বিশ্ববাজারে চালের সরবরাহ বাড়াবে ভারত

বণিক বার্তা ডেস্ক

ভারত চলতি বছর ১ কোটি ৩০ লাখ ৮০ হাজার টনেরও বেশি নন-বাসমতি চাল রফতানি করবে ছবি : মেরিটাইম গেটওয়ে

বিশ্বের ৩৯টি দেশের প্রধান খাদ্যশস্য চাল। তবে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় এশিয়ার দেশগুলো খাদ্যশস্য হিসেবে চালের ওপর বেশি নির্ভরশীল। চলতি বছর এসব দেশের চালের চাহিদা মেটাতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে ভারত। দেশটির রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (আরইএ) তথ্য জানিয়েছে।

বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ চাল উৎপাদনকারী দেশ ভারত। কৃষিপণ্যটির আন্তর্জাতিক রফতানি বাজারেও বড় হিস্যা রয়েছে দেশটির। বছর চাল উৎপাদন রফতানিতে ভারতের আধিপত্য বজায় থাকবে। দেশটির রফতানিকারকরা গত বছর সব মিলিয়ে কোটি ৩০ লাখ ৮০ হাজার টন নন-বাসমতি চাল রফতানি করেন, যা রেকর্ড সর্বোচ্চ। চলতি বছর এর চেয়েও বেশি পরিমাণ চাল রফতানির পরিকল্পনা রয়েছে। দেশটির বাণিজ্য খাতসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা তথ্য জানিয়েছেন।

গত বছর নন-বাসমতি চালের চাহিদা ছিল আকাশছোঁয়া। ফলে সরবরাহসংক্রান্ত জটিলতা অতিমারীর প্রভাব সত্ত্বেও বিশ্বের বেশির ভাগ চাল আমদানিকারক দেশ ভারত থেকে চাল ক্রয় করেছে। গত বছর দেশটি বিশ্ববাজারে সব মিলিয়ে ৪৬ লাখ ২০ হাজার টন বাসমতি চাল সরবরাহ করে। এসব চালের মূল্য দাঁড়িয়েছে ৪০০ কোটি ডলারে। ২০২০-২১ বিপণন মৌসুমে ভারত মোট ৬৫ হাজার ২৯৭ কোটি রুপির চাল রফতানি করেছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত বছর করোনা মহামারীর প্রভাবে সরবরাহ ঘাটতির আশঙ্কায় বেশকিছু দেশ অতিরিক্ত চাল আমদানি করে। চলতি বছর এসব দেশ চাল আমদানি বন্ধ রাখতে পারে। এটি ভারতের চাল রফতানিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

ভারতের রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (আরইএ) প্রেসিডেন্ট বিভি কৃষ্ণ রাও বলেন, আফ্রিকান ক্রেতাদের কাছে চাল রফতানিতে জাহাজীকরণ ব্যয় বেড়েছে। কারণেও রফতানি হ্রাসের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আফ্রিকার উদ্দেশ্যে যেসব ব্রেক বাল্ক কার্গো ছেড়ে যায় সেসব কার্গোতে প্রতি টন চাল জাহাজীকরণে চার্জ দিতে হয় হাজার ৭৫০ থেকে হাজার ৫০০ রুপি। প্রতি টন চালের জন্য কনটেইনার চার্জ দিতে হয় হাজার ৩৫০ থেকে ১০ হাজার ১০০ রুপি পর্যন্ত। করোনা মহামারীর আগের তুলনায় এসব চার্জ বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হয়েছে। তবে দামের দিক থেকে অন্যান্য শীর্ষ রফতানিকারক দেশগুলোর চেয়ে ভারত প্রতিযোগিতার বাজারে এগিয়ে আছে। স্বল্প মূল্যের কারণে আমদানিকারক দেশগুলোতে ভারতীয় চালের জনপ্রিয়তা বাড়ছে।

২০২০-২১ মৌসুমে ভারতের মোট পণ্য রফতানি এর আগের মৌসুমের তুলনায় কমেছে। তবে সময় কৃষিপণ্য রফতানি ১৭ দশমিক শতাংশ বেড়ে হাজার ১৮০ কোটি ডলারের গণ্ডিকে ছাড়িয়ে গেছে। তবে চলতি বছর চাল রফতানি অত্যন্ত স্বল্প পরিসরে শুরু হয়েছে। এপ্রিলে দেশটির বাসমতি চাল রফতানি ১৫ শতাংশ কমেছে। মে মাসেও নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত ছিল। তবে বাংলাদেশ আফ্রিকায় রফতানির পরিমাণ ছিল ঊর্ধ্বমুখী। বাংলাদেশ প্রতি মাসেই ভারত থেকে আমদানির জন্য ৫০ হাজার টন চালের দরপত্র আহ্বান করে। ভারতীয় চালের অন্যান্য শীর্ষ আমদানিকারক দেশগুলো হলো সৌদি আরব, ইরাক, ইরান সংযুক্ত আরব আমিরাত। এসব দেশেও চাল রফতানি অব্যাহত রেখেছে ভারত।

বিভি কৃষ্ণ রাও বলেন, ভিয়েতনাম পাকিস্তানের চালের দাম কিছুটা নিম্নমুখী। তবে ভারত বিশ্ববাজারে সবচেয়ে সস্তা দামে চাল রফতানি করছে। প্রতি টন চাল ৩৬০-৪০০ ডলার মূল্যে রফতানি করা হচ্ছে। সস্তা দামের কারণে আমদানিকারক দেশগুলোর প্রথম পছন্দ ভারত।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন