৮ বছর আগে ভাগাড়ে ফেলা হার্ডডিস্কের দাম এখন ২১ কোটি পাউন্ড

বণিক বার্তা অনলাইন

জেমস হাওয়েলস ২০১৩ সালে ভুলবশত তার একটি ল্যাপটপের হার্ডড্রাইভ আবর্জনার ভাগাড়ে ফেলে দিয়েছিলেন। ওই সময় ওই হার্ডড্রাইভে ছিল ৭ হাজার ৫০০ বিটকয়েন।  এখন সেই বিটকয়েনের দাম দাঁড়িয়েছে ২১ কোটি পাউন্ডে!

ল্যাপটপের হার্ডড্রাইভটি পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন যুক্তরাজ্যের সাউথ ওয়েলশের নিউপোর্ট শহরের বাসিন্দা হাওয়েলস।  তিনি সিটি কাউন্সিলকে অনুরোধ জানিয়েছেন যেন তাকে হার্ডড্রাইভটি খুঁজে পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। এমনকি সিটি কাউন্সিলকে তার মোট বিটকয়েনের ২৫ শতাংশ অনুদান দেয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।  কিন্তু তাতেও মন গলেনি কাউন্সিল প্রশাসনের। তারা বলছেন, ময়লার ওই ভাগাড়ে খননকাজ চালানোর লাইসেন্স তাদের নেই।

হাওয়েলস সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, হার্ডড্রাইভটি পুনরুদ্ধার করতে পারলে সিটি কাউন্সিলের ‘কভিড ত্রাণ তহবিল’-এ বড় অংকের টাকা অনুদান দেবেন। সেটি ৫ কোটি ২৫ লাখ পাউন্ডের কম হবে না।

হাওয়েলস ২০০৯ সালে প্রায় নামমাত্র মূল্যে বিটকয়েন কিনেছিলেন।  তবে ল্যাপটপে কোমল পানীয় ঢেলে ফেলায় হার্ডড্রাইভটি পরে খুলে ড্রয়ারে রেখে দিয়েছিলেন।  তিনি হার্ডড্রাইভটি রেখেছিলেন তার অফিসের ড্রয়ারে। পরে বিটকয়েনের কথা বেমালুম ভুলে যান। 

২০১৩ সালে যখন হাওয়েলস হার্ডড্রাইভটি ফেলে দেন, তখন বিটকয়েনগুলোর মূল্য ছিল প্রায় ৭৫ লাখ ডলার (৪৬ লাখ পাউন্ড)। তবে এখন সেগুলোর মূল্য প্রায় ৫০ গুণ বেশি, যেখানে বাজারে একটি বিটকয়েনের দাম বর্তমানে ২৮ হাজার পাউন্ডের বেশি।

হাওয়েলস জানান, নিউপোর্ট কাউন্সিলের কাছে তিনি বেশ কয়েকবার ওই ভাগাড় খননের অনুমতি চেয়েছিলেন। তিনি তাদের ১০ শতাংশ অর্থ অনুদান দেয়ার প্রস্তাব দেন।  কিন্তু তারা সাড়া দেয়নি। এরপর থেকে বিটকয়েনের দাম বাড়ছেই। ২০১৭ সালে ওই হার্ডড্রাইভে থাকা বিটকয়েনের মূল্য দাঁড়ায় ১২ কোটি ৫০ লাখ পাউন্ড। তখন তাদের আরো ১০ শতাংশ অর্থাৎ ২০ শতাংশ অনুদান দেয়ার প্রস্তাব দেন, কিন্তু সেবারও প্রত্যাখ্যান করা হয়।

বিবিসির রেডিও ৫ লাইভকে তিনি বলেন, এরপর তিনি আর সিটি কাউন্সিলের কাছে যাননি। তবে এখন অনুদান ২৫ শতাংশ দিতে রাজি আছেন। বর্তমান বাজারে যার মূল্য দাঁড়াবে ৫ কোটি ২৫ লাখ পাউন্ড। তিনি এই অর্থ নিউপোর্টের বাসিন্দাদের জন্য কভিড ত্রাণ তহবিলে দান করে দেবেন।

হাওয়েলস মরিয়া হয়ে বলছেন, সিটি কাউন্সিল কাজটা যতো জটিল মনে করছে আসলে তা হবে না। কারণ আমি হার্ডড্রাইভটি কোথায় ফেলেছি সেই জায়গাটা এখনো মনে আছে।  আমি পেশাদার লোকদের দিয়ে খননের কাজ করবো। ফলে সহজেই পাওয়া যাবে বলে আমার বিশ্বাস। খননের সব ব্যয়ভার আমিই বহন করবো।

তবে সিটি কাউন্সিলের একজন মুখপাত্র বলেছেন, বিটকয়েন রয়েছে এমন একটি হার্ডড্রাইভ উদ্ধারের জন্য সিটি কাউন্সিলের সঙ্গে ২০১৩ সাল থেকে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হয়েছে।  হাওয়েলস হার্ডওয়্যারটি নিখোঁজ হওয়ার কয়েকমাস পর টের পান।  কাউন্সিলের পক্ষ থেকে হাওয়েলসকে একাধিকবার বলা হয়েছে যে, আমাদের লাইসেন্সিং পারমিটের অধীনে খনন সম্ভব নয়। তাছাড়া এই খননের ফলে আশেপাশের অঞ্চলে বড় ধরনের পরিবেশগত প্রভাব পড়বে।

তিনি আরো বলেন, ময়লার ভাগাড়টি খনন, সংরক্ষণ এবং বর্জ্য পরিশোধনসহ সব মিলিয়ে কয়েক মিলিয়ন পাউন্ড খরচ হয়ে যেতে পারে।  আর হার্ডড্রাইভটি যে পাওয়া যাবে তার তো কোনো নিশ্চয়তা নেই, তাছাড়া সেটি সচল আছে কিনা কে জানে!

সূত্র: বিবিসি

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন