সিলেটের জকিগঞ্জে নতুন গ্যাসক্ষেত্রের সম্ভাবনা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, সিলেট

সিলেটে সন্ধান মিলেছে নতুন আরেকটি গ্যাসক্ষেত্রের। সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলায় গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স)

উপজেলার পশ্চিম আনন্দপুর গ্রামের ক্ষেত্রের একটি কূপে গ্যাসের আলামত পাওয়া গেছে। সবগুলো পরীক্ষায় গ্যাসের উপস্থিতি পুরোপুরি পাওয়া গেলে গ্যাস উত্তোলনের উদ্যোগ নেয়া হবে। চূড়ান্তভাবে সফল হতে পারলে এটি হবে সীমান্তবর্তী এই উপজেলার প্রথম দেশের ২৮তম গ্যাসক্ষেত্র।

গতকাল সকালে উপজেলা শহরের অদূরে পশ্চিম আনন্দপুর গ্রামের অনুসন্ধান কূপে ড্রিল স্টিম টেস্ট (ডিএসটি) সৌভাগ্য শিখা প্রজ্বলন করে বাপেক্স। এর ফলে ক্ষেত্র থেকে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

ক্ষেত্রে গ্যাস পাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানালেও বাপেক্স কর্মকর্তারা বলছেন, এখনো এটি অনুসন্ধান পর্যায়ে রয়েছে। এখনো চূড়ান্ত কিছু বলা যাবে না। চূড়ান্ত কিছু জানতে আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।

তবে ক্ষেত্রে গ্যাস পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাপেক্সের একাধিক কর্মকর্তা।

বাপেক্স কর্মকর্তারা জানান, জকিগঞ্জের পার্শ্ববর্তী গোলাপগঞ্জ উপজেলায় একাধিক গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে। জকিগঞ্জেও দীর্ঘদিন ধরেই গ্যাসের অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। এই প্রথম আশাবাদী হওয়ার মতো উপকরণ পাওয়া গেছে।

সিলেট গ্যাসফিল্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন গ্যাসক্ষেত্রের প্রকল্প পরিচালক কবির আহমেদ বলেন, জকিগঞ্জে নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারে অনুসন্ধান চালাচ্ছে বাপেক্স। অনুসন্ধানে আশাবাদী হওয়ার মতো অনেক কিছুই মিলছে। তবে এখনই চূড়ান্ত কিছু বলা যাবে না।

বাপেক্স কর্মকর্তারা বলছেন, কূপটির অভ্যন্তরে চাপ রয়েছে হাজার পিএসআই (প্রতি বর্গইঞ্চি) আর ফ্লোটিং চাপ রয়েছে ১৩ হাজারের অধিক। কূপটিতে মোট চারটি স্তরে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছে বাপেক্স।

বাপেক্সের একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রথম দফা পরীক্ষায় গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এখন আরো তিন দফা পরীক্ষা চালানো হবে। এরপর গ্যাসের উপস্থিতি পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে। তাখন নিশ্চিতভাবে বলা যাবে কূপে গ্যাস আছে কিনা।

বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেছেন, আমরা ভালো কিছু আশা করছি। তবে এখনো পর্যবেক্ষণ চলছে। অনেক সময় অনুসন্ধান কূপে পকেট থাকতে পারে। তাই পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। চূড়ান্তভাবে সফল হতে পারলে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হবে। এজন্য আরো কিছু সময় লাগতে পারে।

সম্প্রতি ঢাকায় একটি সেমিনারে জ্বালানি খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব আনিসুর রহমান ওই ফিল্ডটি সম্পর্কে বলেছিলেন, আমরা নতুন একটি ফিল্ডে সফল হতে চলেছি। সেখানে কূপের প্রেসার ৬০ হাজারের অধিক রয়েছে। এটি আমাদের জন্য দারুণ সুখবর হতে পারে। আশা করছি, শিগগিরই ভালো খবর দিতে পারব।

বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ২৭টি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। এসব গ্যাসক্ষেত্রে প্রমাণিত মজুদের পরিমাণ ২১ দশমিক টিসিএফ, আরো টিসিএফ রয়েছে সম্ভাব্য মজুদ। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ১৮ টিসিএফ উত্তোলন করা হয়েছে। সে হিসেবে প্রমাণিত মজুদ অবশিষ্ট রয়েছে মাত্র টিসিএফ, আর সম্ভাব্য মজুদ রয়েছে আরো টিএসএফের মতো।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন