চীনভিত্তিক সোস্যাল মিডিয়া টিকটক ও উইচ্যাট বন্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
গত বুধবার এক নির্বাহী আদেশে ওই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
এটি অবশ্য আগেই আদালতের নির্দেশনায় স্থগিত অবস্থায় ছিল।
এবার পাকাপাকিভাবে নিষিদ্ধ হওয়ার হাত থেকে রেহাই পেল প্রতিষ্ঠান দুটি।
খবর রয়টার্স ও নিউইয়র্ক টাইমস।
বাইডেনের নির্বাহী আদেশে অবশ্য পুরোপুরি মুক্তি মেলেনি টিকটক ও উইচ্যাটের।
প্রতিষ্ঠান দুটির ব্যাপারে তদন্ত অব্যাহত রাখবে যুক্তরাষ্ট্র।
এ ব্যাপারে নতুন এক নির্দেশনায় স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ওই নির্দেশনায় টিকটক ও উইচ্যাটের ব্যাপারে নিরাপত্তা রিভিউ করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া আন্তর্জাতিক লেনদেন বিষয়ে পৃথক সরকারি প্যানেলের পর্যালোচনার সম্মুখীন হবে টিকটক।
বাইডেনের নির্বাহী আদেশ নিয়ে এখনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি টিকটক ও উইচ্যাটকে।
যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ১০ কোটিরও বেশি।
এছাড়া অন্তত ১ কোটি ৯০ লাখ ব্যবহারকারী বিভিন্ন সেবা, গেমস ও আর্থিক লেনদেনের জন্য উইচ্যাট ব্যবহার করে আসছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে চীন।
গতকাল দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে মুখপাত্র গাও ফেঙ্গ জানান, যুক্তরাষ্ট্র সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ট্রাম্প প্রথম দুটি নির্দেশনায় স্বাক্ষর করেছিলেন গত ২০ আগস্ট।
ওই সময়ে বলা হয়েছিল, টিকটক চীন সরকারকে মার্কিন ব্যবহারকারীদের উপাত্ত দিয়ে দিচ্ছে।
সমালোচকরা অবশ্য বলছেন ভিন্ন কথা।
ওই নির্দেশনায় স্বাক্ষরের এক মাস আগে ট্রাম্পের টলসা র্যালি পণ্ড করে দিয়েছিল টিকটক ব্যবহারকারীরা।
সমালোচকদের দাবি, সেটার রেশেই ট্রাম্পের চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছিল টিকটক।
বিভিন্ন ইস্যুতে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটরা দুই মেরুতে অবস্থান করলেও বেইজিংয়ের উত্থান ঠেকাতে একমত তারা।
মার্কিন অর্থনীতিতে চীনের প্রভাবকে শুধু বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির জন্যই হুমকি নয় বরং গণতন্ত্রের জন্যও হুমকি হিসেবে দেখছেন বাইডেন।
চীনকে ঠেকাতে ট্রাম্প প্রশাসন যে পদক্ষেপ নিয়েছিল তার অনেকই চালু রেখেছে বাইডেন প্রশাসন।
এমনকি কিছু ক্ষেত্রে পূর্বসূরির চেয়ে আরো কঠোর পদক্ষেপ নিতে দেখা গেছে।
যেমন গত সপ্তাহে চীনের কিছু প্রতিরক্ষা ও নজরদারি সামগ্রী নির্মাতা কোম্পানিতে মার্কিন নাগরিকদের বিনিয়োগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।
চীনের সঙ্গে প্রযুক্তি সক্ষমতা নিয়ে লড়াইয়ের অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার ১৯ হাজার কোটি ডলারের একটি বিল পাস করেছে মার্কিন সিনেট।
ইউএস ইনোভেশন অ্যান্ড কম্পিটিশন অ্যাক্ট হিসেবে পরিচিত বিলটি ৬৮-৩২ ভোটে পাস হয়েছে।
নতুন এ বিলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি ও গবেষণা জোরদার করার জন্য প্রায় ১৯ হাজার কোটি ডলার রাখা হয়েছে।
এছাড়া সেমিকন্ডাক্টর ও টেলিযোগাযোগ সরঞ্জাম উৎপাদন ও গবেষণায় খরচ করতে অতিরিক্ত আরো ৫ হাজার ৪০০ কোটি ডলার বরাদ্দ দেয়ার কথাও বলা হয়েছে।
বিলটির সমর্থকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এটি বৃহত্তম শিল্প বিল হতে চলছে এবং কয়েক দশকের মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে এটা সর্বোচ্চ মার্কিন বিনিয়োগ।
তবে অনেক সমালোচক এটাকে চীনের ‘মেড ইন চায়না ২০২৫’
উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার মার্কিন প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখছেন।