‘গোল্ডেন মনিরের’ বাড়িতে অভিযানে অস্ত্র-মদসহ কোটি টাকা উদ্ধার

বণিক বার্তা অনলাইন

রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় ব্যবসায়ী মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র, মাদক, স্বর্ণালঙ্কারসহ নগদ কোটি টাকারও বেশি উদ্ধার করে র‌্যাব। একই সঙ্গে তিন কোটি টাকা মূল্যের দুটি বিলাসবহুল গাড়িসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি জব্দ করা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার মধ্যরাত থেকে আজ শনিবার সকাল পর্যন্ত বাড্ডায় এই ব্যবসায়ীর বাড়িতে অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযানে নেতৃত্ব দেন র‍্যাব-৩ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু।

পরে বেলা ১২টার দিকে র‌্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, ছয়তলা ভবনটি থেকে নগদ ১ কোটি ৯ লাখ টাকা, চার লিটার বিদেশী মদ, প্রায় ৮ কেজি স্বর্ণ, একটি বিদেশী পিস্তল, কয়েক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও প্রায় ১০টি দেশের ৯ লাখ টাকা মূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা জব্দ করা হয়েছে।

মনিরের বাড়ির গ্যারেজ এবং বাড়ির সামনেই তার গাড়ির ব্যবসার জন্য ব্যবহৃত গ্যারেজে পাঁচটি গাড়ি পাওয়া গেছে, যার মধ্যে তিনটি গাড়ির বৈধ কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। গাড়িগুলোও জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। এর মধ্যে কোটির টাকারও বেশি মূল্যের দুটি বিলাসবহুল গাড়িও রয়েছে।

মনির সম্পর্কে তিনি বলেন, তিনি মূলত একজন হুন্ডি ব্যবসায়ী, স্বর্ণ চোরাকারবারি এবং ভূমির দালাল। তার একটি অটোকার সিলেকশন শোরুম আছে, গাড়ির শোরুমের তিনি স্বত্ত্বাধিকারী। পাশাপাশি রাজধানীর গাউছিয়ায় একটি স্বর্ণের দোকানের সাথে তার সম্পৃক্ততা রয়েছে। আমরা তা বাসা থেকে অনুমোদনবিহীন বিলাসবহুল দুটি বিদেশি গাড়ি জব্দ করেছি, যার প্রত্যেকটি দাম প্রায় তিন কোটি টাকা। এর পাশাপাশি কার সিলেকশন থেকেও আমরা তিনটি বিলাসবহুল অনুমোদনবিহীন গাড়ি আমরা জব্দ করেছি।

গোল্ডেন মনিরের উত্থান সম্পর্কে আশিক বিল্লাহ বলেন, গ্রেফতারকৃত মনির নব্বইয়ের দশকে রাজধানীর গাউছিয়ায় একটি কাপড়ের দোকানের কর্মচারী ছিলেন। সেটা ছেড়ে দিয়ে তিনি ক্রোকারিজের ব্যবসা শুরু করেন। পরে লাগেজ ব্যবসা অর্থাৎ ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে তিনি বিভিন্ন মালামাল দেশে আনতেন। একপর্যায়ে তিনি স্বর্ণ চোরাকারবারি নিজেকে জড়িয়ে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ অবৈধপথে বিদেশ থেকে বাংলাদেশে আনেন। তার স্বর্ণ চোরাকারবারির রুট ছিল ঢাকা-সিঙ্গাপুর-ভারত। স্বর্ণের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণেই তার নাম হয়ে যায় গোল্ডেন মনির। স্বর্ণ চোরাকারবারে জড়ানোয় ২০০৭ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের হয়।

তিনি জানান, ডিআইটি প্রজেক্ট ও বাড্ডা, নিকেতন, কেরানীগঞ্জ, উত্তরা, নিকুঞ্জে দুইশর বেশি প্লট রয়েছে খোঁজ পেয়েছেন তারা। তবে মনির এখন পর্যন্ত ৩০টির কথা স্বীকার করেছেন। মনিরের ১ হাজার ৫০ কোটি টাকার উপর সম্পদের তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে র‌্যাব।

মনিরের বিরুদ্ধে বাড্ডা থানায় বিদেশী মুদ্রা, অস্ত্র ও মাদক রাখার দায়ে র‌্যাব তিনটি মামলা দায়ের করবে বলেও জানান আশিক বিল্লাহ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন