চবিতে যৌন নিপীড়ন

অভিযুক্তদের আজীবন বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চবি প্রশাসন। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৪তম বার্ষিক সিনেট সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অন্যদিকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাইফুল নামে আরো একজনকে আটক করেছে র‍্যাব-৭। নিয়ে পাঁচজনকে আটক করল র‍্যাব।

আটককৃতরা হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের মো. আজিম, নৃবিজ্ঞান বিভাগের একই বর্ষের নুরুল আবছার বাবু, হাটহাজারী সরকারি কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র নুর হোসেন শাওন দ্বিতীয় বর্ষের মাসুদ রানা এবং সাইফুল ইসলাম। এর মধ্যে মো. আজিম, নুরুল আবছার বাবুকে আজীবন বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। চবির ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মেহেদী হাসান হূদয়কে (২৩) আটক করা হলেও তার সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি শিরীণ আখতার জানান, শুক্র শনিবার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে আটক করেছে র‍্যাব। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দুজন। খুব লজ্জার সঙ্গে বলতে হচ্ছে, তাদের দুজনকে সিনেট সভায় আজীবন বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যন্ত ঘটনার খোঁজখবর নিয়েছেন। তিনি বিশেষ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পাঠিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শহিদুল ইসলাম জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব হেলথ, রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির নিয়ম অনুযায়ী, অপরাধীরা ক্ষমার অযোগ্য কাজ করেছে। তাই দুই শিক্ষার্থীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া হাটহাজারী কলেজের দুজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে লিখিত আবেদন করা হবে।

গত শুক্রবার রাতে চট্টগ্রামের রাউজান হাটহাজারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করে র্যাব। সময় তাদের কাছ থেকে ওই ছাত্রীর মুঠোফোনও উদ্ধার করা হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান র‍্যাব- পতেঙ্গার অধিনায়ক লে. কর্নেল এমএ ইউসুফ। এদিকে গতকাল আরো একজনকে আটক করা হয় বলে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত রোববার রাত সাড়ে ৯টায় ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী যৌন নিপীড়ন মারধরের শিকার হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় পাঁচ তরুণ ওই ছাত্রীকে বেঁধে বিবস্ত্র করে মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করেন। সময় তার সঙ্গে থাকা এক বন্ধু প্রতিবাদ করলে তাকেও মারধর করা হয়। ঘটনায় গত মঙ্গলবার প্রক্টরের কাছে অভিযোগ দেয়ার পাশাপাশি পরের দিন বুধবার হাটহাজারী থানায় মামলা করেন ওই ছাত্রী। এর আগে যৌন নিপীড়নের শিকার ছাত্রীকে প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে বাধা দেয়ার অভিযোগ আছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর গত বুধবার থেকেই প্রতিবাদে নামেন শিক্ষার্থীরা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন