেশিক
মুদ্রা অর্জন হবে। এখানে একেবারে কাঁচামাল থেকে শুরু করে পণ্য প্রস্তুত করা পর্যন্ত সবই নিজেদের। কিন্তু গার্মেন্টসে এটি হয় না। সেখানে
কাঁচামাল আমদানি করে আবার পণ্যরফতানি করা
হয়।তাই আমি মনে করি একদিকে যেমন ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে আবার সঙ্গে যদি ছাড় দেয়া হয়
তাহলে রফতানি বাড়বে। আমি মনে করি সঙ্গে
নতুন নতুন আরো ইনভেস্টমেন্ট আসবে, এতে আমাদের সরকারের যে
লক্ষ্য কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের বাজার ৮ বিলিয়ন ডলার সৃষ্টি
করার একটি পরিকল্পনা আছে সেটি করা সহজ হবে।
আগামী
বাজেটে নির্দিষ্ট কোনো দাবি আছে কি?
আমাদের
এগ্রিকালচারের দুটো বড় ছেলে। একটি হলোএনভায়রনমেন্টাল সমস্যা, যেটির
জন্য আমাদের প্রচণ্ড পরিমাণে ক্ষতি হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও আরো হবে। পোস্ট-হারভেস্টের
সক্ষমতা বড়োনো। এনভায়রনমেন্টালের যে সমস্যা সেটি আমরা নিজেরাই দেখছি। কীভাবে
তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে সবকিছু পরিবর্তন হচ্ছে। মাছ, গরু, খামারে মুরগি মারা যাছে, এ সমস্যাগুলো কিন্তু আরো বাড়তে থাকবে। আমরা উৎপাদন করলাম কিন্তু যদি
রাখতে না পারি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে লাভ নেই। এ কারণে আমাদের রিসার্চ ওইনোভেশনে আরো মনোযোগী হতে হবে। নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন করতে হবে। আমাদের
অনুশীলন করতে হবে এধরনের ক্ষতি মোকাবেলার। আমাদের সক্ষমতা
বৃদ্ধির জন্য আমি মনে করি সরকারের প্রাইভেট সেক্টরে একটি বরাদ্দ দেয়া প্রয়োজন। ফলে
তারা নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন করতে পারবে। একদিকে প্রডাক্টিভিটি
বাড়বে অন্যদিকে এনভায়রনমেন্টাল সমস্যাগুলোর সমাধান হবে। আরো একটি মারাত্মক সমস্যা যেটি এ বছরে
তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে কৃষি বিশেষ করে ধানকাটার লেভেল পাওয়া খুব কঠিন হয়ে
গেছে। হারভেস্ট করার পর ফসল তুলতে না পারা কিন্তু আমাদের
জন্য লাভজনক নয়। এজন্য আমাদের যন্ত্রপাতি প্রয়োজন। ভর্তুকির পরিমাণ বাড়াতে হবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৫০-৭০ শতাংশ
ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে। এটিকে ৭০-৮০ শতাংশ করতে হবে। ফলে অনেক
যন্ত্রপাতি আনা যাবে। এ ধরনের সিরিয়াস
সমস্যাগুলোর সমাধান সহজেই করা যাবে। পোস্ট-হারভেস্টের ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাচ্ছি তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে শাকসবজি আগে ১৫-২০ শতাংশ নষ্ট হয়ে যেত এখন ৩০-৪০ শতাংশ নষ্ট হয়ে
যাচ্ছে। এগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। কুল ভ্যানে যদি বাজারে আনা যায় তাহলে উৎপাদিত
পণ্য নষ্ট হবে না। কাজটি সরকারকে করতে হবে। একটি বড় উদ্যোগের মধ্য দিয়ে দেখাতে হবে সরকার যে চেষ্টা করছে। এটি পরিচালনা করবে কারা?
সরকার
হাটবাজারের ধারণক্ষমতা তৈরি করবে এবং কম্পারেটিভ প্রাইসেপ্রাইভেট সেক্টরের কাছে ছেড়ে দেবে। প্রাইভেট সেক্টর আবার একটি কম্পারেটিভ দরে পণ্য আমাদের খামারিদের দেবে।
কৃষি
যান্ত্রিকীকরণের ক্ষেত্রে কোন পর্যায়ে আছি আমরা।
সামনে এআইয়ের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার হবে কিনা?
ধান
কাটার ক্ষেত্রে আমরা ১২-১৩ শতাংশ
গিয়েছি। আমার মনে হয় ধান, গম, ভুট্টা এ ফসলগুলো নিয়ে আমাদের অনেক এগিয়ে যাওয়া
সম্ভব। প্রতিটি খামারে যদি ভর্তুকি দেয়া হয় আমরা ফসলে আরো এগিয়ে যেতে পারব।
প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কিনতে পারলে দেখা যাবে আমরা
স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে গেছি। অন্যদিকে আমাদের স্মার্ট এগ্রিকালচারের
দিকে যেতে হবে। কারণ গ্লোবাল এগ্রিকালচার অনেক বেশি কম্পারেটিভ।
আমরা যদি এমন না হতে পারি তাহলে বাইরে থেকে প্রচুর পণ্য
বাংলাদেশে আসবে। যেমন কিছুদিন আগে আপনারা শুনেছেন, ব্রাজিল থেকে মাংসআমদানি হবে অনেক কম দামে। কী করে সম্ভব। কীভাবে তারা মেকানাইজেশন করেছে! তারা স্মার্ট এগ্রিকালচারের সঙ্গে পরিচিত
হয়েছে। আমাদেরও এভাবেই এগিয়ে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে আমি মনে
করি ড্রোনের সঙ্গে পরিচয় করাতে হবে, লিকুইড সার, ড্রোন দিয়ে ম্যাপ করে যেখানে
যতটুকু প্রয়োজন সার ব্যবহার করতে হবে। আমাদের দেশে যেসব
আবিষ্কার হয় এগুলো মাঠ পর্যায়ে যেতে অনেক সময় লেগে যায়। ডিজিটাল
প্লাটফর্মের মাধ্যমে যদি আমরা খামারিকে ও ডিলারকে সংযুক্ত
করতে পারি তাহলে সুবিধা হবে। কখন কোন ফসল লাগাতে হবে, কোন আবহাওয়া কী করতে হবে, কত দরে বাজারে পণ্য বিক্রি করতে হবে, যারা ক্রেতা তারা যদি ডিজিটাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে জানতে পারবে কোন পণ্যটি কোথায় পাওয়া যাচ্ছে। তাই সর্বক্ষেত্রে কিন্তু আমি মনে করি স্মার্ট
এগ্রিকালচারের গুরুত্ব রয়েছে। আমরা খামারিদের অনেকটা সহায়তা করতে পারবে এবং একই
সঙ্গে খামারিরা ভালো দরে পণ্য বিক্রি করতে পারবেন।