আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভা

প্রতিটি মানুষ যেন ভ্যাকসিন পায় সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের প্রতিটি মানুষের ভ্যাকসিন নিশ্চিতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বিশ্ব পরিস্থিতিটা বুঝতে হবে। প্রতিটি মানুষ যেন ভ্যাকসিন পায়, তার ব্যবস্থা আমরা পর্যায়ক্রমে নিচ্ছি এবং সেটা আমরা করব, সবাই টিকা পাবেন। গতকাল আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রান্তে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, . মো. আবদুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, . হাছান মাহমুদসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ঢাকা মহানগরের শীর্ষ নেতারা। সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সঞ্চালনা করেন প্রচার প্রকাশনা সম্পাদক . আবদুস সোবহান গোলাপ।

ভ্যাকসিন ক্রয় কার্যক্রমের সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভারতে যখন মহামারী ব্যাপকভাবে শুরু হলো, তারা ভ্যাকসিন রফতানি বন্ধ করে দেয়ায় আমরা কিছুটা সমস্যায় পড়েছিলাম। আমরা এখন আবার ভ্যাকসিন কিনতে শুরু করেছি। দেশের প্রত্যেকটা মানুষের কাছে যেন ভ্যাকসিন পৌঁছে যায়, আমরা পর্যায়ক্রমিকভাবে তার ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং সেটাই আমরা করব।

সরকারপ্রধান বলেন, নভেল করোনাভাইরাস যখনই দেখা দিয়েছে ভ্যাকসিনের জন্য আমরা প্রতিটি জায়গায় যোগাযোগ করেছি; কোথায় ভ্যাকসিন পাওয়া যায়! বিশ্বের অনেক দেশ এখনো ভ্যাকসিন দিতে পারেনি। আমরা কিন্তু ভ্যাকসিন নিয়ে এসে দেয়াও শুরু করেছি।

দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদন বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ভ্যাকসিনের ওপর যেন আমাদের এখানে গবেষণা হয়, দেশে আমরা কাজ করতে পারি এবং আমরা যেন নিজেরা ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারি। কীভাবে ভ্যাকসিন তৈরি করব তার জন্য এখানে ইনস্টিটিউট তৈরি করব এবং এর গবেষণা করে ভবিষ্যতে আমরাও যেন ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারি। তার জন্য যা যা দরকার আমরা সে ব্যবস্থা নেব। সে ধরনের পরিকল্পনাও আমরা নিয়েছি।

তিনি বলেন, যারা সমালোচনা করে আমি বলব একটু ধৈর্য ধরুন। দেখেন, আমরা কতটুকু কী করতে পারি। তারপর সমালোচনা করেন।

সরকারপ্রধান বলেন, বিশ্ব পরিস্থিতিটা বুঝতে হবে, যে ভ্যাকসিন আমরা ডলারে কিনেছি, এখন তা ১৫ ডলারে কিনতে হচ্ছে। সামনে হয়তো আরো বেশি দাম হবে। আমরা তো আগেই টাকা দিয়ে, পয়সা দিয়ে সবকিছু করে রেখেছিলাম। কিন্তু এটা আন্তর্জাতিক বিষয়।

শেখ হাসিনা বলেন, দুঃখ লাগে যাদের আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আগেভাগে ভ্যাকসিন দিয়েছি তাদের দুই ডোজ নেয়ার পর তারাও এখন সমালোচনা করেন। অথচ তারাই কিন্তু সবার আগে নিয়েছেন। তারাই আবার বড় বড় সমালোচনার কথা, একে গালিওকে গালি, অনেক কিছু দেন, আমরা শুনি।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। আমরা যদি শহীদের তালিকা দেখি, কয়টা মানুষ জীবন দিয়েছে দেশের জন্য, একমাত্র আওয়ামী লীগই। আর একটা রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে আমরা যদি হিসাব করে দেখি, তাহলে দেশে কয়টা রাজনৈতিক দল আছে?

তিনি বলেন, অনেকে অনেক কথা বলেন। আমরা যদি জনগণের সংগঠন হিসেবে দেখি, গণমানুষের সংগঠন হিসেবে দেখি, তৃণমূলের মানুষের দ্বারা রচিত একটি সংগঠন, সেটি কিন্তু আওয়ামী লীগ। সেই সঙ্গে আমাদের আরো পার্টি আছে যেমন কমিউনিস্ট পার্টি বা অন্য পার্টিগুলো আছে, ছোটখাটো। কিন্তু মূল একটি সংগঠনই সেটা হলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের গণমানুষের সংগঠন, মানুষের বঞ্চনা-শোষণ তারা দেখেছে। মানুষের কষ্ট-দুঃখ তারা উপলব্ধি করেছে। কষ্ট-দুঃখ থেকে মুক্তি দেয়ার জন্যই কিন্তু আওয়ামী লীগের সৃষ্টি। আওয়ামী লীগ যখনই রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে, বঞ্চিত মানুষের ভাগ্যই পরিবর্তন হয়েছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে যদি বিবেচনা করা যায়, তাহলে এখানে কিছু বাম দল আছে, কিছু দক্ষিণপন্থী আছে। কিন্তু সত্যিকারের গণমানুষের দল হিসেবে বাংলাদেশের জন্য একমাত্র দল আওয়ামী লীগ।

তিনি বলেন, দেশে যদি একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় বা যখন কোনো অরাজনৈতিক অথবা অগণতান্ত্রিক সরকার আসে, তখন তাদের মূল্যটা বাড়ে। কেউ কেউ পাওয়ার আশায় বসে থাকে। কারণে তারা দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে না। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে যা করে, জনগণের কল্যাণে করে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন