সাকিব আল হাসান

শেয়ারবাজারের পর স্বর্ণের ব্যবসায় নামলেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বুরাক কমোডিটিজ এক্সচেঞ্জের বিজ্ঞাপনে সাকিব আল হাসান ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান সম্প্রতি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছ থেকে ব্রোকারেজ হাউজের অনুমোদন পেয়েছেন। সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে তার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শেয়ার কেনাবেচার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। শেয়ারবাজারের পর এবার স্বর্ণের ব্যবসায় নেমেছেন তিনি। এবারো বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে তার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে স্বর্ণ কেনার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সাকিব আল হাসান।

গতকাল স্বর্ণ ব্যবসা শুরুর বিষয়ে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেন সাকিব আল হাসান। প্রকাশিত বিজ্ঞাপনে তিনি বলেন, প্রিয় দেশবাসী, সরকারি অনুমোদনক্রমে আমি সাকিব আল হাসান দেশে বৈধভাবে স্বর্ণবার এবং স্বর্ণালংকার আমদানি এবং বিক্রয়ের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত ডিলার হিসেবে বুরাক কমোডিটিজ এক্সচেঞ্জ কোং নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু করেছি। আপনার ব্যক্তিগত প্রয়োজনে অথবা আপনার ব্যবসায়িক প্রয়োজনে আমার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আপনারা মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে দেশে বৈধভাবে, সঠিক ওজনের খাঁটি স্বর্ণ আমদানি করতে পারেন অথবা আমদানীকৃত স্বর্ণ কিনতে পারেন।

বিজ্ঞাপনে সাকিব আল হাসান আরো উল্লেখ করেন, স্বর্ণ আমদানি হালাল, স্বর্ণে বিনিয়োগও হালাল। দেশের ব্যাংকিং বিনিয়োগে সুদের হার ক্রমেই নিম্নগামী, তাই হালাল নিরাপদ বিকল্প হিসেবে স্বর্ণে বিনিয়োগ করে নিশ্চিন্তে থাকুন। আগ্রহী ক্রেতাদের স্বর্ণ নীতিমালা ২০১৮-এর . ধারা অনুসারে চাহিদাপত্র পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন পায় সাকিবের বুরাক কমোডিটিজ এক্সচেঞ্জ কোম্পানি। ঢাকা, রংপুর কুমিল্লায় কার্যালয় খুলে এরই মধ্যে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। বিদেশ থেকে সোনার বার সোনার অলংকার আমদানিও শুরু করেছে।

বছরের ১৭ মে মন্ত্রিসভার বৈঠকে স্বর্ণ নীতিমালা-২০১৮ (সংশোধিত-২০২১)-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। এর আগে ২০১৮ সালে দেশে প্রথমবারের মতো স্বর্ণ নীতিমালা করার উদ্যোগ নেয়া হয়। সে বছরের অক্টোবরে মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন পাওয়ার পর স্বর্ণ নীতিমালা-২০১৮ কার্যকর করা হয়। তবে ওই নীতিমালায় সোনার বার এবং স্বর্ণালংকার আমদানির সুযোগ থাকলেও অপরিশোধিত স্বর্ণ আকরিক বা আংশিক পরিশোধিত স্বর্ণ আমদানির বিষয়ে কিছু বলা ছিল না। কিন্তু রফতানি করতে চাইলে অবশ্যই নিজস্ব শোধনাগার থাকতে হয়। কারণে নীতিমালা সংশোধন করে এবার অপরিশোধিত স্বর্ণ আকরিক, আংশিক পরিশোধিত স্বর্ণ আমদানি এবং শোধনাগার স্থাপনের সুযোগ রাখা হয়। সোনা আমদানির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি গাইডলাইন রয়েছে। সোনা আমদানির জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক এরই মধ্যে ১৮টি প্রতিষ্ঠান এবং একটি ব্যাংককে অনুমোদিত গোল্ড ডিলার হিসেবে লাইসেন্স দিয়েছে। বর্তমানে এসব অনুমোদিত গোল্ড ডিলাররাই সোনার বার এবং স্বর্ণালংকার আমদানি করতে পারে।

রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় বিনিয়োগের মাধ্যমে ব্যবসায়ী হিসেবে হাতেখড়ি সাকিব আল হাসানের। এরপর দ্রুতই নিজের ব্যবসায়িক পরিমণ্ডল বিস্তৃত করেছেন তিনি। দেশের শেয়ারবাজার, বিদ্যুৎকেন্দ্র, প্রসাধনী, ট্রাভেল এজেন্সি, হোটেল, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, কাঁকড়া কুঁচের খামারসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ রয়েছে তার। দেশের বাইরে যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে বড় অংকের বিনিয়োগ করেছেন সাকিব আল হাসান। তবে সবকিছুকে ছাড়িয়ে সম্প্রতি দেশের পুঁজিবাজারের বড় প্রভাবক হয়ে উঠেছেন সাকিব। বড় অংকের অর্থ লগ্নি করেছেন তিনি। পুঁজিবাজারের বড় প্লেয়ারদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে উঠেছে তার। পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) শুভেচ্ছাদূত সাকিব আল হাসান সম্প্রতি একটি ব্রোকারেজ হাউজের অনুমোদনও পেয়েছেন। সব মিলিয়ে ক্রিকেটের মাঠ ছাপিয়ে দিন দিন করপোরেট জগতের বড় উদ্যোক্তা হয়ে উঠেছেন সাকিব আল হাসান।

>>মাঠের বাইরে ব্যবসার জগৎ বড় করছেন সাকিব আল হাসান

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন