জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য উৎপাদনক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও বিদ্যুৎসাশ্রয়ী হচ্ছি

দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন ঘোষণা করেছে সরকার। এক্ষেত্রে বিতরণ কোম্পানিগুলোর ভূমিকা কী? বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় জ্বালানি সরবরাহের বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?

বাংলাদেশ এখন চাহিদা অনুযায়ী শতভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম। দেশের শতভাগ জনগণ আজ বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত। পাওয়ার স্টেশনের উৎপাদিত বিদ্যুৎ দূর-দূরান্তে থাকা গ্রাহকের কাছে পৌঁছার জন্য বিদ্যুৎ বিতরণের সঙ্গে জড়িত সংস্থাগুলোকে নতুন নতুন সাবস্টেশন, বিতরণ লাইনসহ বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ করতে হয়েছে। নানাবিধ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই আমরা গ্রাহকদের দোরগোড়ায় বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে পেরেছি। গত ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে। জ্বালানি সংকটের বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে অন্যান্য বিতরণ সংস্থার মতো ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায়ও অনিচ্ছাকৃত লোড ম্যানেজমেন্ট করতে হচ্ছে। পাশাপাশি সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ জনগণকে বিদ্যুৎসাশ্রয়ী হয়ে বিদ্যুতের ব্যবহার কমিয়ে আনার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

যেকোনো দেশে সুষ্ঠু বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় জীবাশ্ম জ্বালানির নিরাপদ সুষম ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বর্তমানে আমাদের দেশে গ্যাস উৎপাদন কমে যাওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আমরা আমদানিনির্ভর জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি। তাই নবায়নযোগ্য সোর্সসহ দেশীয় অন্যান্য সোর্স থেকে জীবাশ্ম জ্বালানি যেমন কয়লা, গ্যাস সরবরাহ বেশি করতে পারলে এবং আমদানিনির্ভর জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে পারলে আমাদের দেশে নির্বিঘ্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব হবে।

আধুনিকায়নে ডিপিডিসি আন্ডার গ্রাউন্ডিং সাবস্টেশন, অটোমেশন, -ফাইলিংসহ নানা ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে? সেগুলোর অগ্রগতি কতদূর?

ডিপিডিসি রাজধানীর কারওয়ান বাজারে দেশের প্রথম ভূগর্ভস্থ উপকেন্দ্র নির্মাণ করছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে ১৩২ কেভি পর্যায়ে ৩৬০ এমভিএ এবং ৩৩ কেভি পর্যায়ে ১৫০ এমভিএ ক্ষমতা বাড়বে।

ডিপিডিসির বিতরণ নেটওয়ার্কে স্মার্ট গ্রিড এবং ডিস্ট্রিবিউশন অটোমেশন সিস্টেম প্রবর্তনের জন্য পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বিতরণ ব্যবস্থাকে অটোমেশনের আওতায় আনা হবে, সিস্টেমকে রিয়েল টাইম মনিটরিং করা যাবে, সিস্টেমের পারফরম্যান্স উন্নত হবে, সিস্টেম লস হ্রাস পাবে, বিতরণ নেটওয়ার্কে কোনো জায়গায় ফল্ট হলে দ্রুত সেটি চিহ্নিত করা যাবে। ফলে এসএআইএফআই (সিস্টেম এভারেজ ইন্টেরাপশন ফ্রিকোয়েন্সি ইনডেক্স), এসএআইডিআই (সিস্টেম এভারেজ ইন্টেরাপশন ডিউরেশন ইনডেক্স) হ্রাস পাবে এবং গ্রাহক সেবা আরো উন্নত হবে।

ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার এবং চীন সরকারের মধ্যে জিটুজি চুক্তির আওতায় ১৪টি নতুন ১৩২/৩৩ কেভি ৩৩/১১ কেভি এবং ২৬টি নতুন ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। বিদ্যমান আটটি ১৩২/৩৩ কেভি চারটি ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্রের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে। প্রকল্প সফল বাস্তবায়নের পর ১৩২ কেভি লেভেলে ১৬৮০ এমভিএ এবং ৩৩ কেভি লেভেলে ১৪৭০ এমভিএ সক্ষমতা বাড়বে। এছাড়া ৬৫৩ কিলোমিটার নতুন ১৩২ কেভি এবং ৭০০ কিলোমিটার ৩৩ কেভি আন্ডারগ্রাউন্ড কেবল লাইন নির্মাণ করা হবে। ১০৫ কিলোমিটার ১১/. কেভি আন্ডারগ্রাউন্ড এবং ৫৮২ কিলোমিটার ১১/. কেভি ওভারহেড নতুন বিতরণ লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে।

বিদ্যুৎ বিতরণে ডিপিডিসি গ্রাহকদের মধ্যে দ্বিমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্তমান নেটওয়ার্ককে স্মার্ট গ্রিডে রূপান্তরের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে রাজধানীর ধানমন্ডি, আজিমপুর, গ্রিন রোড, লালমাটিয়া এবং আসাদ গেট এলাকায় দেশের প্রথম স্মার্ট গ্রিড নির্মিত হচ্ছে।

১৩২ কেভি লাইন থেকে গ্রাহক পর্যায় পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার মানচিত্র জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেম (জিআইএস) তৈরির কাজ এরই মধ্যে সমাপ্ত হয়েছে। গ্রাহক, পোল, ট্রান্সফরমার, ১১ কেভি ফিডার, ১৩২/৩৩ কেভি এবং ৩৩/১১ কেভি সাবস্টেশন, ১১ কেভি সুইচিং স্টেশন ইত্যাদি তথ্যের সমন্বয়ে একটি ডাটাবেজ তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।

ডিপিডিসি প্রায় লাখ ৭০ হাজার প্রি-পেমেন্ট মিটার স্থাপন করেছে। এছাড়া দশমিক লাখ গ্রাহককে অ্যাডভান্সড মিটারিং ইনফ্রাস্ট্রাকচারের (এএমআই) আওতায় স্মার্ট প্রি-পেইড মিটারের আওতায় আনার জন্য প্রকল্পের কাজ চলমান আছে। বিতরণ নেটওয়ার্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি, অটোমেশন আধুনিকীকরণের জন্য নতুন নতুন উপকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প এবং বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

ডিপিডিসি তার সব তথ্য, সেবা কার্যক্রমকে ডিজিটাল প্লাটফর্মে নিয়ে এসেছে এবং প্রস্তুত করেছে নিজস্ব ডাটা সেন্টার। বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন সংস্থাগুলোর জন্য বাস্তবায়িত সমন্বিত ইআরপি সিস্টেম এবং -ফাইলিং সিস্টেম বাস্তবায়নের মাধ্যমে ডিপিডিসি ধীরে ধীরে একটি পেপারলেস সংস্থায় পরিণত হচ্ছে।

গ্রাহকসেবায় ডিপিডিসি গ্রাহকরা বেশ খুশি, বিদ্যমান লোডশেডিং অন্যান্য বিতরণ কোম্পানি থেকে কম হচ্ছে? কীভাবে সেটি করা সম্ভব হচ্ছে?

ডিপিডিসির মূলমন্ত্রই হচ্ছে নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ, উত্ফুল্ল গ্রাহক। আমরা সবাই জানি যে জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য উৎপাদনক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও আমরা সাম্প্রতিক সময়ে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে বিদ্যুৎসাশ্রয়ী হচ্ছি। ফলে বিতরণের সঙ্গে জড়িত সব সংস্থাকেই পরিকল্পিত লোডশেডিং করতে হচ্ছে।

এনএলডিসি কর্তৃক ডিপিডিসির জন্য বরাদ্দকৃত লোড অনুযায়ী ডিপিডিসি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে এনএলডিসির লোড বরাদ্দের ভিত্তিতে এটি পরিবর্তন হতে পারে। সে মোতাবেক পরিকল্পনা তৈরি করে তা বাস্তবায়ন করার জন্য প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। গ্রাহকরা ডিপিডিসির ওয়েবসাইটে আগের দিনই নির্ধারিত লোডশেডিংয়ের তালিকা দেখতে পারছেন এবং তা নিয়মিত হালনাগাদ করা হচ্ছে।

তবে বাস্তবে যেন আরো কম পরিমাণ লোডশেডিং করা লাগে সেজন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছি। এর অন্যতম হচ্ছে গ্রাহককে সচেতন করার জন্য বিভিন্ন রকম প্রচারণা চালানো। গ্রাহকরা যদি অপ্রয়োজনীয় লোড ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকে তাহলে চাহিদা সরবরাহের মধ্যে বিদ্যুতের যে গ্যাপ রয়েছে তা আমরা অনেক কমিয়ে আনতে পারব। মূলত আমাদের ধরনের প্রচারণার ফলে গ্রাহকরাও বিদ্যুৎ ব্যবহারে আগের চেয়ে অনেক সাশ্রয়ী হয়েছেন।

ডিপিডিসির বিদ্যুতের চাহিদা কতটুকু? শিল্প বিস্তৃতির প্রেক্ষাপটে আগামীতে চাহিদা কী পরিমাণ বাড়তে পারে?

গ্রীষ্মে আমাদের ডিপিডিসির এলাকায় সর্বোচ্চ বিদ্যুতের চাহিদা ছিল প্রায় ১৮৫৫ মেগাওয়াট। আমাদের দৈনিক গড় বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় ১৪০০-১৬৫০ মেগাওয়াট। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে দেশে ব্যাপক শিল্প বিস্তৃতির সম্ভাবনা রয়েছে। সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে বলা যায়, আমাদের দেশে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত বিদ্যুতের চাহিদার গ্রাফটা খাড়াভাবেই ঊর্ধ্বমুখী হবে। পরবর্তী সময়ে চাহিদার গ্রাফটা স্থিতিশীলতা পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। সেই পরিকল্পনামাফিক অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ করা হচ্ছে।

গ্রাহকসেবায় ডিপিডিসি কী কী নতুনত্ব আনতে যাচ্ছে?

এরই মধ্যে প্রায় লাখ প্রি-পেমেন্ট মিটার স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে পরীবাগ জিগাতলায় স্মার্ট মিটার স্থাপনের কাজ চলমান আছে। গ্রাহকরা এখন ঘরে বসেই দিনে-রাতে যেকোনো সময়ে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে পারবে। এছাড়া স্মার্টফোনের মাধ্যমে যেকোনো মুহূর্তে মিটারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের তথ্য, বিল পরিশোধসংক্রান্ত তথ্য দেখতে পারবে।

ডিপিডিসি গ্রাহকসেবা বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্মার্ট মিটারিং সিস্টেম বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। এছাড়া নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুেসবা প্রদানের লক্ষ্যে ডিপিডিসি স্মার্ট গ্রিড পাইলটিং করে বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে।

মানসম্মত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করে গ্রাহকের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য আমরা বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এর মধ্যে রয়েছে পাইলট ভিত্তিতে স্মার্ট গ্রিড স্থাপন, ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা চালুকরণ ইত্যাদি। গ্রাহকদের লোড বৃদ্ধির চাহিদা পূরণের জন্য নতুন নতুন সাবস্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে এবং অগমেন্টেশনের মাধ্যমে পুরনো উপকেন্দ্রের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। মানসম্মত বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং পাওয়ার ফ্যাক্টরের মান বৃদ্ধির জন্য ক্যাপাসিটর ব্যাংক স্থাপন করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে ডিপিডিসিই প্রথম ভেন মাউন্টেড কেবল ফল্ট লোকেটর চালু করতে যাচ্ছে। ফলে আগের চেয়ে অনেক অল্প সময়ে ভূগর্ভস্থ কেবলের ফল্ট লোকেশন করা সম্ভব হবে। গ্রাহকদের নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ আবেদনের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে অনলাইনভিত্তিক করা হয়েছে। ফলে দ্রুততম সময়ে নতুন সংযোগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে।

ডিপিডিসি যেসব এলাকায় রাস্তাঘাট সরু ঘনবসতি বেশি, বিশেষ করে পুরান ঢাকা এবং এর আশপাশের এলাকায় আমরা সিঙ্গেল পোলে বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার বসাচ্ছি। ফলে ট্রান্সফরমার বসাতে এখন আগের চেয়ে অল্প জায়গা লাগছে। এছাড়া বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা রোধে এসব এলাকায় ১১ কেভি হাই ভোল্টেজ ওভারহেড লাইনে ইনসুলেটেড কন্ডাক্টর ব্যবহার করা হচ্ছে।

প্রায় জ্বালানি সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমবেশি হয়। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ে বিতরণ কোম্পানিগুলো। সমস্যা সমাধানে আপনাদের পরামর্শ কী?

আমাদের দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আমরা গ্যাস আমদানিনির্ভর কয়লা তেলের ওপর অনেক নির্ভরশীল। বৈশ্বিক বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা বেশ ভালোভাবেই অনুধাবন করতে পারছি যে আমাদের নবায়নযোগ্য উৎস এবং অন্যান্য দেশীয় উৎস ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বাস্তবমুখী পরিকল্পনায় আরো বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের লিমিটেড দেশীয় রিসোর্সের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমেই আমরা আমদানিনির্ভর জ্বালানি উৎসের প্রতি নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে পারব। পাশাপাশি দেশীয় নতুন গ্যাসকূপের সন্ধান পেতে স্থলে বঙ্গোপসাগরে আমরা অনুসন্ধান চালাতে পারি।

জ্বালানি নিরাপত্তা না হলে বিদ্যুৎ খাত টেকসই হবে না, সেক্ষেত্রে বিতরণ কোম্পানি হিসেবে ডিপিডিসি কী করছে?

বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন প্রচারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। আমাদের প্রচারণার ফলে অনেক গ্রাহক কিন্তু এখন আগের চেয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহারে অনেক সচেতন হয়েছেন, অপ্রয়োজনীয় লোড ব্যবহার করা বিরত থাকছেন। শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যবহার কমানো কিংবা তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাখার বিষয়েও জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

ডিপিডিসি তার নিজস্ব বিভিন্ন ভবন উপকেন্দ্রের ছাদে সোলার সিস্টেম স্থাপন করেছে। এছাড়া বিওও ভিত্তিতে স্থাপিত আরো দুটি সাইট থেকে ডিপিডিসি সৌরবিদ্যুৎ কিনছে।

নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ কীভাবে উৎপাদন হয় সেই বিষয়ে স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রায়োগিক জ্ঞান বিতরণ করার লক্ষ্যে কাজ করছে এবং মুজিব বর্ষে একটি স্কুলের ছাদে নিজস্ব অর্থায়নে সোলার সিস্টেম স্থাপন করেছে। গ্রাহক প্রান্তে স্থাপিত সোলার সিস্টেমকে কার্যকর রাখার জন্য এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্রাহককে উৎসাহ দেয়ার জন্য ডিপিডিসি ৩০০টিরও বেশি নেট মিটার স্থাপন করেছে।

বিতরণ ব্যবস্থায় ডিপিডিসির বহু এলাকা পুরনো আদলে, আধুনিকায়নে ঠিক কী করছেন আপনারা?

ডিপিডিসির বিতরণ নেটওয়ার্কের পরিচালন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। ডিপিডিসির আওতাধীন পাঁচটি উপকেন্দ্রে নিয়ে পাইলট ভিত্তিতে স্মার্ট গ্রিড বাস্তবায়নের জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। সেই প্রকল্পের আওতায় ফিডার অটোমেশন সিস্টেম বাস্তবায়নের মাধ্যমে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্ভরযোগ্যতা বৃদ্ধি করা হবে। এছাড়া প্রকল্পটির আওতায় বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থায় ওএমএস (আউটেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) ডিএমএস (ডিস্ট্রিবিউশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) প্রবর্তন করা হবে।

পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমারের এলটি সাইডে এমসিসিবি বসানো হবে। এতে অপরিকল্পিত পাওয়ার ইন্টেরাপশন অনেকাংশে কমানো সম্ভব হবে। প্রতিটি ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্রকে একাধিক ভিন্ন সোর্স লাইন থেকে সংযোগের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এছাড়া ১১ কেভি ফিডারগুলোকে টাই সুইচের মাধ্যমে যেন ইমার্জেন্সি পিরিয়ডে নিকটবর্তী ফিডার থেকে পাওয়ার সরবরাহ করা যায় সেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

ডিপিডিসির বিতরণ ব্যবস্থাকে আমরা পর্যায়ক্রমে ওভারহেড থেকে আন্ডারগ্রাউন্ডে নিয়ে যাব। জাহাঙ্গীর গেট থেকে বঙ্গভবন, আজিমপুর থেকে গাবতলী সড়কে এবং ধানমন্ডি এলাকায় ভূগর্ভস্থ বিতরণ ব্যবস্থা নির্মাণের জন্য আমরা কাজ শুরু করেছি। নারায়ণগঞ্জ এলাকায়ও জাতীয় কাজ শুরু করার পরিকল্পনা করছি। 

স্মার্ট মিটারিং সিস্টেম প্রকল্পের মাধ্যমে ডিপিডিসির সমগ্র এলাকাজুড়ে ওয়্যারলেস আরএফ মেশ কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক চালু করা হবে। মাধ্যমে মিটার থেকে সিস্টেম এবং সিস্টেম থেকে মিটার অর্থাৎ উভয়মুখী কমিউনিকেশন করা যাবে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন