ওয়াইপিএফের আলোচনায় বক্তারা

করোনা শেষে প্রায় ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী ঝরে যাবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনার অনাকাঙ্ক্ষিত এক দুর্যোগে প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত দেশের প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থী সরাসরি শিক্ষা কার্যক্রমের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সেভ দ্য চিলড্রেন-এর গবেষণা থেকে জানা যায়, করোনার পর বিশ্বব্যাপী প্রায় এক কোটি শিশু স্কুলে ফিরে যেতে পারবে না এবং এক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ২৮তম। করোনায় সর্বাপেক্ষা ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক অঞ্চলের দরিদ্র শিক্ষার্থীরা। দারিদ্র্য বাল্যবিবাহের কারণে এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশ শিক্ষা কার্যক্রমের বাইরে চলে গেছে এবং করোনা শেষ হলে প্রায় ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী ঝরে পড়বে।

ইয়ুথ পলিসি ফোরামের ধারাবাহিক কার্যক্রম রোড টু রিফর্ম-এর নতুন পর্ব জ্ঞাননির্ভর সমাজ বিনির্মাণে প্রগতিশীল শিক্ষা-এর আলোচনায় এসব তথ্য উঠে আসে। আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্যবিদ্যা বিভাগের ডিন অধ্যাপক . ফুয়াদ হাসান মল্লিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক . এম তারিক আহসান এবং কাজী মফিজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আওলাদ হোসেন সরকার। আলোচনা পর্ব সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তাওহীদা জাহান।

জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি ডিপার্টমেন্ট অব ব্র্যাকের তথ্যমতে, অন্যান্য বছরের তুলনায় ২০২০ সালে বাল্যবিবাহ প্রায় ১৩ শতাংশ বেড়েছে, যা গত ২৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মো. আওলাদ হোসেন বলেন, আমার বিদ্যালয়ে প্রায় হাজার ২৫০ শিক্ষার্থী রয়েছে। তবে আমার মনে হয় বিদ্যালয় খোলার পর প্রায় ৩০ শতাংশ কিংবা তার থেকেও বেশি শিক্ষার্থী ঝরে যাবে। বাল্যবিবাহ, শিশুশ্রম মূলত দায়ী এর পেছনে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। এসব শিক্ষার্থীর জন্য এবং বিশেষ করে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের পুনরায় শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসার জন্য প্রয়োজন সঠিক ব্যবস্থাপনা।

অধ্যাপক তারিক আহসানের মতে, এমন কিছু শিক্ষার্থী আছে, যারা আর কখনই শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরে আসবে না। কারণ তাদের জীবন পরিচালনার গঠন পরিবর্তিত হয়ে গেছে। সমস্যার সমাধান সম্পর্কে তিনি বলেন, এসব ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর জন্য বিকল্প শিক্ষা পদ্ধতিবিষয়ক পদক্ষেপ নেয়া অতীব জরুরি।

অধ্যাপক ফুয়াদ হাসান মল্লিকের মতে, শিক্ষার পেছনে সরকারকে খরচ বাড়াতে হবে। শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি করা জরুরি। কেননা শিক্ষকদের মানসম্মত সম্মানী প্রদান করা হলেই তাদের থেকে প্রয়োজনীয় সেবা প্রাপ্তি সম্ভব।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন