জুলাই থেকে ২ লাখ টাকার বেশি কর ই-পেমেন্টে

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী জুলাই থেকে লাখ টাকার বেশি কর ইলেকট্রনিক পেমেন্ট বা -পেমেন্টের মাধ্যমে আদায় করা হবে। রাজস্ব আদায়ে স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতেই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস ২০২১ উপলক্ষে গতকাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) আয়োজিত সেমিনার ডব্লিউসিও সার্টিফিকেট অব মেরিট বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

আলোচনা সভায় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, এনবিআরকে ব্যবসায়ীদের চাহিদা পূরণ করতে হবে। ব্যবসায়ীদের চাহিদা পূরণ করলে ব্যবসারীরাও এনবিআরের চাহিদা পূরণ করবে। কারণ ব্যবসায়ীদের আপত্তি এনবিআরকে নিয়ে। যত ব্যবসাবান্ধব নীতি গ্রহণ করা সম্ভব হবে রাজস্ব আদায় ততই শক্তিশালী হবে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী।

গত ১০ বছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি সারা বিশ্বের মধ্যেই সর্বোচ্চ পর্যায়ের উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০৩৫ সাল পর্যন্ত পরিকল্পনা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় ক্রমেই বাড়াতে হবে। এনবিআর অতীতের মতো আগামীতেও চ্যালেঞ্জে জয়ী হবে বলে আমি মনে করি। আমদানি-রফতানি কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে শিগগির আরো ১৩টি স্ক্যানার কেনা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।

রাজস্ব আদায় প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এনবিআরকে অটোমেশনের আওতায় এনে রোডম্যাপ তৈরি করা হয়েছে জানিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের সফটওয়্যার তৈরি হয়ে গেছে। আগামী এপ্রিল থেকে আইসিডি কাস্টম হাউজ, কমলাপুরে নিয়ম বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আমদানি-রফতানি দ্রুত প্রক্রিয়াকরণ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আমরা ১৩টি স্ক্যানার ক্রয় কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। স্ক্যানারগুলো এলে পণ্য ডেলিভারি কার্যক্রম আরো দ্রুত হবে।

মহামারীর সময়েও কাস্টমসসহ রাজস্ব আদায়ে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দেশের প্রতি দায়বদ্ধতার কথা উল্লেখ করে এনবিআর চেয়ারম্যান, সাপ্লাই চেইন ঠিক রেখে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে কাস্টমস ভ্যাট আদায় কার্যক্রম মিনিটের জন্যও বন্ধ হয়নি।

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ ঘটলে আমাদের আরো অনেক বেশি রাজস্ব আদায়ের প্রয়োজন হবে। তখন অবশ্যই কর জিডিপির অনুপাত বৃদ্ধি করতে হবে। এজন্য তিনি করের হার না বাড়িয়ে করের আওতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন।

এদিকে একই অনুষ্ঠানে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মারা যাওয়া কাস্টমসের সাত কর্মকর্তাসহ ১৭ জন এবং তিন প্রতিষ্ঠানকে ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউসিও) সার্টিফিকেট অব মেরিট প্রদান করা হয়েছে। এবার সার্টিফিকেট অব মেরিট প্রদানের ক্ষেত্রে করোনাকালীন দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্য অভ্যন্তরীণ সাপ্লাই চেইন নিরবচ্ছিন্ন রাখতে অবদান রাখার বিষয়টি বিবেচনা করা হয়। এনবিআর চেয়ারম্যান এফবিসিসিআই সভাপতি সার্টিফিকেট অব মেরিট সনদপত্র তুলে দেন।

সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর অধীনস্থ দপ্তরগুলোর ১০ কর্মকর্তা-কর্মচারী হলেন কমিশনার ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প পরিচালক কাজী মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা কাস্টম হাউজের কমিশনার মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, কাস্টমস গোয়েন্দা তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ নেয়াজুর রহমান, এনবিআরের প্রথম সচিব একেএম নুরুল হুদা আজাদ, সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট একেএম জাহিদ হোসেন, ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটের উপকমিশনার এবিলিন সাংমা, সিলেট ভ্যাট কমিশনারেটের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. সামসাদ হোসেন, ঢাকা কাস্টম হাউজের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম, আইসিডি কাস্টম হাউজের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ইয়াকুত জাহিদ চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আতিকুর রহমান।

এছাড়া করোনাকালীন দায়িত্ব পালনের সময় মৃত্যুবরণকারী সম্মাননা পাওয়া সাত কর্মকর্তা হলেন রাজশাহী ভ্যাট কমিশনারেটের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. ইদ্রিস আলী মন্ডল, ঢাকা কাস্টম হাউজের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলম, রংপুর ভ্যাট কমিশনারেটের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. রহমত আলী, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের রাজস্ব কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন মজুমদার, ঢাকা দক্ষিণ ভ্যাট কমিশনারেটের রাজস্ব কর্মকর্তা আনোয়ার জাবেদ, ঢাকা কাস্টম হাউজের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. কবির হোসেন সিকদার মোংলা কাস্টম হাউজের সুকানি মো. কায়কোবাদ। সার্টিফিকেট অব মেরিটপ্রাপ্ত তিনটি প্রতিষ্ঠান হলো চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ, ঢাকা কাস্টম হাউজ এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন