নদী রক্ষার নামে অবৈধ দখলদাররা যেন মাথা চাড়া দিতে না পারে : নৌপ্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

নদী রক্ষার ব্যানার দখল করে অবৈধ দখলদার, স্বাধীনতাবিরোধী ও দেশবিরোধী চক্র যেন মাথাচাড়া দিতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। 

আজ বৃহস্পতিবার এক আলোচনা সভায় নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীরা এখন দুর্বল হয়ে গেছে। তারা আরো দুর্বল হয়ে যাবে। কিন্তু বিরোধীপক্ষ সবসময় ঐক্যবদ্ধ থাকে। তারা আবার ছোবল মারতে পারে। ছোবল মারার জন্য নদী রক্ষার নামে এ প্ল্যাটফর্মে ঢুকে যেতে পারে। হুঁশিয়ার থাকতে হবে। তারা স্বাভাবিক আন্দোলনের নামে বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা করতে পারে।

স্বাধীনতার ৫০ বছরে পদার্পন উপলক্ষে ‘নদীও মুক্তিযোদ্ধা’ শীর্ষক ভাসমান সভার আয়োজন করে নদী নিরাপত্তার সামাজিক সংগঠন ‘নোঙর’। সদরঘাট থেকে যাত্রা শুরু করে মুন্সীগঞ্জ গিয়ে আবার সদরঘাটে ফিরে আসে জাহাজটি। জাহাজেই আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা বিজয়ের চূড়ান্ত মুহূর্তে চলে এসেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সংগ্রামে আছেন, সে সংগ্রাম হচ্ছে সোনার বাংলা বিনির্মাণের সংগ্রাম। আমরা সোনার বাংলা বিনির্মাণের দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছি। এ সময়ে শত্রুপক্ষ আবার সংগঠিত হচ্ছে আমাদের এ চূড়ান্ত বিজয়কে আঘাত করার জন্য।

মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ আমাদের গর্ব ও অহংকারের। আজকে মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধকে হালকাভাবে দেখার চেষ্টা করা হচ্ছে। কথায় কথায় যেকোন ক্ষুদ্র ঘটনার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধকে মিলিয়ে ফেলা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধ কোন ক্ষুদ্র জিনিস নয়। এই মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্জনে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধকে সফল করার জন্য এক কোটির উপরে মানুষ ভিটেমাটি ছেড়ে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিল। শরণার্থী শিবিরে শিশু, গর্ভবতী মাসহ প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ সেখানে মৃত্যুবরণ করেছিল। এ আত্মত্যাগ কোন ক্ষুদ্র বিষয় নয়। কাজেই কথায় কথায় মুক্তিযুদ্ধকে কোন কিছুর সঙ্গে তুলনা করা যায় না। মুক্তিযুদ্ধকে হৃদয়ে ধারন করতে হবে। তাহলে আমরা এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা পাব।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পাকিস্তানের পক্ষে বাংলাদেশের যারা লড়াই করেছিল, তারাই আজকে বাংলাদেশকে খামচে ধরেছে। এরা ১৫ আগস্ট তৈরি করার জন্য পরিবেশ তৈরি করেছিল। এরাই বাংলাদেশের ইতিহাসকে বিকৃত করেছে। যারা শাহ আজিজ ও গোলাম আজমকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দিয়েছে। এরাই নিজামীসহ যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সংসদ সদস্য বানিয়েছে। আজকে দিবালোকের মতো পরিষ্কার, তারা মুক্তিযুদ্ধকে আঘাত করছে এবং তারা আরো আঘাত করতে চায়। আমরা সবাই নিজেদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলে একাত্তরের মতো তারা নাকে খত দিয়ে বিদায় নেবে। তাদেরকে নির্মূল করতে হলে প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে ধারন করতে হবে।

নোঙর’র সভাপতি সুমন শামস এর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা ও বিআইডব্লিউটিএ’র সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল আহম্মেদ, মুক্তিযোদ্ধা ও লেখক ইসহাক খান, বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলনের আহ্বায়ক মিহির বিশ্বাস, রিভারাইন পিপলের মহাসচিব শেখ রোকন, ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৫৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইদুর রহমান মাদবর, কবি ও লেখক রাসেল আসিকী প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন