৫ আগস্টের পরে হোটেল রেস্তোরাঁ খুলে দেয়ার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলমান কঠোর বিধিনিষেধে রেস্তোরাঁগুলো শুধু অনলাইন টেকওয়ের মাধ্যমে খাবার বিক্রি করতে পারছে। কিন্তু সেবার অন্তর্ভুক্ত রেস্তোরাঁর সংখ্যা সর্বোচ্চ থেকে শতাংশ। কারণে সারা দেশে প্রায় ৮০ শতাংশ রেস্তোরাঁ বন্ধ রয়েছে। খাতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা। অবস্থায় আগস্টের পরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে হোটেল-রেস্তোরাঁ স্বাভাবিক নিয়মে খোলা রাখতে চান মালিকরা।

করোনা পরিস্থিতিতে নানা সমস্যায় জর্জরিত রেস্তোরাঁ খাতের সমস্যা তুলে ধরে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলন থেকে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি জানায়, সারা দেশে ৬০ হাজার রেস্তোরাঁয় ৩০ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে। প্রায় দুই কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে খাতের সঙ্গে জড়িত। যারা এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে। করোনার প্রভাবে সারা দেশের শতকরা ৮০ ভাগ রেস্তোরাঁ বন্ধ রয়েছে। করোনা মহামারী শুরুর পর থেকে পর্যন্ত খাতে ৮০ থেকে ৯০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

পরিস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনে ছয় দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন সমিতির নেতারা। তাদের দাবি, স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী হোটেল-রেস্তোরাঁ খুলে দিতে হবে। যদি সম্ভব না হয়, সেক্ষেত্রে ৫০ ভাগ আসনে বসিয়ে হোটেল-রেস্তোরাঁ চালু করা। হোটেল রেস্তোরাঁর জন্য চলতি মূলধন হিসেবে এসএমই খাত থেকে খাতে ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের ব্যবস্থা করা, যা হবে সহজ শর্তে, স্বল্প সুদে জামানতবিহীন দীর্ঘমেয়াদি ঋণ। হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিক-শ্রমিকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনার টিকা প্রদান করা। শ্রমিকদের মোবাইলে অথবা নির্দিষ্ট কার্ড দেয়ার মাধ্যমে নগদ অর্থ অথবা মাসিকভাবে খাদ্য সহায়তা দেয়া। হোটেল-রেস্তোরাঁ খাতকে শিল্পের মর্যাদা দিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনে না রেখে একটি নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনা। এছাড়া -কমার্স টেকওয়ে, পার্সেল অনলাইন ডেলিভারির ক্ষেত্রে বহির্বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কমিশন করা এবং একটি সুষ্ঠু নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা।

সংবাদ সম্মেলনে সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের আঘাতে রেস্তোরাঁ খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত করোনার কারণে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী কখনো অর্ধেক আসনে বসিয়ে আবার কখনো শুধু অনলাইন বা টেকওয়ের মাধ্যমে আমাদের ব্যবসা সীমিত রেখেছি। কিন্তু টেকওয়ে দিয়ে ব্যবসা চালানো সম্ভব নয়। টেকওয়ে সেবার আওতায় রেস্তোরাঁর সংখ্যা থেকে শতাংশ।

বর্তমানে শুধু অনলাইন ডেলিভারির সুযোগ দিয়ে রেস্তোরাঁ বন্ধ রাখার ঘোষণাটি দুরভিসন্ধিমূলক বলে মনে করেন মালিকরা। তারা বলেন, এখানে বিদেশী স্বার্থন্বেষী মহলের হাত রয়েছে, যারা এখন খাবার টেকওয়ের ব্যবসায় জড়িত। এমন পরিস্থিতিতে আমরা কোনো আর্থিক সহায়তাও পাচ্ছি না। পচনশীল পণ্য বিক্রি করার ক্ষেত্রে ঋণ দেয়া যাবে না, বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন নির্দেশনার কারণে আমরা ঋণ পাচ্ছি না। এছাড়া খাতকে শিল্প ঘোষণা না করায় ব্যাংকের আগ্রহ নেই। যদিও রাজস্ব খাতে খাত অনেক বড় অংশীদার এবং পর্যটন শিল্পের প্রধান নিয়ামক। পরিস্থিতির পরেও ইএফডি মেশিন স্থাপন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে ভ্যাট আদায়ে হয়রানি চলছে। সরকারি লোক নয়, পাড়া-মহল্লার ভাড়া করা লোক দিয়ে এনবিআর আমাদের হয়রানি করছে।

সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি গাজী মো. ওসমান গনি, প্রধান উপদেষ্টা খন্দকার রুহুল আমিন, প্রথম যুগ্ম মহাসচিব ফিরোজ আলম সুমন, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মোহাম্মদ আন্দালিব, কোষাধ্যক্ষ তৌফিকুল ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব ফয়সাল মাহবুবসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন