কারণ ছাড়াই বাড়ছে প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের শেয়ারদর

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাম্প্রতিক সময়ে প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল লিমিটেডের শেয়ারদর ও লেনদেন বৃদ্ধির পেছনে অপ্রকাশিত কোনো মূল্যসংবেদনশীল তথ্য নেই। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চিঠির জবাবে এ তথ্য জানিয়েছে কোম্পানিটি।


বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ১৬ সেপ্টেম্বরের পর থেকে কোম্পানিটির শেয়ারদর অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে। ওই দিন শেয়ারটির সমাপনী দর ছিল ৬২ টাকা ৫০ পয়সা। এক পর্যায়ে ১১ অক্টোবর শেয়ারটির দর সর্বোচ্চ ৯১ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হয়। সর্বশেষ গতকাল শেয়ারটির সমাপনী দর ছিল ৮৮ টাকা ২০ পয়সা।


অন্যদিকে লেনদেন পর্যালোচনায় উত্থান-পতন দেখা গেছে। ৫ অক্টোবর কোম্পানিটির ২৬ লাখ ৯ হাজার ৪২৪টি শেয়ার লেনদেন হয়। একদিন পর ৭ অক্টোবর লেনদেন বেড়ে দাঁড়ায় ৯৯ লাখ ৭৩ হাজার ৯৯৮টি। সর্বশেষ গতকাল ৩১ লাখ ৮১ হাজার ৭৯টি শেয়ার লেনদেন হয়।  


সম্প্রতি জমি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানিটি। গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভায় ১৪১ ডেসিমল জমি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ। এ পরিমাণ জমি কিনতে কোম্পানিটির ব্যয় হবে ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। উত্পাদন ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এ জমি ব্যবহার করবে কোম্পানিটি।


সর্বশেষ ঋণমান অনুসারে, স্বল্পমেয়াদে কোম্পানিটির রেটিং এসটি-১, যা স্থিতিশীল অবস্থাকে নির্দেশ করে। ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী এবং ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ পর্যন্ত আনুষঙ্গিক তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রত্যয়ন করেছে আলফা ক্রেডিট রেটিং লিমিটেড (আলফা রেটিং)।


কোম্পানিটির সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২১ হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৯৭ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১ টাকা ১৫ পয়সা। নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) ইপিএস হয়েছে ৩ টাকা ৪০ পয়সা, যা আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ছিল ৩ টাকা ৬৪ পয়সা। ৩১ মার্চ ২০২১ শেষে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৬ টাকা ১৩ পয়সা।


সমাপ্ত হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ইপিএস ছিল ২ টাকা ৪৪ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ২ টাকা ৪৯ পয়সা। দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) ইপিএস ছিল ১ টাকা, যা আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৩২ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটির এনএভিপিএস দাঁড়ায় ২৫ টাকা ৪০ পয়সা।


৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরের জন্য সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের ১৫ শতাংশ নগদ ও সব ধরনের শেয়ারহোল্ডারকে ৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৪ টাকা ৪৬ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ২ টাকা ৭৯ পয়সা (পুনর্মূল্যায়িত)। ৩০ জুন প্রতিষ্ঠানটির এনএভিপিএস দাঁড়ায় ২৪ টাকা ২৬ পয়সা, আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ২০ টাকা ৩৪ পয়সা (পুনর্মূল্যায়িত)।


২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের মোট ১৬ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল। এর মধ্যে ৭ শতাংশ নগদ ও বাকি ৯ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ। ২০১৮ হিসাব বছরে ৭ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছিল তারা। ২০১৭ হিসাব বছরে ৫ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ পেয়েছিলেন কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা।


২০১৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের অনুমোদিত মূলধন ২০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ১৫৫ কোটি ৮ লাখ টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১৪৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ১৫ কোটি ৫০ লাখ ৭৯ হাজার ৫৫৫টি। এর মধ্যে ৬০ দশমিক ৯৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে। এছাড়া ১৩ দশমিক ২১ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ বিদেশী ও বাকি ২২ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।


সর্বশেষ নিরীক্ষিত ইপিএস ও বাজারদরের ভিত্তিতে এ শেয়ারের মূল্য-আয় (পিই) অনুপাত ১৯ দশমিক ৭৮, হালনাগাদ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যা ১৯ দশমিক ৪৬।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন