আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আজকের বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল —প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই আওয়ামী লীগ জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করছে বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আজকের বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। তাই দেশের মানুষের কাছে আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। দেশবাসী জানে নৌকা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক এবং নৌকা ছাড়া তাদের গতি নেই।

গতকাল আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আয়োজিত সভায় তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে নিজের ভাগ্য গড়ার জন্য নয়; বরং অনেক মানুষের ভাগ্য গড়তে। জন্মলগ্ন থেকে সেই আদর্শ নিয়েই রাজনীতি করে যাচ্ছে দলটি। বাংলাদেশের স্বাধীনতায় নেতৃত্ব দানকারী সংগঠন আওয়ামী লীগ দেশের পল্লী প্রকৃতি এবং মাটি মানুষের কল্যাণ যতটা উপলব্ধি করতে পারে আর কেউ ততটা বুঝবে না। মাটির টানে, নাড়ির টানেই তারা দেশের মানুষের ভাগ্য বিনির্মাণে কাজে লেগেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের আদর্শই হচ্ছে জনগণের সেবা করা।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে এসেছে দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে। তিনি বলেন, এজন্য বারবার নানা কৌশলে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় যেতে দেয়া হয়নি, যাতে তারা দেশের মানুষকে আরো বেশি শোষণ নির্যাতন করতে পারে। ২১ বছর পর সরকার গঠন করে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ যা অর্জন করেছিল পরবর্তী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার তার সবই নস্যাৎ করে। খালেদা জিয়ার প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন দেশকে জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত এবং টানা পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করে।

তিনি বলেন, সেই অসম্মানজনক জায়গা থেকে দেশের ভাবমূর্তির আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে তার সরকার আজ দেশকে একটি সম্মানজনক অবস্থায় আনতে পেরেছে। এসব কিছুর পরও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আজকের বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল এবং উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, প্রয়োজনে বানভাসি মানুষের পাশে আওয়ামী লীগ যেমন দাঁড়িয়েছে তেমনি প্রশাসন, সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও সেখানে কাজ করে যাচ্ছেন। বন্যাদুর্গত মানুষকে বিভিন্ন সহায়তা দিতে কোথাও কোনো গাফিলতি হচ্ছে না। প্রথম দিন থেকেই আমরা বানভাসি মানুষের পাশে আছি।

যেসব প্রত্যন্ত অঞ্চলে কেউ যেতে পারছে না সেসব জায়গার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সশস্ত্র বাহিনীর মাধ্যমে হেলিকপ্টারে করে সহায়তা পাঠানো হচ্ছে বলে জানান শেখ হাসিনা।

সময় বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ পর্যন্ত তারা বানভাসি মানুষকে এক মুঠো খাবারও দিতে পারেনি, তাদের পাশে দাঁড়ায়নি, ঘরে বসে তারা কেবল মায়াকান্না করছে, এটাই তাদের চরিত্র।

দলের প্রচার প্রকাশনা সম্পাদক . আব্দুস সোবহান গোলাপের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বীর বিক্রম মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

এছাড়া বক্তব্য দেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক . শাম্মী আহমেদ, কেন্দ্রীয় সদস্য পারভীন জামান কল্পনা, মহানগর উত্তর দক্ষিণের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান আবু আহমেদ মান্নাফী।

জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, গণমানুষের সমর্থন নিয়ে সরকার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করতে পেরেছে। ঠিক এভাবেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আর কখনো পরমুখাপেক্ষী হবে না, কারো কাছে হাত পেতে চলবে না। বাংলাদেশের জনগণকে আমি স্যালুট করি।

সময় আওয়ামী লীগের ইতিহাস-ঐতিহ্য, আন্দোলন-সংগ্রাম দেশের উন্নয়নে দলটির ভূমিকা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শামসুল হকসহ আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের জনগণেরই সংগঠন। আওয়ামী লীগ সবসময়ই দেশের শোষিত, বঞ্চিত, নির্যাতিত মানুষের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করে গেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন