দেশে প্রাণঘাতী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা আবারো বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৬৩ জন কভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃতের সংখ্যা আগের দিনের তুলনায় বাড়লেও শনাক্তের সংখ্যা কিছুটা কমেছে। এ সময় ৩ হাজার ৮৪০ জনের শরীরে ভাইরাসটির সংক্রমণ শনাক্ত হয়। দেশে কভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশের ৫২৮টি পরীক্ষাগারে ২৪ হাজার ৮৭১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৬২ লাখ ৬৭ হাজার ৬৫৭টি নমুনা পরীক্ষা হয়। সর্বশেষ শনাক্তের সংখ্যা নিয়ে দেশে মোট কভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৪১ হাজার ৮৭ জনে। মোট মৃত্যু হয়েছে ১৩ হাজার ৩৪৫ জনের। সর্বশেষ ২ হাজার ৭১৪ জন করোনা রোগী সুস্থ হওয়ায় মোট সুস্থতার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭৬ হাজার ৪৬৬ জনে।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ। আগের দিন এ হার ১৬ দশমিক ৬২ শতাংশ ছিল। একদিনের বিবেচনায় শনাক্তের হার সামান্য কমলেও কয়েক দিন ধরেই এ হার ১৫ শতাংশের বেশি থাকছে। দেশে এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৪২ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৩২ ও মৃত্যুহার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
গতকাল মৃত ৬৩ জনের মধ্যে পুরুষ ৪৫ ও নারী ১৮ জন। মৃতদের ৪৬ জন সরকারি ও নয়জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং আটজন বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। বয়স বিবেচনায় তাদের মধ্যে ৩১ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ১৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, সাতজন করে ১৪ জন ৪১ থেকে ৫০ ও ৩১ থেকে ৪০ বছর, একজনের ২১ থেকে ৩০ বছর এবং দুজনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিল।
গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে খুলনা বিভাগে। এরপর রাজশাহী বিভাগে মারা গেছে ১৩ জন। চট্টগ্রাম বিভাগে ১১ জন, ঢাকা বিভাগে ১০, বরিশাল বিভাগে তিন এবং সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে দুজন করে মারা গেছেন।
দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। চলতি বছরের ৩১ মে করোনা রোগীর সংখ্যা আট লাখ পেরিয়ে যায়। এর মধ্যে গত ৭ এপ্রিল একদিনে সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৬২৬ জন কভিড-১৯ পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর প্রথম মৃত্যু হয়। এর মধ্যে ১১ জুন মৃত্যুর সংখ্যা ১৩ হাজার অতিক্রম করে। দ্বিতীয় পর্যায়ে সংক্রমণের মধ্যে গত ১৯ এপ্রিল দৈনিক হিসেবে সর্বোচ্চ ১১২ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে প্রথম নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এরপর মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে শতাধিক দেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়লে গত বছরের ১১ মার্চ করোনাকে বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।