ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে শুকনো মরিচ আমদানি

চার মাসে রাজস্ব আয় ২৬ কোটি টাকা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে শুকনো মরিচ আমদানি বেড়েছে। গত বছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে মসলাজাত পণ্যের আমদানি ৪০ শতাংশ বেড়েছে। একই সঙ্গে শুকনো মরিচ আমদানিতে রাজস্বও বেড়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী আমদানিকারকরা বলছেন, দেশীয় বাজারে শুকনো মরিচের দাম চাহিদা থাকায় আমদানি বেড়েছে।

ভোমরা স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স রাফসান ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মাদ হাসান জানান, তার প্রতিষ্ঠানে সম্প্রতি শুকনো মরিচ আমদানি বেড়েছে। সপ্তাহে ১২০-১৩০ টন পর্যন্ত শুকনো মরিচ আমদানি করছেন তিনি। প্রতি টন ভারতীয় শুকনো মরিচের মূল্য হাজার ১০০ ডলার। পরিবহন অন্যান্য খরচসহ আমদানি মূল্য পড়ছে প্রতি কেজি ২৩৫-২৪০ টাকা। এরপর পাইকারি ব্যবসায়ীরা আমদানিকারকদের কাছ থেকে কিনে তা দেশীয় বাজারে ২৫০-২৬০ কেজি দরে বিক্রি করেন। কিন্তু খুচরা বাজারে এর মূল্য আরো বেশি বলে জানান তিনি।

ভোমরা শুল্কস্টেশনের রাজস্ব বিভাগ থেকে জানা গেছে, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে বন্দর দিয়ে শুকনো মরিচ আমদানি হয়েছে ১৮ হাজার ৪৬৪ টন, যা থেকে সরকারের রাজস্ব এসেছে ২৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা। সূত্রটি আরো জানায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে বন্দরে শুকনো মরিচ আমদানি হয়েছিল ১১ হাজার ১৩৫ টন। আর পরিমাণ শুকনো মরিচ আমদানিতে রাজস্ব অর্জন হয়েছিল ১৫ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। ফলে গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে প্রায় ৪০ শতাংশ আমদানি বেড়েছে পণ্যটি। একই সঙ্গে ১০ কোটি ৪৪ লাখ টাকার রাজস্ব বেশি হয়েছে শুকনো মরিচ আমদানিতে।

সাতক্ষীরা জেলা শহরের সবচেয়ে বড় মসলার মোকাম সুলতানপুর বড়বাজারের পাইকারি মসলাজাতীয় পণ্য ক্রয়-বিক্রয় আড়ত মেসার্স আবির এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. আব্দুল আজিজ জানান, খুচরা বাজারে আমদানীকৃত শুকনো মরিচের চাহিদা বেশি। তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি শুকনো মরিচের দাম বেড়েছে। ভারতের বাজারে পণ্যটি দাম বেড়ে যাওয়ায় তার প্রভাব পড়েছে। বর্তমান তার প্রতিষ্ঠানে শুকনো মরিচ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২৬০-২৭০ টাকা দরে, যা ১৫-২০ দিন আগেও বিক্রি হয়েছে ২৪০-২৪৫ টাকা দরে।

সাতক্ষীরা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি নাসিম ফারুক খান মিঠু জানান, আমাদের দেশে শুকনো মরিচের যে চাহিদা রয়েছে, তার একটি বড় অংশ আমদানি করে মেটাতে হয়। তবে করোনার প্রভাবে ভারতে শুকনো মরিচের দাম কিছুটা বেড়ে গেছে।

ভোমরা স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম বলেন, শুকনো মরিচ আমদানিতে সরকারের রাজস্ব আসে খুবই ভালো। তাছাড়া দেশীয় বাজারে এর দামের পাশাপাশি চাহিদা থাকায় ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা ভোমরা বন্দর দিয়ে শুকনো মরিচ আমদানি করছেন। তিনি বলেন, ভোমরা বন্দর দিয়ে যেকোনো পণ্য আমদানিতে পরিবহন খরচ যেমন সাশ্রয় হয়, তেমনি সময়ও লাগে কম।

ভোমরা শুল্কস্টেশনের দায়িত্বে থাকা কাস্টমসের বিভাগীয় সহকারী কমিশনার আমীর মামুন জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে বন্দর দিয়ে শুকনো মরিচের আমদানি বেড়েছে। তাছাড়া মসলাজাত পণ্য আমদানিতেও সরকারের রাজস্ব এসেছে ভালো। গত বছরের তুলনায় গেল চার মাসে প্রায় ১০ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব এসেছে শুকনো মরিচ আমদানি করে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন