এসএমএস পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপহার

উদ্বোধনের অপেক্ষায় ফেনীর সেই প্রাথমিক বিদ্যালয়

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, ফেনী

ফেনী সদরের রতনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবর্নিমিত ভবন ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সেলফোনে এসএমএস দিয়ে বরাদ্দ পাওয়া ফেনীর আলোচিত সেই প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ শেষে উদ্বোধনের অপেক্ষায়। সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের রতনপুরে ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত নতুন ভবনটি পেয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে। তবে আসবাব বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় ভবনটি এখনো উদ্বোধন করা হয়নি। এর আগে ২০১৮ সালের ২২ জুন ওই গ্রামের আনোয়ার হোসেন খোকন নামের এক প্রবাসী রতনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে একটি এসএমএস দেন।

জানা যায়, ১৯৭২ সালে তত্কালীন ইউপি সদস্য আফজালুর রহমানের দান করা ৪০ শতাংশ জমিতে প্রতিষ্ঠা হয় রতনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। ওই সময়ে তিন কক্ষবিশিষ্ট একটি টিনশেডের ঘরে স্কুলটির কার্যক্রম চালানো হতো। ১৯৭৪ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের পর পুরনো ভবনটি ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ায় সেখানে আরেকটি পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সেখানেও শিক্ষার্থীদের জায়গা সংকুলান হতো না। সবসময় গাদাগাদি করে শ্রেণী কার্যক্রমে অংশ নিতে হতো শিক্ষার্থীদের।

বিষয়টি জানতে পেরে স্কুলের ভূমিদাতা আফজালুর রহমানের ছেলে প্রবাসী আনোয়ার হোসেন খোকন ২০১৮ সালের ২২ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি এসএমএস পাঠান। ওই ক্ষুদে বার্তায় খোকন প্রধানমন্ত্রীকে স্কুলটির কোড নম্বর পাঠিয়ে লেখেন, স্কুলটি স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা আফজালুর রহমানের জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু শ্রেণীকক্ষের অভাবে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে পারছে না। একটি স্কুল ভবন করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেন তিনি। এসএমএস পেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তত্কালীন একান্ত সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিঞাকে নির্দেশ দেন। তাত্ক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার চারদিনের মাথায় ২৬ জুন বিকালে নতুন ভবনের চূড়ান্ত অনুমোদন পায় রতনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে স্কুল ভবনটি বাস্তবায়নের কাজ পায় ফেনীর মেসার্স সেতু এন্টারপ্রাইজ। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে পাঁচ কক্ষবিশিষ্ট ভবনটির নির্মাণকাজ শেষে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

রতনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মারজান আক্তার জানান, করোনাকালীন বন্ধের মাঝেই স্কুলের নতুন ভবন নির্মাণ হয়ে গেছে। স্কুল খোলার পর শিক্ষার্থীরা নতুন ঝকঝকে ভবনটি দেখে খুবই উৎসাহী হয়েছে। নতুন ভবন পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে স্কুলমুখী হার আরো বাড়বে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নূরুল ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রীর উপহারস্বরূপ পাওয়া রতনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি নির্মাণ শেষে তিনিসহ শিক্ষা বিভাগের একটি দল সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে। বরাদ্দ পেলেই সেখানে নতুন চেয়ার-টেবিল দেয়া হবে। বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য সংশ্লিষ্টদের তাগিদ দেয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন