বাংলাদেশ-ভারত এয়ার বাবল

সপ্তাহে ২৮ ফ্লাইটের প্রস্তাব দেবে বাংলাদেশী তিন এয়ারলাইনস

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেল করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে আকাশপথের যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ব্যবসা জরুরি চিকিৎসাসেবায় যাতায়াত করা উভয় দেশের নাগরিকরা। অবস্থায় জরুরি প্রয়োজনে আকাশপথে যাতায়াতে বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে তিন মাসের জন্য এয়ার বাবল চুক্তির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এর আওতায় বাংলাদেশী তিন এয়ারলাইনসের সপ্তাহে ২৮টি ফ্লাইট পরিচালনার প্রস্তাব দেয়া হবে ভারতকে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে এয়ার বাবল ফ্লাইট পরিচালনার জন্য ভারতের পক্ষ থেকে সর্বশেষ পাওয়া প্রস্তাব পর্যালোচনায় গতকাল একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে দুই দেশের প্রস্তাবগুলো নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় বাংলাদেশী এয়ারলাইনসগুলোর মাধ্যমে ভারতে সপ্তাহে ২৮টি ফ্লাইট পরিচালনার প্রস্তাব দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ১৪টি, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস ১৩টি নভোএয়ার একটি ফ্লাইট পরিচালনা করবে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) পক্ষ থেকে শিগগিরই -সংক্রান্ত প্রস্তাব পাঠানো হবে বেসামরিক বিমান পরিবহন পর্যটন মন্ত্রণালয়ে। সেখান থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তা পাঠানো হবে ভারতে।

প্রসঙ্গত, দুই দেশের মধ্যে ফ্লাইট পরিচালনায় নিজেদের পাঁচটি এয়ারলাইনসের অনুমোদন চেয়ে সম্প্রতি প্রস্তাব দিয়েছে ভারত। একইভাবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও তিনটি এয়ারলাইনসের মাধ্যমে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি চেয়ে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে ভারতকে।

বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে এয়ার বাবল চুক্তির শর্তে বলা হয়েছে, যাদের দীর্ঘমেয়াদে এখনো ভিসার মেয়াদ আছে, তাদের মেয়াদ থাকা পর্যন্ত ভিসার বৈধতা দেয়া হবে। এছাড়া ভিসা আবেদন

দ্রুততম সময়ে সর্বোচ্চ সাত কর্মদিবসের মধ্যে সম্পন্নের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ। ভারত ভিসা আবেদন দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছে। আবেদনের দিন থেকে সর্বোচ্চ সাত কর্মদিবসের মধ্যে ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া নিষ্পত্তি করা হবে বলে ভারত জানিয়েছে।

অন্যদিকে মেডিকেল ভিসায় যাওয়া যাত্রীদের ক্ষেত্রে একজন রোগীর সহযোগী হিসেবে তিন-চারজন ব্যক্তির ভিসা দেয়ার প্রস্তাব করেছিল বাংলাদেশ। রোগীর সহযোগী হিসেবে সর্বোচ্চ তিনজনের ভিসা দেয়ার বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে ভারত। বাংলাদেশের প্রস্তাবে উভয় দেশের যাত্রীদের জন্য ৭২ ঘণ্টার আগের পিসিআর টেস্টের নেগেটিভ সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করার কথা বলা হয়েছে। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে এয়ার বাবল চালু হলে ট্যুরিস্ট ভিসা আপাতত বন্ধ থাকবে। কেবল মেডিকেল, বিজনেস অফিশিয়াল ক্যাটাগরিতে ভারতে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

এর আগে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো প্রস্তাবে স্পাইস জেট, ইন্ডিগো, এয়ার ইন্ডিয়া, গোএয়ার, ভিস্তারাএই ছয় এয়ারলাইনসের দিল্লি, কলকাতা, চেন্নাই, মুম্বাই থেকে ঢাকা চট্টগ্রামে সপ্তাহে ২৮টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে বলে বলা হয়েছিল। অন্যদিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ঢাকা-দিল্লি, দিল্লি-ঢাকা, ঢাকা-কলকাতা কলকাতা-ঢাকা রুটে, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস ঢাকা-কলকাতা, কলকাতা-ঢাকা, ঢাকা-চেন্নাই, চেন্নাই-ঢাকা রুটে এবং নভোএয়ার ঢাকা-কলকাতা কলকাতা-ঢাকা রুটে বিমান পরিচালনা করবে বলে জানা যায়।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে এয়ার বাবল চুক্তির মাধ্যমে ফ্লাইট পরিচালনার বিষয়ে গত সেপ্টেম্বর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে এক যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জানানো হয়, এয়ার বাবল চুক্তির প্রস্তাবে ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে কেবল চিকিৎসা ব্যবসার কাজে বৈধ ভিসাধারী কূটনৈতিক ব্যক্তিরা ভ্রমণ করতে পারবেন। পরবর্তী সময়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর বেবিচকের পক্ষ থেকে ফ্লাইট পরিচালনার প্রস্তাব জানিয়ে ভারতের সিভিল এভিয়েশনের মহাপরিচালককে চিঠি দেয়া হয়। সেখানে বলা হয়, করোনা পরিস্থিতিতেও দুই দেশের মানুষের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় চুক্তির বিষয়ে তারা আগ্রহী। বিশেষ করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ঢাকা-দিল্লি-ঢাকা ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা রুটে এবং ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা ঢাকা-চেন্নাই-ঢাকা রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করতে চায়। এছাড়া নভোএয়ারও ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করতে চায়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন