রোহিঙ্গা সংকটের দায়-দায়িত্ব ভাগাভাগির আহ্বান বাংলাদেশের

বণিক বার্তা অনলাইন

রোহিঙ্গা সংকটকে দীর্ঘায়িত প্রকৃতির সংকট উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহকে এর দায়ভার ও দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।

শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বিশেষ অর্থনৈতিক সহায়তাসহ জাতিসংঘের মানবিক ও দুর্যোগ-ত্রাণ সহায়তার সমন্বয় জোরদার করাশীর্ষক সাধারণ বিতর্কে প্রদত্ত বক্তব্যে এ আহ্বান জানান জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।

রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গা সংকট দীর্ঘায়িত প্রকৃতির একটি সংকট এজন্য আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহকে এর দায়ভার ও দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নিতে প্রচেষ্টা আরো বৃদ্ধি করার আহ্বান জানাচ্ছি।

এ সময় জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের যে মানবিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে তা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফা‌তিমা। মিয়ানমার পরিস্থিতির ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরো বেশি মনোযোগ বাড়ানোর অনুরোধও জানান; যাতে, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের নিজভূমি মিয়ানমারে নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ তৈরি হয়।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটের ফলে এই অঞ্চলে এরই মধ্যে যে জটিল রাজনৈতিক ও মানবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে, সংকট দীর্ঘায়িত হলে তা আরো জটিলতার সৃষ্টি করবে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত মানবিক পরিস্থিতিতে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস, প্রতিরোধ, অভিযোজন, প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ্য অর্জন, এাণ ও প্রশমনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে উত্তম অনুশীলন এবং বিশেষ বিনিয়োগ করে যাচ্ছে তা উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, আমরা মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি, যা আমাদের জলবায়ু নাজুক পরিস্থিতি থেকে জলবায়ুর প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ্য অর্জন ও সমৃদ্ধিপূর্ণ পরিস্থিতির দিকে ধাবিত করতে সাহায্য করছে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়ার ক্রমবর্ধমান ঘটনা প্রসঙ্গে রাবাব ফাতিমা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাস্তুচ্যুতদের মানবিক চাহিদা মেটাতে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহ ও অন্যান্য অংশীজনদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয় বাড়ানো খুবই প্রয়োজন। এক্ষেত্রে তিনি প্ল্যাটফর্ম অন ডিজাসটার ডিসপ্লেসমেন্টের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন।

যেকোনো মানবিক সংকটে নারীরাই প্রথম সাড়া দেয় এবং কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে মর্মে উল্লেখ করে রাবাব ফা‌তিমা দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ও প্রশমনের ক্ষেত্রে লিঙ্গ-সংবেদনশীল নীতি জোরদার কারার আহ্বান জানান।

সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে মানবিক সহযোগিতার প্রবেশাধিকার না দেয়া এবং মানবাধিকার কর্মী ও মানবিক সাহায্যের স্থাপনা ও সরঞ্জামাদির ওপর নির্বিচারে সশস্ত্র হামলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। এ ধরনের সহিংসতার দায়বদ্ধতা নিরুপণের গুরুত্বের ওপর জোর দেন রাষ্ট্রদূত।

জা‌তিসং‌ঘের বাংলাদেশ মিশন জানায়, সাধারণ বিতর্কের পর সাধারণ পরিষদে জাতিসংঘের মানবিক ও দুর্যোগ-ত্রাণ সহযোগিতার সমন্বয় শক্তিশালীকরণ বিষয়ক চারটি রেজুলেশন গৃহীত হয়। এর মধ্যে গ্রুপ-৭৭ ও চীনের পক্ষে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিষয়ক রেজুলেশনটি গ্রহণের ক্ষেত্রে সমন্বয় করে বাংলাদেশ। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন