কভিড-১৯-এর প্রভাব মোকাবেলায় সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে নেয়া স্বল্প সুদের ঋণ পরিশোধে তিন বছরের সময় চায় পোশাক শিল্প মালিক সংগঠন বিজিএমইএ।
১২ জানুয়ারি অর্থমন্ত্রী বরাবর পাঠানো চিঠিতে এ প্রস্তাব বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
কভিড-১৯-এর প্রভাবে সৃষ্ট পোশাক রফতানির গতি-প্রকৃতি ও পরিস্থিতি জানিয়ে চিঠিতে বিজিএমইএ ঋণ পরিশোধের সময় সংশোধন করে ২৪ মাস থেকে ২৬ মাস করা এবং ছয় মাসের মোরাটোরিয়ামের সময় ১২ মাস করার আহ্বান জানিয়েছে। এ চিঠির একটি অনুলিপি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব বরাবরও পাঠানো হয়েছে।
নভেল করোনাভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলার লক্ষ্যে সচল রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর অনুকূলে আর্থিক প্রণোদনা হিসেবে সহজ শর্তে ঋণের কিস্তি আদায় প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চিঠি পাঠানো হয়েছে দেশের প্রায় সব বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে। আর চিঠির মাধ্যমে প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ পরিশোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ নির্দেশনা নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছে দেশের পোশাক শিল্প মালিক সংগঠন বিজিএমইএ। গণমাধ্যমে পাঠানো এক খোলা চিঠিতে ওই উদ্বেগের মনোভাব প্রকাশ করা হয়।
ওই চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক হতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ২০২১ সালের জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ পরিশোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গত পরশুদিন এ মর্মে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পত্র জারি করেছে। লক্ষণীয় বিষয় হলো, এ নির্দেশনা এমন সময়ে দেয়া হলো, যখন কিনা করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে শিল্পটি গভীর অনিশ্চয়তায় হাবুডুবু খাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে বর্তমান প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণের সুদ অন্ততপক্ষে ছয় মাসের জন্য স্থগিতকরণ অথবা প্রণোদনা পরিশোধের মেয়াদ অন্ততপক্ষে আরো অতিরিক্ত এক বছর (বর্তমানে ২৪ মাস) সম্প্রসারিত করা না হলে শিল্পকে টিকিয়ে রাখা দুরূহ হবে।
শিল্প আজ সবচেয়ে মর্মান্তিক পরিস্থিতির দিকে মোড় নিয়েছে জানিয়ে বিজিএমইএ সভাপতি চিঠিতে বলেছিলেন, যথাযথ পুনর্গঠনের সুযোগ এমনকি প্রস্থান নীতি না থাকায় পশ্চিমা ক্রেতাদের দেউলিয়াত্ব বরণ, নির্দয়হীনভাবে ক্রয়াদেশ বাতিল এবং ফোর্স মেজিউর ক্লজেসের কারণে শিল্প চরমভাবে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। কারখানাগুলো টালমাটাল পরিস্থিতির সঙ্গে প্রাণান্তকর সংগ্রাম করে কোনোভাবে টিকে রয়েছে। শিল্প ভালো করছে এবং সরকারের কাছ থেকে সব সহযোগিতা পাচ্ছে, এই যে একটি
ধারণা অনেকেই পোষণ করছেন তার আজ প্রকৃত পুনর্মূল্যায়ন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। এ পরিস্থিতিতে আমি আপনাদের সবার সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করি, যাতে করে আমরা নীতিনির্ধারকদের
শিল্পের বর্তমান প্রকৃত পরিস্থিতি বোঝাতে সক্ষম হই।